২০১৬ সালে কলকাতার ইডেন গার্ডেনসে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে প্রথম নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রায় আট বছর আগে জেতা শিরোপাই এই সংস্করণে উইন্ডিজ নারী ক্রিকেট দলের একমাত্র শিরোপা। সেই দলে ছিলেন আনিসা মোহাম্মদ, শাকেরা সেলমান, কিসিয়া নাইট ও কিশোনা নাইট। উইন্ডিজের চ্যাম্পিয়ন দলের চার ক্রিকেটার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিলেন একসঙ্গে।
আনিসা, সেলমান, কিসিয়া, কিশোনা—চার ক্রিকেটারের একসঙ্গে অবসরের কথা গতকাল ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজ (সিডব্লুআই) এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছে। বোর্ডকে অবসরের সিদ্ধান্তের কথা আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন এই চার উইন্ডিজ নারী ক্রিকেটার।
২০০৩ সালে জাপানের বিপক্ষে ওয়ানডে দিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের নারী দলে মাত্র ১৫ বছর বয়সে অভিষেক হয় আনিসার। প্রায় ২০ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে সর্বশেষ ম্যাচ খেলেছেন ২০২২-এর মার্চে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওয়ানডে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে। ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি—ওয়েস্ট ইন্ডিজের নারী ক্রিকেটারদের মধ্যে দুই সংস্করণেই সর্বোচ্চ উইকেট নিয়েছেন তিনি। ১৪১ ওয়ানডে খেলে নিয়েছেন ১৮০ উইকেট। টি-টোয়েন্টিতে ১১৭ ম্যাচে নেন ১২৫ উইকেট। উইন্ডিজের প্রথম নারী ক্রিকেটার হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে হ্যাটট্রিক করেছেন তিনি। পাঁচ ওয়ানডে বিশ্বকাপ ও সাত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলা আনিসা বলেন, ‘গত ২০ বছর সত্যিই অসাধারণ ছিল। আমি প্রতিটা মিনিট দারুণ উপভোগ করেছি। অনেক উত্থান-পাতন ছিল। আমার মতে, খেলা থেকে সরে যাওয়ার সময় এসেছে এবং তরুণ ক্রিকেটারদের সুযোগ দেওয়া উচিত। ক্যারিয়ারে ২৫৮ ম্যাচ ম্যারুন জার্সি পরে খেলার সৌভাগ্য হয়েছে আমার।’
২০০৮ সালে ডাবলিনে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পথচলা শুরু হয় সেলমানের। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে নিয়েছেন ৮২ ও ৫১ উইকেট। খেলেছেন ১০০ ওয়ানডে ও ৯৬ টি-টোয়েন্টি। সর্বশেষ ম্যাচ খেলেন কেপটাউনে গত বছর নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে। সেলমান বলেন, ‘যেসব কিংবদন্তির সঙ্গে ও বিপক্ষে খেলেছি, তাতে আমি গর্বিত। ভাগ্যবান যে তাদের কয়েকজনের উইকেটও পেয়েছি। আমার লক্ষ্য ছিল অন্যদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করা।’
কিসিয়া ও কিশোনা—দুই ক্রিকেটার সম্পর্কে যমজ বোন। দুজনেই ফেব্রুয়ারিতে ৩২ বছর পূর্ণ করবেন। কিসিয়ার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক ২০১১ সালে। ৮৭ ওয়ানডে খেলে করেন ১৩২৭ রান। টি-টোয়েন্টিতে ৭০ ম্যাচে তাঁর রান ৮০১। মূলত তিনি উইকেটরক্ষক ব্যাটার। অন্যদিকে ২০১৩ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পথচলা শুরু করেন কিশোনা। ৫১ ওয়ানডে ম্যাচে করেন ৮৫১ রান। ৫৫ টি-টোয়েন্টিতে তাঁর রান ৫৪৬। দুই বোন বলেন, ‘অসাধারণ এক যাত্রা শেষ হয়ে গেল। আমাদের পরিবার, বন্ধু, সতীর্থ, সমর্থকদের ধন্যবাদ, যাঁরা আমাদের বছরের পর বছর সমর্থন দিয়ে গেছেন। তাঁদের সমর্থন ও ভালোবাসা ছাড়া কিছুতেই তা সম্ভব হতো না। সিডব্লুআইকে ধন্যবাদ জানাই যে সুযোগ তারা দিয়েছে। এই সুন্দর মুহূর্তগুলো আজীবন মনে থাকবে।’