শ্রীলঙ্কার ম্যাচ মানেই যেন একের পর এক আলোচিত ঘটনা। প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়দের সঙ্গে তো বটেই, এমনকি আম্পায়ারদের সঙ্গেও বাক বিতণ্ডায় জড়িয়ে যাচ্ছেন লঙ্কান ক্রিকেটাররা। লঙ্কান ক্রিকেটাররা নিষেধাজ্ঞার মতো শাস্তিও পাচ্ছেন। তবু আম্পায়ারদের সঙ্গে তাঁরা তর্কে জড়াচ্ছেন হরহামেশাই। আইসিসি ইভেন্ট, দ্বিপক্ষীয় সিরিজ—বাদ যাচ্ছে না কোনো টুর্নামেন্টই।
এশিয়ার কোনো প্রতিপক্ষের সঙ্গে লঙ্কানদের খেলা হলেই বেশ উত্তাপ ছড়াচ্ছে। ২০২৩ বিশ্বকাপ থেকে হিসেব করলে এশিয়ার ভেন্যুতেই হচ্ছে ম্যাচগুলো। সিদ্ধান্ত পক্ষে না এলেই আম্পায়ারদের সঙ্গে লঙ্কান ক্রিকেটাররা তর্কে জড়িয়ে পড়ছেন প্রায়।
অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসের টাইমড আউট, ভেন্যু: দিল্লি; ৬ নভেম্বর, ২০২৩
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম ব্যাটার হিসেবে ‘টাইমড আউটের’ শিকার অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস হয়েছেন এই ম্যাচেই। লঙ্কানদের ইনিংসের ২৫ তম ওভারের দ্বিতীয় বলে সাদিরা সামারাবিক্রমাকে আউট করেন সাকিব আল হাসান। এরপরই উইকেটে গিয়ে ম্যাথুস বুঝতে পারলেন তাঁর হেলমেটের স্ট্র্যাপ ছেড়া। তিনি ড্রেসিংরুমে ইশারা করতেই নতুন হেলমেট নিয়ে অতিরিক্ত খেলোয়াড় মাঠে ঢুকলেন। এই হেলমেট পরিবর্তনের সময়ে তাঁর প্রথম বলটা খেলতে দেরি হয়ে যায় ম্যাথুসের। এমসিসির আইন অনুযায়ী, কোনো ব্যাটারের আউটের ৩ মিনিটের মধ্যে পরের বলটা খেলতে হবে। কিন্তু আইসিসির প্লেয়িং কন্ডিশন অনুযায়ী, ২ মিনিটের মধ্যে খেলতে হবে। ম্যাথুস ২ মিনিটের মধ্যে উইকেটে এলেও বল খেলতে পারেননি। নিয়মটা তৎকালীন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিবের জানা ছিল বলেই আম্পায়ার মারাইস এরাসমাস কাছে আবেদন করলে আউট ঘোষণা করা হয়। তখন ম্যাথুস বারবার তাঁর হেলমেট ইঙ্গিত করে আম্পায়ারকে বোঝাতে চেষ্টা করছিলেন যে ওটা ঠিকঠাক করতে একটু সময় লেগেছে।
কামিন্দু মেন্ডিসের নো বল, ভেন্যু: ডাম্বুলা; ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪
আফগানিস্তানের বিপক্ষে ২১০ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শেষ তিন বলে শ্রীলঙ্কার দরকার ছিল ১১ রান। শেষ ওভারের চতুর্থ বলে মিডল ও অফস্টাম্পের মাঝামাঝি জায়গা বরাবর ফুলটস করেন আফগান পেসার ওয়াফাদার মোমান্দ। কামিন্দু মেন্ডিস এগিয়ে এসেও ব্যাটে বলের সংযোগ করতে পারেননি। এরপর স্কয়ার লেগ আম্পায়ার লিন্ডন হানিবল সেটা ‘নো বল’ দেননি। যদিও ভিডিও রিপ্লেতে দেখা যায়, কামিন্দু এগিয়ে শট খেলতে গেলেও বলটা কোমড় সমান উচ্চতার ছিল। আইসিসির প্লেয়িং কন্ডিশন অনুযায়ী, বলটা নো বল ছিল। কামিন্দু আবেদন করলেও দেওয়া হয়নি নো বল। ম্যাচ শেষে আম্পায়ারের সঙ্গে ম্যাথুস, হাসারাঙ্গাকে তর্কে জড়াতে দেখা যায়।
ডাম্বুলার ঘটনার রেশ ঘটতে না ঘটতেই আবারও আম্পায়ারদের সঙ্গে তর্কে জড়াতে দেখা যায় শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটারদের। এবারের ভেন্যু সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম। প্রতিপক্ষ স্বাগতিক বাংলাদেশ। বাংলাদেশের ইনিংসের চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে সৌম্য সরকারের বিপক্ষে কট বিহাইন্ডের আবেদন করেন লঙ্কান বোলার বিনুরা ফার্নান্দো। বিনুরার মতো তাঁর সতীর্থরা আবেদন করা শুরু করলে আম্পায়ার গাজী সোহেল দেন আউট। সৌম্যর তৎক্ষণাৎ নেওয়া রিভিউয়ে স্পাইক দেখা গেলেও টিভি আম্পায়ার মাসুদুর রহমান মুকুল নট আউট ঘোষণা করেন। এমন সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ লঙ্কান ক্রিকেটাররা মাঠের আম্পায়ারদের সঙ্গে তর্ক জুড়ে দেন।
একই সিরিজে আবারও আম্পায়ারের সঙ্গে লঙ্কান ক্রিকেটার। এবারের ভেন্যু,সংস্করণ দুটিই ভিন্ন। সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ওয়ানডেতে গত পরশু বাংলাদেশের ইনিংসের ৩৭ তম ওভারের ঘটনা। ওভারে আম্পায়ারের এক সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করেন ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। এমনকি কোনো এক আম্পায়ারের থেকে তাঁর নিজের টুপিও নিয়ে গেছেন। এ ঘটনায় হাসারাঙ্গার ম্যাচ ফির ৫০ শতাংশ জরিমানার পাশাপাশি তিনটি ডিমেরিট পয়েন্ট দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে ২৪ মাসের মধ্যে আটটি ডিমেরিট পয়েন্ট হলো তাঁর। তাতে দুই টেস্ট নিষিদ্ধ হয়েছেন হাসারাঙ্গা।
আরও পড়ুন: