ম্যাচটা পরতে পরতে ছড়ালো রোমাঞ্চ। ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ একবার হেললো রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস এন্ড সোসাইটির দিকে। আরেকবার নিয়ন্ত্রন গেল শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের দিকে। নির্ধারিত সময় শেষে ৩-৩ গোলের সমতায় থাকা ম্যাচটা যখন এগোচ্ছিল টাইব্রেকের দিকে তখনই বাজিমাত রহমতগঞ্জের।
২০১৯-২০ মৌসুমে সর্বশেষ ফেডারেশন কাপের সেমিতে খেলেছিল রহমতগঞ্জ। সেবার ফাইনালেও উঠেছিল দলটি। শেখ রাসেলকে ৪-৩ গোলে হারিয়ে দুই বছর পর আবারও ফেডারেশন কাপের সেমিতে উঠেছে রহমতগঞ্জ। ৬ ডিসেম্বরের সেমিতে তাদের প্রতিপক্ষ মোহামেডান। দুই বছর আগে সাদা-কালোদের হারিয়েই ফাইনালের টিকিট পেয়েছিল গোলাম জিলানির দল।
রহমতগঞ্জের আনন্দের দিনে একরাশ হতাশা শেখ রাসেল শিবিরে। মৌসুমের তিন শিরোপার দিকে চোখ করে ব্যয়বহুল দল সাজানো রাসেল স্বাধীনতা কাপের পর এবারও বাদ পড়ল ফেডারেশন কাপের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই।
কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহি মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে ২৮ মিনিটে রহমতগঞ্জকে এগিয়ে নেন ঘানায়ান ফরোয়ার্ড ফিলিপ আজাহ। মাঝ মাঠ থেকে সানডে চিজোবার থ্রু পাস ধরে বক্সে ঢুকে পড়েছিলেন আজাহ, পিছনে ছুটছিলেন রাসেলের দুই ডিফেন্ডার। তাই সময় নষ্ট না করে ডান পায়ের জোরাল শটে আশরাফুল রানাকে ফাঁকি দিয়ে বল জালে জড়ান এই ঘানার ফুটবলার।
বিরতির ঠিক আগ মুহূর্তে ব্যবধান বাড়ান আজাহ। ৪৫ মিনিটে ওয়ালি ফয়সালের বাড়ানো বল নিয়ন্ত্রনে নিয়ে বক্সের ভেতর থেকে ডান পায়ের জোরালো শটে লক্ষ্যভেদ করেন ঘানায়ান ফরোয়ার্ড।
৬৩ মিনিটে এসে ব্যবধান কমায় শেখ রাসেল। প্রায় ৩০ গজ দূরে ফ্রিকিক থেকে চোখ জুড়ানো গোল করেন ব্রাজিলিয়ান থিয়াগো এদুয়ারদো। ৮১ মিনিটে দলটিকে পেনাল্টি থেকে সমতায় ফেরান আইজার আখমাতোভ। ইসমায়েল রুটি তাবারেজকে ফাউল করায় পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি।
সমতায় ফেরার তিন মিনিট বাদে ম্যাচে ব্যবধানও বাড়ায় শেখ রাসেল। ৮৪ মিনিটে রুটি তাবারেজের পাস ধরে বক্সে ঢুকে এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে কোনাকুনি শটে শেখ রাসেলকে এগিয়ে নেন ব্রাজিলিয়ান আলটন মাচাদো। এই গোল দিয়ে যখন সেমিতে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছে শেখ রাসেল তখন আবারও রহমতগঞ্জের চমক। ৮৯ তম মিনিটে আজাহর দূরপাল্লার শট বক্সে নাসিরউদ্দিন চৌধুরীর পায়ে লাগার পর তার সামনে থাকা সানডে তড়িৎ শটে সমতায় ফেরান। নির্ধারিত নব্বই মিনিট তিন গোলের সমতায় থাকায় ম্যাচের ভাগ্য গড়ায় অতিরিক্ত সময়ের খেলায়।
টাইব্রেকের আর মাত্র ২ মিনিট বাকি থাকতে ১১৮ মিনিটের মাথায় রহমতগঞ্জের সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেন খন্দকার আশরাফুল ইসলাম। বক্সের ভেতরে স্বাধীনের শট আশরাফুল রানা ফিরিয়ে দিলে ফিরতি বলে টোকায় লক্ষ্যভেদ করেন আশরাফুল। গোলের পর জার্সি খুলে উদযাপন করায় অবশ্য হলুদ কার্ডও দেখতে হয়েছে তাঁকে।