নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
পিঠ ঠেকে গেছে দেয়ালে। সাফের ফাইনালে খেলতে হলে নেপালের বিপক্ষে জয় ছাড়া বিকল্প নেই বাংলাদেশের। জয় পেতে হলে লাগবে গোল। সেই গোল পেতে নেপালের বিপক্ষে ‘অলিখিত সেমিফাইনালে’ শুরু থেকে আক্রমণের চিন্তা বাংলাদেশ কোচ অস্কার ব্রুজোনের।
নিজেদের প্রথম দুই ম্যাচেই জয় পাওয়া নেপাল আছে সুবিধাজনক স্থানে। ৬ পয়েন্ট পাওয়া দল আজ বাংলাদেশের সঙ্গে ১ পয়েন্ট পেলেই চলে যাবে ফাইনালে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয় আর ভারতের সঙ্গে ড্র করে ৪ পয়েন্ট পাওয়া বাংলাদেশকে ২০০৫ সালের পর ফাইনাল খেলতে হলে জিততেই হবে নেপালিদের বিপক্ষে। গতকাল সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ কোচ ব্রুজোন বললেন, ‘আমরা শুরু থেকেই আক্রমণ করব। ম্যাচের শুরু থেকেই জেতার চেষ্টা করব। দ্বিতীয়ত, আমাদের লক্ষ্য থাকবে রক্ষণ অক্ষত রাখা। আমরা ফাইনাল খেলতে চাই। গত ২০ দিন এই দিনটা সামনে রেখেই কঠোর পরিশ্রম করেছি সবাই।’
খেলোয়াড়দের চাপমুক্ত থাকতে হবে
২০০৩ সাফজয়ী বাংলাদেশ দলটার অন্যতম সেরা তারকা ছিলেন তিনি। সেমিফাইনালে ভারত ও ফাইনালে মালদ্বীপের বিপক্ষে গোল করে বাংলাদেশকে এখন পর্যন্ত একমাত্র সাফ শিরোপা এনে দেওয়ার অন্যতম কারিগর রোকনুজ্জামান কাঞ্চন। নেপালের বিপক্ষে জামালদের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে এই সাফজয়ী ফুটবল তারকা কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। আজকের পত্রিকাকে কাঞ্চন বলেন, ‘আমাদের খেলোয়াড়দের চাপমুক্ত থাকতে হবে। আমাদের সময়ের চেয়ে এখনকার ফুটবলাররা বেশি পরিশ্রম করে খেলে। খেলোয়াড়েরা ঠিকভাবে অনুপ্রাণিত হলে অবশ্যই তাদের সফল হওয়া সম্ভব।’
রোকনুজ্জামান কাঞ্চন, সাবেক ফুটবলার
নেপালকে কীভাবে হারাতে হয় সেই কৌশলও অজানা নয় ব্রুজোনের। বললেন, ‘নেপাল তাদের শক্তিমত্তার কথা পুরো টুর্নামেন্টেই জানান দিয়েছে। আমরা প্রস্তুত। নেপাল আমাদের চেয়ে বেশি ভালো খেলেনি কিন্তু তাদের কৌশল কার্যকরী। আমরা জানি আমাদের জয় ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু নেপাল আক্রমণ করতে গেলে দুবার ভাববে। আক্রমণ করবে নাকি রক্ষণাত্মক খেলবে, প্রতি–আক্রমণে যাবে নাকি সময় নষ্ট করবে—এসব ভাবতেও তাদের সময় লাগবে।’
নেপালের বিপক্ষে আজ জয় পেলে বাংলাদেশের ফুটবলে নতুন এক ‘শুরুর’ সম্ভাবনা দেখছেন ব্রুজোন। বললেন, ‘ছেলেরা এখন পর্যন্ত যা করেছে, সেটা অসাধারণ। কালকের (আজ) ম্যাচটা দিয়ে মাঠেই প্রমাণ করা সম্ভব যে বাংলাদেশের ফুটবলে দিনদিন উন্নতি হচ্ছে, আরও হবে। এই ম্যাচ দিয়েই ফুটবলে আমাদের উজ্জ্বল এক ভবিষ্যতের আশা বড় হবে।’
২০১৮ থেকে সর্বশেষ পাঁচ খেলায় নেপালের বিপক্ষে শুধু এক ম্যাচেই জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। এই পাঁচ ম্যাচেই কোচ ছিলেন দুই মাসের অব্যাহতি পাওয়া কোচ জেমি ডে। আপাতত সাফের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন কোচ ব্রুজোনের অধীনে বাংলাদেশ চমকে দিতে পারে বলে মনে করেন নেপালের সহকারী কোচ কিরণ শ্রেষ্ঠা। তিনি বলেছেন, ‘আমরা আগে যে দলটার বিপক্ষে খেলেছি সেটার চেয়ে এই দলটা আলাদা। তাদের কোচ নতুন। নতুন কয়েকজন আছে। তাদের সক্ষমতা আছে যে কাউকে চমকে দেওয়ার।’
আজ বিকেলে বাংলাদেশ শুধু চমকে দেওয়া ফুটবল খেলতে চায় না, গড়তে চায় ইতিহাসও।