নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
সাফে গত পরশু মালদ্বীপের কাছে ২-০ গোলে হেরে জামাল ভূঁইয়াদের ফাইনালের রাস্তাটা কঠিন হয়ে গেছে। গত পরশু ম্যাচের পর শিষ্যদের টানা ম্যাচ খেলার ক্লান্তি আর রেফারির পক্ষপাতিত্বকেই দুষেছেন বাংলাদেশ কোচ অস্কার ব্রুজোন।
গতকাল ডিফেন্ডার রহমত মিয়া ও দলের ম্যানেজার সত্যজিৎ দাস রুপুও বললেন, সাত দিনে তিন ম্যাচ খেলার ধাক্কা সামলে পাঁচ দিন বিশ্রাম পাওয়া মালদ্বীপের আক্রমণের জবাব দিতে পারেননি বাংলাদেশের ফুটবলারেরা। আর টিম হোটেলে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে কাল রহমত মিয়া বলেছেন, ‘আমাদের অধিকাংশ খেলোয়াড় প্রতিটি ম্যাচ খেলেছে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে। দলের অনেকেই খুব ক্লান্ত। আমাদের ভালো না করতে পারার (মালদ্বীপের বিপক্ষে) এটা একটা কারণ। এটা বাংলাদেশের লিগের কোনো খেলা নয় যে ধীরে ধীরে হবে; খানিকটা বিশ্রাম পাওয়া যাবে। আন্তর্জাতিক ম্যাচ যে কঠিন হবে, সেটা জানাই ছিল।’
টানা ম্যাচ খেলায় মালদ্বীপের সঙ্গে লড়াইটা যে কঠিন হবে, সেটি অজানা ছিল না। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয় আর ভারতের সঙ্গে দারুণ এক ড্রয়ের পর স্বাগতিকদের বিপক্ষে এভাবে পথ হারানোর কারণ হিসেবে ক্লান্তি সামনে এলেও জাতীয় দলের ফুটবলারদের অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসও কম দায়ী নয় বলে মনে করেন জাতীয় দলের সাবেক কোচ শফিকুল ইসলাম মানিক। আজকের পত্রিকাকে তিনি বললেন, ‘আত্মতুষ্টি একটা কারণ। স্বাভাবিক খেলাটা তারা খেলতে পারেনি। বাংলাদেশ দল প্রথম দুই ম্যাচে ভালো খেলেছিল। মালদ্বীপ বেশি ভালো খেলায় আমাদের ফুটবলারেরা খেই হারিয়ে ফেলেছে। ১০-১৫ মিনিট পরই বলের দখল হারাতে শুরু করে তারা। কী করবে, কী করবে না–এমন সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছিল। অনেক সময় ম্যাচের কিছু টার্নিং পয়েন্ট থাকে। বাংলাদেশ সেটা খুঁজে পায়নি।’
নেপালের বিপক্ষে বাংলাদেশ ফুটবলারদের মানসিকভাবে পিছিয়ে থাকার আশঙ্কা আছে। হারলেই বাদ পরে যাওয়ার ভাবনাও ক্ষতি করতে পারে।
গোলাম সারোয়ার টিপু, সাবেক ফুটবলার ও কোচ
ভারত ম্যাচে ডি-বক্সের বাইরে লিস্টন কোলাকোকে টেনে ফেলে ফাউল করে লাল কার্ড দেখেছিলেন ডিফেন্ডার বিশ্বনাথ ঘোষ। নাইজ হাসানকে ডি-বক্সে একইভাবে ফেলে মালদ্বীপকে পেনাল্টি উপহার দেন মিডফিল্ডার সোহেল রানা। দুই ম্যাচে দুই হলুদ কার্ড দেখায় নেপালের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে ইয়াসিন আরাফাতকে পাচ্ছে না বাংলাদেশ। একই সমস্যায় মালদ্বীপের বিপক্ষে খেলতে পারেননি রাকিব হোসেন। ডি-বক্সের আশপাশে বাংলাদেশের ফুটবলারদের ফাউল করার প্রবণতা আর কার্ড নিয়ে উদাসীনতায় ঘরোয়া ফুটবলে দুর্বল রেফারিংকেও দুষছেন মানিক, ‘বিপিএল ফুটবলে অনেক সময় রেফারিরা এসব বিষয় এড়িয়ে যান। ঘরোয়া ফুটবলে বড় দলের ফুটবলারেরা এমন অপরাধ করেও পার পেয়ে যান। আন্তর্জাতিক ফুটবলে এসব করে পার পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তবে আমার মনে হয়েছে মালদ্বীপের বিপক্ষে বাংলাদেশের বিপক্ষে রেফারি একটু বেশিই বাঁশি বাজিয়েছেন।’
ফাইনাল খেলতে হলে ১৩ অক্টোবর নেপালের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে জয় পেতেই হবে জামাল ভূঁইয়াদের। ‘জিততেই হবে’—এমন সমীকরণ বাংলাদেশের জন্য চাপ হতে পারে বলে মনে করেন সাবেক ফুটবলার গোলাম সারোয়ার টিপু। বললেন, ‘নেপালের বিপক্ষে বাংলাদেশ ফুটবলারদের মানসিকভাবে পিছিয়ে থাকার আশঙ্কা আছে। হারলেই বাদ পরে যাওয়ার ভাবনাও ক্ষতি করতে পারে।’
তবে মানিক নেপাল ম্যাচ নিয়ে আশাবাদী। এ ম্যাচকে সেমিফাইনাল ভেবে এগোলে জয় পাওয়া কঠিন কিছু নয় বলে মনে করেন তিনি।