টাইব্রেক শট নিতে নিতে এক পর্যায়ে চলে এলো দুই গোলরক্ষকের পালা। দুই গোলরক্ষক একে অপরের দিকে শটও নিলেন। কিন্তু পারলেন না কেউ কারও শট ঠেকাতে। নির্ধারিত ১১ ফুটবলারের পালা শেষ হওয়ার পর আবারও নতুন করে গোলমুখে শট নিতে বাধ্য হলেন আবাহনী-শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের ফুটবলারেরা। দুই দল মিলে ১৫টি করে মোট ৩০ শট নেওয়ার পর অবশেষে হলো ম্যাচের নিষ্পত্তি! ঘরোয়া ফুটবলে সাম্প্রতিক সময়ে এমন ম্যাচ দেখা যায়নি অনেক দিন।
ফেডারেশন কাপের ‘বি’ গ্রুপের শেষ ম্যাচে আজ কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয়েছিল আবাহনী-শেখ রাসেল। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে কারা খেলবে কোয়ার্টার ফাইনালে, সেই নিষ্পত্তি হওয়ার কথা ছিল এই ম্যাচ দিয়েই। নির্ধারিত সময়ে ২-২ গোলে সমতায় থাকার পর ম্যাচ গড়াল টাইব্রেকে। তাতে ১৩-১২ ব্যবধানে জিতে ‘বি’ গ্রুপের সেরা হয়েছে শেখ রাসেল। কোয়ার্টার ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ হবে ‘ডি’ গ্রুপের রানার্সআপ দল। আবাহনী খেলবে ‘ডি’ গ্রুপের সেরা দলের বিপক্ষে।
আবাহনীর হয়ে টাইব্রেকে বল জড়াতে পারেননি অধিনায়ক নাবীব নেওয়াজ জীবন, সোহেল রানা ও ইমন বাবু। শেখ রাসেলের হয়ে বল জালে জড়াতে পারেননি অধিনায়ক ইসমাইয়েল রুটি তাবারেজ ও সাদ উদ্দিন।
কমলাপুরের টার্ফ নিয়ে আপত্তি থাকায় উত্তর বারিধারা সরে দাঁড়ানোর পর আবাহনী-শেখ রাসেল দুই দলকেই প্রথম ম্যাচে ৩-০ গোলে জয়ী ঘোষণা করেছিল বাফুফে। কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত হয়েছে দুই দলেরই। কে হবে গ্রুপ সেরা সেই নিষ্পত্তি হওয়ার কথা ছিল এই ম্যাচ দিয়েই। আক্রমণ, পাল্টা আক্রমণের খেলায় দারুণ এক ম্যাচ উপহার দিয়েছে দুই দলই।
ম্যাচের চতুর্থ মিনিটে কর্নার বিপদমুক্ত করতে গিয়ে হেডে নিজেদের জালেই বল জড়াতে বসেছিলেন শেখ রাসেলের আইজার আখমেতোভ, অনেকটা লাফিয়ে গ্লাভসের টোকায় বল ক্রসবারের উপর দিয়ে বের করে দেন আশরাফুল ইসলাম রানা।
চার মিনিট পরেই এগিয়ে যায় এই টুর্নামেন্টের রেকর্ড ১১ বারের চ্যাম্পিয়ন আবাহনী। ৮ মিনিটের এ গোলে অবশ্য শেখ রাসেলের মানিক হোসেন মোল্লার দায় আছে; তিনি ঠিকঠাক বল নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেননি, ছুটে গিয়ে বল নিয়ে বক্সে ঢুকে এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে কোনাকুনি শটে লক্ষ্যভেদ করেন ডারিলটন গোমেজ।
গোল হজমের ১২ মিনিটের মধ্যে সমতায় ফেরে শেখ রাসেল। বামপ্রান্ত থেকে আলটন মাচাদোর ক্রসে জাল বরাবর শট নেন পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড ইসমায়েল রুটি তাবারেজ। আবাহনী গোলরক্ষক প্রীতম সেই শট ফিরিয়ে দিলেও ফিরতি বলে ভলি করে গোল করেন মান্নাফ রাব্বী।
দুই ব্রাজিলিয়ানের বোঝাপড়ায় ৬১ তম মিনিটে আবারও এগিয়ে যায় আবাহনী। রাফায়েল অগুস্তোর ক্রসে গোলমুখে থাকা ডারিলটন হেডে লক্ষ্যভেদ করেন। সেই গোলে যখন জয় নিয়ে পরের রাউন্ডে যাওয়ার পথে আবাহনী তখনই আবার সমতায় শেখ রাসেল। ৮৪ তম মিনিটে হেমন্ত ভিনসেন্ট বিশ্বাসের হেড পাসে আলটনের ভলিতে সমতায় ফিরে শেখ রাসেল। শেষ পর্যন্ত ম্যাচের ভাগ্য গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানে দারুণ এক রোমাঞ্চ উপহার দিয়ে ম্যাচ জিতে নেয় শেখ রাসেল।