হোম > খেলা > ক্রিকেট

সাকিবদের বন্ধু নিপু আলো ছড়াচ্ছেন পর্তুগালে

আরমান হোসেন, ঢাকা

‘অবশেষে স্বপ্ন হলো সত্যি। পর্তুগাল জাতীয় ক্রিকেট দলে সুযোগ পেয়েছি...’—গত ১৫ আগস্ট ফেসবুকে সুসংবাদটা এভাবেই দিয়েছিলেন সিরাজ উল্লাহ খাদেম নিপু।

নিপুর হাত ধরে ইউরোপিয়ান ক্রিকেটে অভিষেক হয়ে গেল আরও এক বাংলাদেশির। কদিন আগে সুইডেন জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছেন খুলনার হুমায়ূন কবির জ্যোতি। এখন পর্তুগাল দলে খেলছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নিপু। ১২ বছর আগের দুর্ঘটনায় জীবনটা এলোমেলো না হলে এই নিপুর গল্পটা অন্য রকমও হতে পারত। সাকিব-মুশফিক-তামিমদের সঙ্গে বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে আলো ছড়ানো নিপু পর্তুগাল দলের নয়, গায়ে জড়াতে পারতেন বাংলাদেশের জার্সি!

পরশু শেষ হয়েছে পর্তুগাল, জিব্রাল্টা ও মাল্টাকে নিয়ে ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজ। এই সিরিজে বাঁহাতি স্পিনে নিয়মিত দ্যুতি  ছড়িয়েছেন নিপু। ৪ ম্যাচে ৯ উইকেট নিয়ে সিরিজের সেরা বোলার তিনিই। গতকাল ফোনে যখন তাঁর সঙ্গে কথা হলো, খুলে দিলেন মনের দুয়ার।

ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন তিনি দেখেছেন, হয়েছেনও। তবে যেভাবে চেয়েছিলেন সেভাবে কিছুই হয়নি। চাওয়া-পাওয়ার আকাশ-পাতাল এই পার্থক্যটার মধ্যেই লুকিয়ে আছে একটি হার না-মানা জীবনের গল্প। যে গল্পটার শুরু হয়েছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়, সেটিই পূর্ণতা পেয়েছে পর্তুগালের লিসবনে।

মুশফিক-সাকিব-তামিমদের সঙ্গে ২০০৬ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ খেলেছেন নিপু। বয়সভিত্তিক সিঁড়ি পেরিয়ে যখন বন্ধুদের মতো আরও ওপরে ওঠার স্বপ্ন চোখে, তখনই ঘটে চোখের দুর্ঘটনা। ২০০৯ সালের কথা, ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ সামনে রেখে হবিগঞ্জে শুরু করেছিলেন অনুশীলন। অনুশীলনেই বল লাগে তাঁর বাঁ চোখে। দুর্ঘটনার বিষয়টি বিসিবিকে জানিয়েছিলেন নিপু। বিসিবি অবশ্য কোনো সহায়তা করেনি বলেই অভিযোগ তাঁর। ১২ বছর আগের দুঃসহ স্মৃতিটা নিয়ে নিপু বলছিলেন এভাবে, ‘চোখে বল লাগার পর বিসিবিকে জানিয়েছিলাম, প্রায় অন্ধ হয়ে যাচ্ছি আমার দ্রুত উন্নত চিকিৎসা দরকার। বিসিবি আমাকে সহায়তা করেনি।’

বিকেএসপির পাঠ শেষ করার আগেই নিপুর অভিষেক হয়েছিল প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে। ২০০৬ সালে শ্রীলঙ্কায় যুব বিশ্বকাপ খেলে গিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়া সফরে। অস্ট্রেলিয়ার পালমারস্টন ক্রিকেট ক্লাবের বিপক্ষে ৮৮ রানের পাশাপাশি নিয়েছিলেন ৬ উইকেট।

