ক্রীড়া ডেস্ক
ফলোঅন এড়ানো দূরে থাক, দুই ইনিংস মিলিয়ে ২০০ রান করতেই হিমশিম খেতে হলো বাংলাদেশকে। প্রথম ইনিংসে মুমিনুল হকের ফিফটিতে টেনেটুনে ১৫৯ রান। দ্বিতীয় ইনিংসে আরও খারাপ অবস্থা—১৪৩ রানে অলআউট। চট্টগ্রাম টেস্টের তৃতীয় দিনেই বাংলাদেশ হেরেছে ইনিংস ও ২৭৩ রানে।
ভারত সফরে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পর এবার ঘরের মাটিতে ধবলধোলাই। ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতে এবার দক্ষিণ আফ্রিকার ঘরে ফেলার পালা। প্রোটিয়াদের টেস্ট ইতিহাসে এটিই সবচেয়ে বড় জয়। এর আগে ২০১৭ সালে ব্লুমফন্টেইনে বাংলাদেশকেই ইনিংস ও ২৫৪ রানে হারিয়েছিল তারা। এত দিন ইনিংস ব্যবধান ও রানে এটিই ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার সেরা জয়।
প্রোটিয়ারা তিন সেঞ্চুরিতে ৬ উইকেটে ৫৭৫ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণার পর গতকালই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। দিন পার করে ৪ উইকেটে ৩৮ রান নিয়ে। তৃতীয় দিনে আরও ভয়ংকর অবস্থা হলো স্বাগতিকদের। দিনের শুরুতেই কাগিসো রাবাদার তোপে শেষ নাজমুল হোসেন শান্ত (৯)। বাংলাদেশ অধিনায়ক ব্যাটিংয়ে নেমেছিলেন ৪ রান নিয়ে।
প্রথম ইনিংসে যা একটু লড়াই করেন মুমিনুল। ৬ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে নেমেছিলেন তিনি। থামেন ৮২ রানে। চেষ্টা করেও টেস্ট ক্যারিয়ারের ২০তম ফিফটিকে আর নিয়ে যেতে পারেনি সেঞ্চুরির পথে। মধ্যাহ্নভোজের পর মুমিনুল ফিরলে কার্যত শেষ হয়ে যায় বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস। সুযোগটা কাজে লাগায় প্রোটিয়ারা। ফলোঅনে পড়া বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় আবারও।
এবার আরও বাজে অবস্থায় পড়ে বাংলাদেশ। চা বিরতির আগে স্কোরটা দাঁড়ায়—৪/৪৩। সেটি শেষ পর্যন্ত ১০০ পেরিয়েছে অভিষিক্ত উইকেটরক্ষক মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনের ২৯ ও পেসার হাসান মাহমুদের ৩০ বলে ৪ ছয়ে অপরাজিত ৩৮ রানের সুবাদে। তার আগে মুশফিকুর রহিমরা এলেন আর গেলেন। অঙ্কনের আগে ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় (১১) ও শান্ত (৩৬) ছাড়া আর কেউ দুই অঙ্কের রানই ছুঁতে পারেননি।
মুমিনুল দ্বিতীয় ইনিংসে খুলতে পারেননি রানের খাতা। তার আগে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশকে একটি লজ্জার হাত থেকে বাঁচিয়েছেন তিনি। নবম উইকেটে তাইজুল ইসলামের (৩০) সঙ্গে ১০৩ রানের জুটি গড়েন মুমিনুল। ৪৮ রানেই ৮ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল স্বাগতিকেরা। ঘরের মাটিতে বাংলাদেশের এক ইনিংসে সর্বনিম্ন ৮৭ রানে অলআউট হয়েছেন দুবার। প্রথমবার ২০০২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। দ্বিতীয়টি ১৯ বছর আগে মিরপুর শেরেবাংলায় পাকিস্তানের বিপক্ষে।
৫ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসের ব্যাটিং লাইনআপকে ছিন্নবিচ্ছিন্ন করে দিয়েছিলেন রাবাদা। দ্বিতীয় ইনিংসে চলল প্রোটিয়াদের ঘূর্ণি। দুই স্পিনার সেনুরান মুতুসামি ও কেশব মহারাজ মিলে নেন ৯ উইকেট। তার মধ্যে মহারাজের শিকার ৫ উইকেট। তৃতীয় দিনে ১৬ উইকেট হারিয়ে হারটা নিশ্চিত করে ফেলে বাংলাদেশ।