লিগ জিতেছে বসুন্ধরা কিংস। তারও আগে জিতেছে স্বাধীনতা কাপ। আজ আরেক শিরোপার হাতছানি দলটির সামনে। ফেডারেশন কাপের ফাইনালে আজ জিতলেই ‘ট্রেবল’ জয়ের ইতিহাস গড়বে বসুন্ধরা। ফাইনালে আজ তাদের প্রতিপক্ষ মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব।
২০০৭ সালে পেশাদার লিগ প্রবর্তনের পর মাত্র একটি দলেরই ‘ট্রেবল’ জয়ের কৃতিত্ব আছে—শেখ রাসেলের। ২০১৩ সালে ট্রেবল জিতেছিল তারা। আজ ফেডারেশন কাপের ফাইনাল জিতলে তাদের সেই কৃতিত্বে ভাগ বসাবে বসুন্ধরা; দ্বিতীয় দল হিসেবে ট্রেবল জিতবে অস্কার ব্রুজোনের দল।
জাতীয় দলের সেরা সব ফুটবলারই খেলেন বসুন্ধরা কিংসের হয়ে। স্থানীয় সেরাদের বাইরেও তাদের দলে আছেন ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার মতো দেশের ফুটবলাররা। নিজেদের মাঠ, আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা—সব মিলিয়ে পূর্ণাঙ্গ একটা ক্লাব হিসেবে তাদের ধারেকাছে কেউ নেই। পূর্ণাঙ্গ একটা ক্লাব হয়ে ওঠার ফল হিসেবে তারা টানা পাঁচবার জিতেছে লিগ শিরোপা।
এই আধিপত্যের কথা মাথায় রাখলে ফেডারেশন কাপের ফাইনালে আজ তারাই ফেবারিট। অনেকের হিসাবে হয়তো তা-ই। কিন্তু ফেডারেশন কাপে মোহামেডানকে প্রতিপক্ষ হিসেবে সমীহ করার অনেক কারণ আছে। তারা টুর্নামেন্টের ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন। ফেডারেশন কাপের অন্যতম সফল দলও। এ পর্যন্ত ১১ বার ফেডারেশন কাপ জিতেছে সাদা-কালোরা। তাদের চেয়ে বেশি, সর্বোচ্চ ১২ বার শিরোপা জিতেছে শুধু আবাহনী। এবার মোহামেডান জিতলে ফেডারেশন কাপের শিরোপার সংখ্যায় ছুঁয়ে ফেলবে আবাহনীকে। আজ ময়মনসিংহের রফিক উদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়ামে ফাইনাল খেলতে নামার আগে এটাই হতে পারে মোহামেডানের অনুপ্রেরণা। বেসরকারি টিভি চ্যানেল টি স্পোর্টস বেলা ৩টা থেকে ম্যাচ সরাসরি সম্প্রচার করবে।
মাত্রই শেষ হওয়া বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ ফুটবলে একবারই হেরেছে চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা। তাদের সেই হার ছিল মোহামেডানের কাছে। ফিরতি লেগে বসুন্ধরার কাছে হেরে যাওয়ার আগে চলতি লিগে অপরাজিতই ছিল মোহামেডান। তারাই যা একটু চাপে রেখেছিল অস্কার ব্রুজোনের দলকে। লিগের সেই মোহামেডানকে কি আজ দেখা যাবে ফেডারেশন কাপের ফাইনালে? কোচ আলফাজ আহমেদ অবশ্য বলছেন, তারা ফাইনালের জন্য ‘প্রস্তুত’, ‘দলে কোনো চোট নেই, কারও অসুস্থতা নেই। পুরো স্কোয়াড নিয়ে আমরা তৈরি। শারীরিক কিংবা মানসিকভাবে যেকোনো চ্যালেঞ্জ নেওয়ার জন্য খেলোয়াড়েরা তৈরি।’
লক্ষ্য যে দলের শিরোপা জয়, সেটাও বললেন আলফাজ, ‘মোহামেডানের খেলোয়াড়েরা শ্রম-ঘাম দিয়ে কিছু ক্ষেত্রে নিজেদের সেরা প্রমাণ করেছে। আমরা আরও একবার শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের লড়াইয়ে নামব। কাজটা কঠিন, কিন্তু আমরা নিজেদের ওপর বিশ্বাস রাখছি।’ আত্মবিশ্বাস থাকলেও আলফাজ মেনে নিচ্ছেন শক্তিশালী দল বসুন্ধরা, ‘বসুন্ধরা কিংস ভালো দল। তাদের আছে বেশ কয়েকজন মানসম্পন্ন বিদেশি ফুটবলারও। তাদের নিয়ন্ত্রণের জন্য আমার দলের খেলোয়াড়দের দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া আছে। আশা করছি ভালো কিছু করতে পারব।’
‘ভালো কিছু’র আশা অস্কার ব্রুজোনেরও। বসুন্ধরার কোচ বলছেন, ‘মৌসুমজুড়েই কঠোর পরিশ্রম করেছি আমরা। নিষ্ঠা ও আন্তরিকতা দেখিয়েছি, যথাযথ অনুশীলন করেছি। সবকিছু মিলিয়েই আমরা এই জায়গায় (লিগ জয়ের পর আরেকটি টুর্নামেন্ট জয়ের সামনে) এসে দাঁড়িয়েছি। আগামীকাল (আজ) নিজেদের প্রমাণ করার আরেকটি সুযোগ সামনে।’ বসুন্ধরা কোচ আরও বলে গেলেন, ‘নিজেদের প্রতি সত্যিকারের বিশ্বাস আছে আমাদের। প্রযুক্তিগত এবং কৌশলগত স্বয়ংক্রিয়তায় ফাইনালে নিজেদের উজাড় করে দেব আমরা। আমি খেলোয়াড়দের দলীয় লক্ষ্য অর্জনে একাগ্রতা, মনোযোগ এবং হৃদয় দিয়ে খেলতে বলেছি।’