ক্রীড়া ডেস্ক
১২৮ রানের লক্ষ্য। এ আর এমন কী! গোয়ালিয়রে আজ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি জয়ের পথে ভারতকে কোনো পরীক্ষায় ফেলতে পারেনি না বাংলাদেশ। হেরেছে ৭ উইকেটে। সহজ জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেলেন সূর্যকুমার যাদবরা।
লক্ষ্য তাড়ায় ১০ ওভারেই ৩ উইকেট হারিয়ে ১০৬ রান করে ফেলে ভারত। বাকি রানটুকু করতেও বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি। ইনিংসের ১২তম ওভার করতে আসা তাসকিন আহমেদকে টানা ২ চার ও ১ ছয় মেরে ভারতের জয়ের কাজটা সারেন হার্দিক পান্ডিয়া। ১৬ বলে ৩৯ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। অভিষিক্ত নিতিশ কুমার রেড্ডি অপরাজিত ছিলেন ১৬ রানে।
ভারত জয়ের বন্দরে পৌঁছে ৪৯ বল হাতে রেখে। ৩ উইকেটে করে ১৩২ রান। ইনিংস শুরু করেই ঝড় বইয়ে দেন ভারতীয় ব্যাটারা। তবে দুর্দান্ত থ্রোয়ে ওপেনার অভিষেক শর্মাকে (১৬) ফিরিয়ে ঝড়ের গতি ঠান্ডা করার চেষ্টা করেছিলেন তাওহীদ হৃদয়। তবে উইকেটে এসে উল্টো তাণ্ডব চালান অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব। মোস্তাফিজুর রহমানের বলে ফেরার আগে করেন ১৪ বলে ২৯ রান। এর পর ওপেনার সঞ্জু স্যামসনকে ফেরান মেহেদী হাসান মিরাজ।
ব্যাটিং ব্যর্থতার সেই পুরোনো ভূত আবারও ভর করেছিল বাংলাদেশের ঘাড়ে। টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশকে শেষ পর্যন্ত ১২৭ রানের সংগ্রহ এনে দিয়েছেন মিরাজ। ৩২ বলে ৩ চারে ৩৫ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। তবে পুরো ওভার খেলতে পারেনি বাংলাদেশ। অলআউট হয়েছে ১৯.৫ ওভার।
বাংলাদেশের পতনের শুরুটা লিটন দাসকে (৪) নিয়ে। ইনিংসের চতুর্থ বলে চার মেরে দারুণ শুরুর আভাস দিলেও বাংলাদেশি ওপেনার-উইকেটরক্ষকের আত্মবিশ্বাসের বেলুন মুহূর্তে ফুটো করে দেন আর্শদীপ সিং। পরের বলে শট করতে গিয়েছিলেন লিটন। কিন্তু বল উঠে যায় আকাশে। সেই বল লুফে নেন রিংকু সিং। উইকেট পড়ার ঢেউটা আর ঠেকিয়ে রাখতে পারেনি বাংলাদেশ।
ইনিংসের তৃতীয় ওভারের শুরুতে আর্শদীপের বল টেনে মারতে গিয়ে বোল্ড হন আরেক ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন। প্রায় দুই বছর পর দলে ফেরার ইনিংসে তিনি করতে পারেন ৮ রান। তৃতীয় উইকেটে জুটি গড়ে শুরুর ধাক্কাটা সামলানোর চেষ্টা করেছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও তাওহীদ হৃদয়। তবে ২৭ বলে ২৬ রানের জুটি ভাঙেন বরুণ চক্রবর্তী। ১৮ বলে ১২ রান করে ফেরেন হৃদয়।
দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশকে আরও বিপদে ফেলে দেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও (১)। গত আইপিএলে গতির ঝড় তোলা অভিষিক্ত ফাস্ট বোলার মায়াঙ্ক যাদবকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে বাউন্ডারিতে সূর্যকুমারের হাতে বন্দী ৩৮ বছর বয়সী এই অলরাউন্ডার। তার আগের ওভারে মেডেন দেন মায়াঙ্ক। ভারতের তৃতীয় বোলার হিসেবে অভিষেক টি-টোয়েন্টিতে নিজের ওভারে কোনো রান দেননি তিনি। এই কীর্তি আগে ছিল অজিত আগারকার (২০০৬) ও আর্শদীপের (২০২২)।
পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশের স্কোর ছিল—২/৩৯। ১২ ওভার শেষে সেই স্কোর দাঁড়ায়—৬/৭৫। চাপের মাঝে দাঁড়িয়ে থাকা শান্ত ২৫ বলে ২৭ রান করে ফেরেন ওয়াশিংটন সুন্দরের ওভারে। তার আগে জাকেরকে বোল্ড করেন বরুণ। নিজের তৃতীয় শিকার হিসেবে উড়িয়ে মারতে যাওয়া রিশাদ হোসেনকেও (১১) ফেরান এই লেগি। বাংলাদেশের রান তখন ৯৭।
এরপর তাসকিন আহমেদকে (১২) নিয়ে ২৩ রানের জুটি গড়েন মিরাজ। সেই জুটিও ভাঙে নিজেদের ভুলে। হার্দিকের ওভারে ২ রান নিতে গিয়ে রানআউট হন তাসকিন। দুই বল পর শরীফুল ইসলামকে (০) বোল্ড করেন পান্ডিয়া। শেষ ওভারের পঞ্চম বলে মোস্তাফিজকেও (১) বোল্ড করে বাংলাদেশের ইনিংস থামান আর্শদীপ।