নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
১৬ বছর পর বাংলাদেশের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল খেলার স্বপ্ন পূরণ হয়নি উজবেক রেফারির ‘প্রশ্নবিদ্ধ’ এক সিদ্ধান্তে। গতকাল বুধবার সুমন রেজার গোলে ৯ মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার পরেও ম্যাচের ৮৬ মিনিটে নেপালের পক্ষে রেফারির পেনাল্টির সিদ্ধান্তে ভেঙেছে বাংলাদেশের ফুটবলারদের হৃদয়। ম্যাচ শেষে রেফারির দিকে তপু বর্মণ-অস্কার ব্রুজোনের তেড়ে যাওয়া সেই হতাশারাই বহিঃপ্রকাশ!
রেফারির পেনাল্টির সিদ্ধান্ত কতটা যৌক্তিক ছিল তা নিয়ে ম্যাচ-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে সরাসরি প্রশ্ন তুলেছেন বাংলাদেশ কোচ অস্কার ব্রুজোন। বাংলাদেশের ফুটবলের উন্নতি ঠেকিয়ে রাখতে ‘চক্রান্ত’ হচ্ছে বলেও দাবি করেছেন তিনি। স্প্যানিশ কোচের এমন বক্তব্য বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীদের মনের ব্যথাটা বাড়িয়েছে।
গতকালের ম্যাচে উজবেক রেফারি সিদ্ধান্ত কি আসলেই বিপক্ষে ছিল বাংলাদেশের? সত্যি কি কোনো ভুল করেননি তপু বর্মণ-সাদ উদ্দিনরা?—এমন সব প্রশ্নের উত্তরে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) হেড অব রেফারিজ আজাদ রহমান আজকের পত্রিকাকে বললেন, ‘৮৬ মিনিটে যে ক্রসটা হয়েছিল, সেটা কিন্তু বাংলাদেশের ডিফেন্ডার কিংবা নেপালি খেলোয়াড় কেউই নাগালে পেত না। বিপদ হওয়ার সুযোগ ছিল না। কিন্তু বিশ্বনাথ ও সাদ উদ্দিন দুজনের মাঝখানে অঞ্জন বিস্তা যেভাবে পড়ে গেল, রেফারি মনে করেছেন তাঁকে ধাক্কা মারা হয়েছে। সাদ অঞ্জনকে একটা ট্যাকটিকাল পুশ বা ধাক্কা মেরেছিল। অনেক দেশের ফুটবলাররা এই কাজটা করে। আইনগতভাবে এটা ফাউল। সবাই আবেগী হয়ে চিন্তা করছে, কিন্তু আইনটাকে কেউ দেখছে না। এই সিদ্ধান্তগুলোকে আমরা বলি ‘‘আনপপুলার ডিশিসন’’। ৯৯ শতাংশ মানুষ এই সিদ্ধান্ত পছন্দ করবে না, কিন্তু আইনগতভাবে রেফারির সিদ্ধান্তই হবে সঠিক।’
রেফারিং নিয়ে বিতর্ক ওঠার পর সাফের মতো টুর্নামেন্টে ‘ভিএআর’ প্রযুক্তি ব্যবহার অপরিহার্য মনে করেন বর্তমান বাংলাদেশের রেফারিদের প্রশিক্ষণের দায়িত্ব থাকা আজাদ রহমান, ‘ভিএআর সাফে আসা উচিত। এখানে রেফারিং নিয়ে যদি সন্দেহ কিংবা প্রশ্ন থাকে, তাহলে খেলুড়ে দেশগুলো কিন্তু ভিএআর প্রযুক্তি কাজে লাগাতে পারে।’
ম্যাচ শেষে রেফারির দিকে তেড়ে যাওয়ার অপরাধে বড় রকমের শাস্তি পেতে পারেন বাংলাদেশের ফুটবলাররা, এমনটাই জানালেন আজাদ রহমান। ফিফার কাছে পাঠানো রেফারির প্রতিবেদন পক্ষে না গেলে ফুটবলাররা ছয় মাস থেকে এক বছরের নিষেধাজ্ঞা পেতে পারেন বলে জানিয়েছেন তিনি।