খারাপ সময় যখন আসে তখন যেন পঙ্গপালের মতন ঝাঁক বেঁধেই আসে। তবে আশার কথা হলো, খারাপ সময় একদিন কেটে যায়। তবে ব্রাজিল ফুটবল দলের খারাপ সময় কবে কাটবে সেটি এখন সময়ের ওপর নির্ভরশীল। আরও একটি ভুলে যাওয়ার মতন বছর শেষ করতে যাচ্ছে সেলেসাওরা।
২০০২ বিশ্বকাপের পর থেকে ‘হেক্সা’ জয়ের দিকে তাকিয়ে পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। কিন্তু প্রতিবার তাদের সেই স্বপ্ন ভেঙেছে। ২০২২ বিশ্বকাপে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে টাইব্রেকারে হেরে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিয়েছিলেন নেইমাররা। গত বছরও তাদের কেটেছে স্বপ্নভঙ্গের যন্ত্রণায়। এর আগের বছর আর্জেন্টিনার কাছে হারিয়েছিল কোপা আমেরিকা।
২০২৩ সালে অবশ্য কোনো টুর্নামেন্ট থেকে বিদায়ের যন্ত্রণায় পুড়তে হয়নি ব্রাজিলকে। তবে যে কয়েকটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছে নিজেদের সেরা ছন্দে দেখা যায়নি। কনমেবল অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে গত চার ম্যাচ ধরে জয়বঞ্চিত ব্রাজিল, তার মধ্যে হেরেছে টানা তিন ম্যাচ। ৬ ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার ছয় নম্বরে তারা। যেখানে তাদের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা সবার শীর্ষে।
কাতার বিশ্বকাপ ব্যর্থতার দায়ে চাকরি থেকে অব্যাহতি নেন কোচ তিতে। তিনি চলে যাওয়ায় কেয়ারটেকার কোচ হিসেবে ব্রাজিলের দায়িত্ব নেন ফার্নান্দো দিনিজ। কিন্তু তাঁর অধীনে সেলেসাওদের পারফরম্যান্সের গ্রাফ নিম্নমুখী। ব্রাজিলিয়ান ফুটবল ফেডারেশন (সিবিএফ) চেয়েছিল, রিয়াল মাদ্রিদ থেকে কোচ কার্লো আনচেলত্তিকে আনতে। সেটি নিয়ে জোর গুঞ্জনও চলছিল সাম্প্রতিক সময়ে। কিন্তু এবারও ব্রাজিলের সেই আশাও পূরণ হচ্ছে না। গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে লস ব্লাঙ্কোসদের সঙ্গে আরও দুই বছরের জন্য চুক্তি করেছেন আনচেলত্তি। ইতালিয়ান কোচ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে থাকবেন ২০২৬ সাল পর্যন্ত। এই বছরই যুক্তরাষ্ট্রে হবে বিশ্বকাপ। কিন্ত আনচেলত্তির অধীনে বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্নটা পূরণ না হওয়ার সম্ভাবনায় বেশি সেলেসাওদের।
ব্রাজিলিয়ান ফুটবল ফেডারেশনের অবস্থাও তথৈবচ। প্রেসিডেন্ট এদনালদো রদ্রিগেজকে বের করে দেওয়া হয়েছে অফিস থেকে। সেটি নিয়ে খেপেছে ফিফা। বোর্ডে রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপের কারণে ব্রাজিলের ফুটবল ফেডারেশনকে নিষেধাজ্ঞার হুমকিও দিয়েছে ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এমন অস্থিতিশীল অবস্থার মধ্যে কোপায় খেলতে যাবে ব্রাজিল। যেখানে তাদের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনায় সুসময় বইছে সেখানে সেলেসাওরা খুঁজছে নিজেদের হারিয়ে।