নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ফুটবলার নিলামে তোলা হয়েছে আজ। রাজধানীর পাঁচ তারকা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ১০ ফুটবলারকে তোলা হয় নিলামে। ক্যাটাগরি ‘এ’ ও ক্যাটাগরি ‘বি’তে ১০ ফুটবলারই বিক্রি হয়েছেন আজ।
‘এ’ ক্যাটাগরির খেলোয়াড়দের ভিত্তিমূল্য ছিল ৫ লাখ টাকা। ‘বি’ ক্যাটাগরির ফুটবলারদের দাম শুরু হয় ৪ লাখ থেকে। নিলামের শুরুটা হয়েছিল মাঝমাঠের খেলোয়াড় চন্দন রায়কে দিয়ে। তাঁকে নিয়ে শুরুতে বেশ কাড়াকাড়িও হলো দলগুলোর ভেতর। চন্দনের ভিত্তিমূল্য ছিল ৫ লাখ টাকা। দলগুলোর আগ্রহে ক্রমেই দাম চড়তে থাকে ১৭ বছর বয়সী মিডফিল্ডারকে ঘিরে। শেষটায় জয় হয়েছে শেখ রাসেলের। ৯ লাখ টাকায় চন্দনকে দলে টানে শেখ রাসেল।
নিলামে দ্বিতীয় ফুটবলার ছিলেন ডিফেন্ডার রুবেল শেখ। ৪ লাখ টাকা ভিত্তিমূল্যের এই খেলোয়াড়কে শুরুতে কোনো আগ্রহই দেখায়নি ক্লাবগুলো। দ্বিতীয় দফায় তাঁকে ৪ লাখেই কিনেছে ব্রাদার্স ইউনিয়ন।
আসাদুল মোল্লা আক্রমণভাগের ফুটবলার। ৫ লাখ টাকার ভিত্তিমূল্যের এই ফুটবলারকে নিয়েও আগ্রহ দেখা গেল। শেষটায় তাঁকে ৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকায় পেয়েছে আবাহনী লিমিটেড।
বয়সভিত্তিক ফুটবলে জাতীয় দলের অধিনায়ক ইমরান খান। ৪ লাখ টাকা ভিত্তি মূল্যেই তাঁকে পেয়েছে ব্রাদার্স ইউনিয়ন।
নিলামে উত্তেজনা ছড়িয়েছে লেফটব্যাক আজিজুল হক অনন্তকে ঘিরে। ৫ লাখ টাকার ভিত্তিমূল্যে তাঁকে কিনে নেয় ব্রাদার্স ইউনিয়ন। কিন্তু এই দর নিয়ে তুমুল আপত্তি ওঠে মোহামেডান থেকে। ক্লাবটির দাবি ছিল, নিলামের শেষ মুহূর্তে আজিজুলকে পাওয়ার জন্য দর হাঁকিয়ে ছিল তাঁরা। মোহামেডানের দাবিতে ভিডিও রিপ্লে করেও পাওয়া যায়নি তাদের দর হাঁকানোর দৃশ্য। আজিজুলকে বিক্রি করা হয় ব্রাদার্সে। সেখান থেকে নিলাম বয়কটের হুমকি দেয় মোহামেডানের সমর্থক গোষ্ঠী। তাদের দাবিতে নিলাম বন্ধ থাকে ১০ মিনিটের মতো। তাদের আপত্তিতে আজিজুলের নিলাম স্থগিত করা হয় শেষ সময় পর্যন্ত।
আজিজুলের নিলাম স্থগিত হলে বসুন্ধরা কিংস আর আবাহনীর মধ্যে লড়াই জমিয়ে তোলেন গোলরক্ষক মো. আসিফ। লিগ চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দুই দলের লড়াইটাও ছিল দেখার মতো।
শুরুতে ব্রাদার্স আগ্রহ দেখালেও ধীরে ধীরে আসিফের দাম বাড়িয়ে তোলে বসুন্ধরা ও আবাহনী। লিগ শিরোপার জন্য দুই দলের লড়াইয়ের মতো এবারও বিজয়ী বসুন্ধরা। ১৩ লাখ ২৫ হাজার টাকায় আসিফকে আবাহনী থেকে কেড়ে নেয় বসুন্ধরা।
আজিজুলের নিলাম ঝুলে ছিল একদম শেষ পর্যন্ত। তাঁকে নিয়ে নিলামে যেন রীতিমতো যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে ব্রাদার্স-মোহামেডান। ৫ লাখ টাকায় বিক্রি হওয়া আজিজুলের দাম বাড়তে থাকে হু-হু করে। শেষে আজিজুলের দাম আরও ৫ লাখ বাড়িয়ে ১০ লাখ টাকায় কিনে নেয় ব্রাদার্স। নিলামে সবচেয়ে বেশি ৬ ফুটবলার কিনেছে দুই মৌসুম বিপিএলে অবনমিত থাকা দলটি। আর নিলামে কোনো খেলোয়াড়ই কেনেনি মোহামেডান।