ক্রীড়া ডেস্ক
ইউরোর ফাইনালে কাল ইংল্যান্ড খেলবে ইতালির বিপক্ষে। ইংলিশ সমর্থকেরা এখন কোরাস তুলেছে ‘ইটস কামিং হোম’! সমর্থকদের এই কোরাস তোলার সুযোগ করে দিতে বড় অবদান রেখেছেন রাহিম স্টার্লিং। স্টার্লিংকে এখন রীতিমতো জাতীয় নায়ক হিসেবে দেখছে ইংলিশ সংবাদমাধ্যমগুলো। এক সময় এই ইংলিশ গণমাধ্যম বলির পাঁঠা বানিয়েছিল স্টার্লিংকে!
২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপের আগে স্টার্লিং তাঁর ডান পায়ে ‘এম সিক্সটিন অ্যাসল্ট’ রাইফেলের আদলে ট্যাটু এঁকেছিলেন। খবরটি ইংলিশ গণমাধ্যমে আসার পর কি সমালোচনার মুখেই না পড়েছিলেন স্টার্লিং! ইংলিশ সমর্থক থেকে শুরু সংবাদমাধ্যম—সবাই কাঠগড়ায় তুলেছিল ইংলিশ স্ট্রাইকারকে। বাদ যায়নি ইংল্যান্ডের অস্ত্রবিরোধী সংগঠনও। তারা তখন বলেছিল এটা আসলে একধরনের ‘অসুস্থ মানসিকতা’। প্রশ্ন উঠেছিল ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ দলে তাঁর থাকা নিয়েও।
অথচ পায়ে রাইফেলের উলকি আকার পেছনের গল্পটা অনেকেই জানার চেষ্টা করেনি। পরে স্টার্লিং নিজেই বিষয়টি পরিষ্কার করেছিলেন। বলেছিলেন, ‘আমি নিজেও বন্দুকের ভুক্তভোগী, আমার বয়স যখন যখন দুই বছর। তখন আমার বাবা দুষ্কৃতকারীদের বন্ধুকের গুলিতে নিহত হন।’ ডান পায়ে উলকি আঁকার কারণ, স্টার্লিং ডান পায়েই প্রতিপক্ষের জালে শট নেন। ডান পায়ে স্টার্লিংয়ের বুলেট গতির শটই আসলে ওই রাইফেলের উলকির প্রতীকী!
ইংলিশ গণমাধ্যমের বলির পাঁঠা হওয়ার দুই বছর পরই দৃশ্যপট বদলে গেছে। এবারের ইউরোতে প্রথম ম্যাচ থেকেই আলো ছড়িয়েছেন স্টার্লিং। গ্রুপ পর্বে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে তাঁর একমাত্র গোলেই জিতেছিল ইংল্যান্ড। চেক প্রজাতন্ত্রের বিপক্ষেও স্টার্লিংয়ের গোলেই জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছিল সাউথগেটের শিষ্যরা। গ্রুপ পর্বে তিন ম্যাচের দুটি জয়ে সরাসরি অবদান রেখেছেন স্টার্লিং।
জার্মানির বিপক্ষে শেষ ষোলোর ম্যাচেও প্রথম গোল এসেছিল স্টার্লিংয়ের পা থেকে। ইউক্রেনের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে গোল না পেলেও হ্যারি কেনের প্রথম গোলে অ্যাসিস্ট করেছিলেন ম্যানচেস্টার সিটির এই ফরোয়ার্ড। কাল ফাইনালেও কোচ গ্যারেথ সাউথ গেটের ‘ট্রাম্প কার্ড’ হতে পারে স্টার্লিং। ইংলিশ সংবাদমাধ্যম যাকে একসময় বলির পাঁঠা বানিয়েছিল, তারাই এখন স্টার্লিং স্তুতিতে ব্যস্ত!