ক্রীড়া ডেস্ক
থিতু হয়ে উইকেট ছুড়ে আসার রোগ তো বাংলাদেশের বহু পুরোনো। সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম থেকে শুরু করে লিটন দাস, নাজমুল হোসেন শান্ত—ম্যাচের পরিস্থিতি যা-ই হোক না কেন, বাজে শট খেলে উইকেট উপহার দিয়ে আসেন। কানপুরে আজ দলকে বিপদে ফেলে উইকেট দিয়ে এলেন সাকিব ও লিটন। দলও পড়েছে বিপদে।
দুই দিন নষ্ট হওয়ার পর কানপুরের রৌদ্রোজ্জ্বল আবহাওয়ায় চতুর্থ দিনে আজ খেলা পুনরায় শুরু হয়েছে। বৃষ্টির বাগড়া, আউটফিল্ডের সমস্যা থাকায় খেলা না হলেও পিচ কিন্তু ব্যাটারদের জন্য স্বর্গ। এমন ব্যাটিং স্বর্গে যেখানে দায়িত্ব নিয়ে খেলার কথা সাকিব-লিটনের, তখন তাঁরা করলেন আত্মহত্যা। সাকিব-লিটনের ব্যর্থতার দিনে টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৩তম সেঞ্চুরি তুলে নিলেন। লাঞ্চে যাওয়ার সময় মুমিনুলের পিঠ চাপড়ে দিলেন বিরাট কোহলি। ৬৬ ওভারে ৬ উইকেটে ২০৫ রানে থেকে চতুর্থ দিনে লাঞ্চ বিরতিতে গেল বাংলাদেশ।
লিটন আজ যখন ব্যাটিংয়ে নামেন, প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের স্কোর তখন ৪০.২ ওভারে ৪ উইকেটে ১১২ রান। মুমিনুল হকের সঙ্গে তাঁর (লিটন) জুটিটা দারুণভাবে এগোচ্ছিল। ৩টি চারও মেরেছেন লিটন। হঠাৎ করে আক্রমণাত্মক হতে গিয়ে উইকেট খুইয়েছেন তিনি। ৫০তম ওভারের চতুর্থ বলে সিরাজকে ড্রাইভ করতে যান লিটন। মিড অফে দারুণ ক্যাচ লুফে নিয়েছেন রোহিত শর্মা। ছয় নম্বরে নেমে সাকিব গোল্ডেন ডাক প্রায় মেরেই বসেন। তবে রিটার্ন ক্যাচ নিতে ব্যর্থ হয়েছেন সিরাজ।
সিরাজের কট এন্ড বোল্ডের শিকার থেকে বেঁচে যাওয়া সাকিব এগোতে থাকেন ধীরস্থিরভাবে। ৫৬তম ওভারের প্রথম বলে অশ্বিনকে ইনসাইড আউট করে কাভারে চার মারেন সাকিব। পরের বলটা অশ্বিন একটু গতি কমিয়ে দেন। সাকিব ‘ডাউন দ্য উইকেটে’ খেলতে গেছেন এবার। এবার সাকিবের সামনের হাত অনেক বেশি এগিয়ে যায়। মিসটাইমিং হওয়া বল ধরাটা খুব কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছিল মিড-অফ বৃত্তে থাকা সিরাজের। তবে অবিশ্বাস্যভাবে বাঁ হাতে ক্যাচটি নেন ভারতীয় পেসার। চোখে সানগ্লাস থাকায় সূর্যের কিরণ থেকে বাঁচিয়ে চোখ বলে নিবদ্ধ করতে পারেন তিনি। ১৭ বলে ২ চারে ৯ রান করেন সাকিব।
লিটন, সাকিবের দ্রুত বিদায়ে ৪ উইকেটে ১৪৮ থেকে ৬ উইকেটে ১৭০ রানে পরিণত হয় বাংলাদেশ। ২২ রানের ব্যবধানে ২ উইকেট হারালেও মুমিনুল খেলতে থাকেন সাবলীলভাবে। বাউন্ডারির বল পেয়ে মেরেছেন, সুযোগ বুঝে ডিফেন্স করেছেন। যদিও লাঞ্চের শেষভাগে এসে বেশ কয়েকবার আউটের সম্ভাবনা তৈরি করেন মুমিনুল। ব্যক্তিগত ৯৫ রানে একবার জীবন পান মুমিনুল। ৬৫তম ওভারের দ্বিতীয় বলে সিরাজকে খোঁচা মারতে যান মুমিনুল। দ্বিতীয় স্লিপে ডাইভ দিয়েও ক্যাচটা লুফে নিতে পারেননি বিরাট কোহলি।
নার্ভাস নাইনটিতে বেঁচে যাওয়া মুমিনুল সেঞ্চুরি পূর্ণ করতে তেমন একটা দেরি করেননি। ৬৬তম ওভারের দ্বিতীয় বলে অশ্বিনকে স্লগ সুইপে ডিপ মিড উইকেট দিয়ে চার মারেন মুমিনুল। তাতে বাংলাদেশের বাঁহাতি ব্যাটার পেয়ে যান টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৩তম সেঞ্চুরির দেখা। সেঞ্চুরির পর এক হাতে ব্যাট, আরেক হাতে হেলমেট উঁচিয়ে ধরার পর একটা সেজদা দিলেন মুমিনুল। বর্তমানে তিনি ১৭৬ বলে ১০২ রানে অপরাজিত। মেহেদী হাসান মিরাজ ব্যাটিং করছেন ২৬ বলে ৬ রানে।