সবকিছু ভালোই চলছিল। এরপরই হঠাৎ ছবিটা বদলে যায়। এবার নিপুর ক্ষোভ নির্বাচকদের ওপর, ‘জাতীয় দলের তখনকার নির্বাচক যাঁরা ছিলেন, তারাই বয়সভিত্তিক দল নির্বাচন করতেন। অস্ট্রেলিয়া সফরের পর পুরো নির্বাচক প্যানেলে পরিবর্তন আসে। তখনই আমাদের সবকিছু বদলে যায়। এরপর প্রিমিয়ার লিগ খেলি। সেখানে ভালো করেও নিয়মিত দলে জায়গা পেতাম না।’

নিপুর পথ হারিয়ে ফেলার শুরু সেখান থেকেই। পরে অবশ্য তিনি ইংল্যান্ড ও থাইল্যান্ডের ঘরোয়া লিগে খেলেছেন। এরপর অনুশীলনে চোখে বল লেগে বাংলাদেশ দলে খেলা স্বপ্নটার সলিলসমাধি!  নিপু বলছিলেন, ‘চোখের একটা অস্ত্রোপচার করেছিলাম। চিকিৎসকেরা এক বছর বিশ্রামে থাকতে বলেছিলেন। খেলা থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছিলেন। এভাবেই কাটে প্রায় তিন বছর।’

জীবন যখন চরম অনিশ্চয়তায়, তখনো নিপুর চিন্তায় জুড়ে ছিল শুধুই ক্রিকেট। স্বপ্নবাজ নিপু তখনো স্বপ্ন দেখেছেন আবারও মাঠের ক্রিকেটে ফিরবেন। এ চিন্তা থেকেই ২০১৪ সালে পাড়ি জমান ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর পর্তুগালে। সেখানে গিয়ে আগে চোখের চিকিৎসা করান। প্রায় এক বছর পর ধীরে ধীরে পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠেন। আবারও ফিরে আসেন ক্রিকেটে। তাঁর হারিয়ে যাওয়া স্বপ্নটাও ফিরে আসে, তবে অন্যভাবে।

নিপু ঠিক করেন, একদিন তিনি খেলবেন পর্তুগাল জাতীয় ক্রিকেট দলে। প্রায় ছয় বছরের কঠোর পরিশ্রম, ধৈর্য আর অধ্যবসায়ের পর অবশেষে স্বপ্নটা হাতের মুঠোয় এসেছে তাঁর।

কঠিন এই পথ পাড়ি দিতে নিপুকে প্রেরণা জুগিয়েছেন তাঁর বাবা, যিনি এখন আর পৃথিবীতে নেই। ১৯ আগস্ট পর্তুগালের হয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে অভিষিক্ত নিপু তাঁর স্বপ্ন পূরণের দিনে খুঁজে ফেরেন আকাশের তারা হয়ে যাওয়া বাবাকে, ‘খারাপ সময়ে সবচেয়ে বেশি সমর্থন জুগিয়েছেন আমার বাবা। তিনি বেঁচে থাকলে আজ অনেক খুশি হতেন।’

বিশ্বকাপের টিকিট ছাড়া অন্য কিছু ভাবছে না বাংলাদেশ

দুঃসময়ে লিটনের পাশে রংপুরও

‘সিলেটের সেমিফাইনালে ওঠা অসম্ভব নয়’

নতুন ঝামেলায় বিসিবি, স্থগিত প্রথম বিভাগ ক্রিকেট

ঢাকা ক্যাপিটালের বার্তা স্পর্শ করেছে লিটনকে

বুমরা, শামি, পান্ডিয়াকে নিয়েই চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ভারত

দাপুটে জয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরু বাংলাদেশের

যেখানে শেষ করেছেন, সেখান থেকেই শুরু চান সৌম্য

আজ বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ নেপাল

বাকি সব ম্যাচে হারলেও সমস্যা নেই রংপুরের, নিশ্চিত প্লে-অফ

সেকশন