নিজস্ব প্রতিবেদক, বেঙ্গালুরু থেকে
সকাল ৮.১৫ মিনিট। বেঙ্গালুরুর হোটেল রেনেসাঁর লবিতে দলে দলে ফুটবলারদের ভিড়। হোটেলের বাইরে টিভি ক্যামেরার ভিড় দেখে বেশ বিরক্ত নিরাপত্তাকর্মীরা। ফুটবলার কিংবা সাংবাদিকদের তাতে মাথাব্যথা নেই। সাংবাদিকদের পাশে রেখেই পাঞ্জাবি-পাজামা পরে ফুটবলাররা হেঁটে হেঁটে গেলেন শত মিটার দূরে ঈদগাহ ময়দানে।
দেশ থেকে প্রায় দেড় হাজার মাইল দূরে বিদেশ-বিভুঁইয়ে ঈদ। পরিবার থেকে দূরে এমন ঈদ কারোরই ভালো লাগার কথা না। ফুটবলারদের মনও তাই খানিকটা ভার। তবে প্রিয়জনদের ছাড়া এই ঈদের বিশেষত্বও অন্যরকম। লম্বা সময় পর সাফল্যের ছোঁয়ায় রঙিন হতে শুরু করেছে বাংলাদেশের ফুটবল। ১৪ বছর পর সাফের সেমিতে বাংলাদেশ। কুয়েতের বিপক্ষে আগামী পরশু সেমিফাইনালে দারুণ একটা লড়াই উপহার দিতে পারলে ২০ বছর পর সাফে ফাইনালে খেলতে পারার আক্ষেপটাও মিটে যাবে লাল-সবুজ দলের।
লেবানন, মালদ্বীপ ও ভুটানের গ্রুপে বাংলাদেশ সেমিফাইনালে যেতে পারবে তো—বেঙ্গালুরুতে সাফে খেলতে আসার আগে এ নিয়ে বেশ একটা সংশয় ছিল। সেই সংশয় দূর করে প্রাথমিক লক্ষ্যটা পূরণ করেছে বাংলাদেশ দল। এখন সামনের লড়াইটা আরও কঠিন। সাফের ফাইনালে খেলতে হলে হারাতে হবে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ের ১৪৩ স্থানে থাকা কুয়েতকে। তবে মালদ্বীপ ও ভুটানের জালে ৬ গোল দিয়ে উড়তে থাকা বাংলাদেশ এখন বেশ আত্মবিশ্বাসী। পরিবার পাশে না থাকলেও ‘নতুন পরিবার’ জাতীয় দল নিয়ে বড় কিছুর স্বপ্নের ছোঁয়া ফুটবলারদের চোখে।
নামাজ পড়ার ফাঁকেই যতটুকু পেরেছেন, কথা বলার চেষ্টা করেছেন ফুটবলাররা। কেউ বললেন সাফে লক্ষ্য সম্পর্কে। কেউ চাইলেন দেশবাসীর কাছে দোয়া। মালদ্বীপ ও ভুটানের বিপক্ষে টানা দুই ম্যাচে গোল পাওয়া ফরোয়ার্ড রাকিব হোসেন যেমন বললেন, ‘পরিবার ছাড়া ঈদ করছি, খানিকটা খারাপ লাগছে। আবার ভালোও লাগছে, কারণ আমরা সাফের সেমিফাইনালে। দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই।’
চোটের কারণে ভুটানের ম্যাচে খেলতে পারেননি ডিফেন্ডার তারিক কাজী। আজ অবশ্য দলের সঙ্গেই নামাজ পড়েছেন তিনি। তারিক দ্রুতই চোট থেকে সেরে উঠছেন বলে জানালেন বাংলাদেশ দলের চিকিৎসক সালেহ উদ্দীন মাহমুদ। কাল করতে পারেন অনুশীলনও। কুয়েতের মতো দলের বিপক্ষে শক্ত রক্ষণের দরকার বাংলাদেশের। তারিক ফিরলে আর বাংলাদেশ কুয়েতকে হারিয়ে ফাইনালে খেলতে পারলেই ঈদের আনন্দটা আরও বড় হবে বাংলাদেশের ফুটবল সমর্থকদের।