পরিসংখ্যান বলবে বেন চিলওয়ালের গোলে গতকাল ব্রেন্টফোর্ডের বিপক্ষে ১-০ গোলে জয় পেয়েছে চেলসি। তবে কোচ টমাস টুখেল ভালোভাবেই জানেন, ভাগ্যের জোরে আর গোলরক্ষক এডওয়ার্ড মেন্দির গুণে ব্রেন্টফোর্ডের মাঠ থেকে স্বস্তির ৩ পয়েন্ট নিয়ে ফিরতে পেরেছে এবারের ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন দলটি।
প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে দূরপাল্লার শটে ব্রেন্টফোর্ডের জাল খুঁজে নেন চেলসি মিডফিল্ডার চিলওয়াল। ম্যাচের বাকি সময়ে সেই গোল ধরে রেখে জয় পেলেও বড় ব্যবধানে হারতেও পারত চেলসি। ৭৪ বছর পর ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে উঠে আসা ব্রেন্টফোর্ডের ফুটবলাররা নিজেদের মাঠে শেষ ২০ মিনিট যেভাবে খেলছিলেন, একপ্রকার কোণঠাসাই হয়েছিল টুখেলের দল।
শেষ পর্যন্ত অবশ্য হাসি নিয়েই মাঠে ছেড়েছেন চেলসি ফুটবলাররা। কারণ ব্রেন্টফোর্ডের ১০ ফুটবলারকে একাই যেন ঠেকিয়ে রাখলেন গোলরক্ষক মেন্দি। গতকালের ম্যাচসহ এবারের মৌসুমে আট ম্যাচের পাঁচটিতেই চেলসির জালে কোনো বল ঢুকতে দেননি ২৯ বছর বয়সী সেনেগালিজ গোলরক্ষক।
ম্যাচ শেষে অন্যদের চেয়ে মেন্দিকেই বেশি প্রশংসায় ভাসালেন চেলসি কোচ, ‘আমরা ৭০ মিনিট ভালো খেলেছি, শেষ ২০ মিনিট ভাগ্যের ছোঁয়া পেয়েছি। ৩ পয়েন্টের সব কৃতিত্ব মেন্দির। ব্রেন্টফোর্ড অনেক আক্রমণ করেছে, কিন্তু আমাদের একজন মেন্দি ছিল।’
আজ যে গোলরক্ষকের প্রশংসায় পঞ্চমুখ চেলসি কোচ, অথচ একটা সময় সেই মেন্দিই ইংল্যান্ডে দিন পার করতেন খেলার জন্য ক্লাব খুঁজে খুঁজে। ফ্রান্সের তৃতীয় বিভাগের দল শেরবর্গের হয়ে খেলা শুরু করা মেন্দি ২০১৫ সালে ভাগ্যের খোঁজে পাড়ি জমান ইংল্যান্ডে। কিন্তু সেই বছরটাতে কোনো ক্লাবই দলে নেয়নি তাকে। বেকার অবস্থায় ফিরে যান ফ্রান্সে। জায়গা পান লিগ ওয়ানের দল রেইমসের বিকল্প দলে। তিন মৌসুম রেইমসের হয়ে খেলার পর একই লিগের আরেক দল রেসে পাড়ি জমান ২০১৯ সালে। এক মৌসুমেই নিজের জাত চেনানোর পর ২০২০ সালে তাঁকে কিনে নেয় চেলসি।
গোলরক্ষকের দলবদলে রেকর্ড মূল্যে অ্যাথলেটিক বিলবাও থেকে স্প্যানিশ গোলরক্ষক কেপা আরিজাবালাগাকে দলে নিয়েও শান্তি পাচ্ছিল না চেলসি। গোলবারের নিচে কেপার ‘হাস্যকর’ সব ভুল চেলসিকে বাধ্য করে বিকল্প গোলরক্ষকের খোঁজ করতে। প্রথম মৌসুমেই চেলসির তখনকার কোচ ফ্রাঙ্ক ল্যাম্পার্ডের মন কেড়েছিলেন মেন্দি। গড়েছেন ইতিহাস। ২০২০-২০২১ চ্যাম্পিয়নস লিগের ১২ ম্যাচের ৯টিতে তাঁকে পরাস্ত করতে পারেননি প্রতিপক্ষের স্ট্রাইকাররা। প্রথম আফ্রিকান গোলরক্ষক হিসেবে জিতছেন চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা। বড় কোনো চমক না থাকলে এবারে ব্যালন ডি’অরের সেরা গোলরক্ষকের ট্রফিটাও উঠতে পারে একসময় দল না পাওয়া মেন্দির হাতেই।