ম্যাচের শেষ দিকে যখন রোমাঞ্চের অপেক্ষা করছিল ঠিক তখনই গ্যালারিতে পাকিস্তানি সমর্থকদের দলের জন্য দু হাত তুলে মোনাজাত করতে দেখা গেল। আর উমর গুলকে দেখা যাচ্ছিল নিজের আসন ছেড়ে এসে বোলারদের পরামর্শ দিতে। কিন্তু দুইটির কোনোটাই পাকিস্তানের পরাজয় বাঁচাতে পারেনি।
নির্ধারিত ওভারের এক বল বাকি থাকতেই শারজায় গতকাল দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ৭ উইকেটের জয় পায় আফগানিস্তান। এতে করে প্রথমবারের মতো পাকিস্তানের বিপক্ষে কোনো আন্তর্জাতিক সিরিজ জিতেছে তারা। আর ছেড়ে আসা শিষ্যদের কাছে পরাজয় মেনে নিতে হল পাকিস্তানের বোলিং কোচ গুলকে।
অথচ পরাজয়ের বদলে জয়ী দলের অংশ হতে পারতেন গুল। কিন্তু পাকিস্তানের বোলিং কোচের দায়িত্ব নেওয়ার কিছুদিন আগে আফগানিস্তানের কোচের পদ ছেড়ে দিয়েছেন তিনি। এতে তাঁর শেখানো অস্ত্রেই পাকিস্তানকে হারিয়ে সাবেক পেসারের শিষ্যরা।
ম্যাচের ফল নির্ধারণ হওয়ার আগে অবশ্য শারজায় দুর্দান্ত এক ম্যাচই হয়েছে। আগে ব্যাট করে পাকিস্তান ১৩১ রানের লক্ষ্য দেয় আফগানিস্তানকে। এই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ভালো শুরু করেছিল আফগানরা। উদ্বোধনী জুটিতে ৩০ রান এনে দেন রহমতউল্লাহ গুরবাজ ও উসমান ঘানি। পরে ৭ রানে ঘানি ফিরলে ইব্রাহিম জাদরানকে নিয়ে ৫৬ রানের দুর্দান্ত জুটি গড়েন গুরবাজ।
কিন্তু ৪৪ রানে উইকেটরক্ষক গুরবাজ রান আউট হলে আফগানদের রান তোলাটা একটু স্তিমিত হয়ে পড়ে। দ্রুত রান তুলতে গিয়ে কিছুক্ষণ পড় ৩৮ রানে আউট হন জাদরানও। ফলে একটা সময় ১২ বলে ২২ রানের প্রয়োজন পড়ে তাদের।
১৯ তম ওভারে নাসিম শাহ বল করতে আসলে প্রথম বলে ছক্কা মেরে ম্যাচটা নিজেদের দিকে নিয়ে নেন প্রথম টি-টোয়েন্টির ম্যাচসেরা মোহাম্মদ নবী। পরের চার বলে পাকিস্তানি পেসার ক্যাম ব্যাক করলেও শেষ বলে জাদরানের কাছে আবারও ছক্কা খেলে কার্যত তখনই শেষ হয় ম্যাচ। তবে শেষ ওভারে ৫ রানে প্রয়োজনকেও দুর্দান্তভাবে রুখে দিচ্ছিলেন এ সিরিজে অভিষেক হওয়া জামান খান।
দুর্দান্ত ইয়র্কার ও স্লোয়ারের শেষ ২ বলে ২ রানের সমীকরণ এনেছিলেন জামান। পঞ্চম বলে জাদরানের ব্যাটে এজড হয়ে থার্ডম্যানের কাছে অর্ধেক সুযোগ এসেছিল ক্যাচ ধরার। তবে সেটা আর হয়নি। এতে চার হলে ৭ উইকেটের জয় পায় আফগানিস্তান। ১৯ রানে ২ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হন ফজলহক ফারুকি।
অন্যদিকে এ ম্যাচে তরুণ টপ অর্ডাররা ব্যর্থ হওয়ায় বড় সংগ্রহ পায়নি পাকিস্তান। নির্ধারিত ওভার শেষে ৩ উইকেটে ১৩০ রান করতে পারে দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৬৪ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলা ইমাদ ওয়াসিমের সৌজন্য।