ক্রীড়া ডেস্ক
দলটার নাম যখন রিয়াল মাদ্রিদ, তাই রেফারির শেষ বাঁশি না বাজা পর্যন্ত বলার সুযোগ নেই আজ লস ব্ল্যাঙ্কোসরা শেষ। এমনকি রিয়াল যদি কখনো ম্যাচে পিছিয়েও থাকে, তবু এমন সাহস দেখানোর কোনো সুযোগ নেই। এমনটা বলার দুঃসাহস ক্লাবটির অতীত ইতিহাস।
রিয়ালের ডিএনএতে প্রত্যাবর্তনের মন্ত্র রয়েছে। তা না হলে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে রূপকথার মতো ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প বারবার লিখতে পারত না তারা, যার সবশেষটি গতকাল রচিত হয়েছে। বায়ার্ন মিউনিখের মুখ থেকে জয় নিয়ে আরেকটি স্মরণীয় মুহূর্তের সৃষ্টি করেছে স্পেনের আভিজাত্য ক্লাবটি। তাদের এই ঘুরে দাঁড়ানোর অতীত ইতিহাস বাধ্য করেছে বিখ্যাত ধারাভাষ্যকার পিটার ডুরিকে এমনটি বলতে, ‘রিয়াল অলৌকিক এক ক্লাব। এখানে (বার্নাব্যু) অনেক কিছুই ঘটতে পারে।’
সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে গতকাল বায়ার্নও তারই সাক্ষী হয়েছে। রিয়ালের মাঠ থেকে জয় ছিনিয়ে নিতে নির্ধারিত সময়ের আর মাত্র দুই মিনিট বাকি ছিল। এই মুহূর্তটুকু নিজেদের দুর্গ সামলাতে পারলেই বিজয়ের হাসি হাসতে পারত বাভারিয়ানরা। কিন্তু তাদের আনন্দ-উল্লাসে মাততে দিল না রিয়াল। প্রতিপক্ষের মুখ থেকে হাসি ছিনিয়ে নিল তারা। ঠিক যেমন ২০২২ সালের চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে এগিয়ে থাকা ম্যানচেস্টার সিটিকে মাটিতে নামিয়েছিল মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বে অন্যতম সফল দলটি।
ম্যাচের ৯০ থেকে ৯৫—এই পাঁচ মিনিটের ব্যবধানে ৩ গোল দিয়ে ৩-১ ব্যবধানের জয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করে রিয়াল। গতকালও পিছিয়ে থাকা রিয়াল শেষ ৩ মিনিটের ব্যবধানে জোড়া গোল করে বায়ার্নের স্বপ্ন ভঙ্গ করে দিয়েছে। লস ব্ল্যাঙ্কোসদের হয়ে এই কাজটা করেছেন ধারে খেলতে আসা হোসেলু। ৮৮ ও ম্যাচের যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে গোল করে রিয়ালের নায়ক এখন তিনি।
বদলি নেমে নায়ক হওয়ার পথে অবশ্য বায়ার্নের গোলরক্ষক ম্যানুয়েল নয়্যারের সহায়তায় পেয়েছেন হোসেলু। নয়্যারের শিশুতোষ ভুলেই রিয়ালকে সমতায় ফেরান হোসেলু। অথচ ম্যাচে কী দুর্দান্তই না ছিলেন ৩৮ বছর বয়সী গোলরক্ষক! ভিনিসিয়ুস ও রদ্রিগোর নিশ্চিত ২টি গোল অবিশ্বাস্যভাবে সেভ করেছিলেন তিনি। নিজের এই ভুলের জন্য পরে ক্ষমা চেয়েছেন জার্মান গোলরক্ষক।
রিয়াল হারের আগে যে হারে না, সেটা আরেকবার শিষ্যরা প্রমাণ করেছেন বলে জানিয়েছেন কার্লো আনচেলত্তি। ম্যাচ শেষে বলেছেন, ‘এটা (প্রত্যাবর্তন) আবার ঘটেছে। এটি অবর্ণনীয়। দুর্দান্ত আবহে এটি আবারও ঘটেছে। খেলোয়াড়েরা নিজেকে বিশ্বাস করা বন্ধ করেনি।’
আগামী ১ জুন লন্ডনের ওয়েম্বলির ফাইনালে রিয়ালের প্রতিপক্ষ আরেক জার্মান ক্লাব বরুসিয়া ডর্টমুন্ড। সেদিন জিততে পারলে রেকর্ডটা ১৫ বারে বাড়িয়ে নেবে রিয়াল।