ম্যানুয়েল উগার্তে গোল করার পরই উল্লাসে মেতে ওঠে উরুগুয়ের ডাগআউট। অ্যালেজিয়েন্ট স্টেডিয়ামে আজ বাংলাদেশ সময় সকালে পেনাল্টি শুটআউটে ৪-২ গোলের জয়ে সেমিফাইনালের টিকিট কাটল উরুগুয়ে। বিপরীত চিত্র ব্রাজিল দলে। কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে ছিটকে যাওয়ায় কাঁদছে সেলেসাওরা।
গ্রুপ পর্ব পেরিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে ব্রাজিল উঠেছে অনেকটা খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। একমাত্র প্যারাগুয়েকে হেসেখেলে ৪-১ গোলে হারাতে পারে ব্রাজিল। কোস্টারিকা, কলম্বিয়া দুই দলের বিপক্ষেই ড্র করে সব মিলিয়ে ৫ পয়েন্ট নিয়ে কোয়ার্টারে ওঠে ব্রাজিল। প্রথম পর্বে সেলেসাওরা দেয় ৫ গোল এবং হজম করেছে ২ গোল, যার মধ্যে ভিনিসিয়ুস জুনিয়র করেছেন ২ গোল। সেই ভিনিকে নকআউট পর্বে ব্রাজিল পায়নি। কারণ, গ্রুপ পর্বে তিনি দুটি হলুদ কার্ড দেখেছেন।
গোলমেশিন ভিনির পরিবর্তে ব্রাজিল কোচ দরিভাল জুনিয়র আজ শুরুর একাদশে খেলান এনদ্রিককে। কিন্তু কাজের কাজ তো কিছুই হয়নি। ৯০ মিনিটের ম্যাচ হয়েছে গোলশূন্য ড্র। ৬০ শতাংশ বল দখলে প্রতিপক্ষের লক্ষ্য বরাবর ব্রাজিল করেছে ৩ শট। টাইব্রেকারে ম্যাচ গড়ালে সেখানে ৪টি শটের মধ্যে মাত্র দুটিতে লক্ষ্যভেদ করতে পেরেছে সেলেসাওরা। মিলিতাও, ডগলাস লুইসের শট দুটি প্রতিহত করেছেন উরুগুয়ের গোলরক্ষক সার্জিও রোচেত। উরুগুয়ে যে ৫ শট নিয়েছে, সেগুলোর মধ্যে হোসে মারিয়া হিমেনেজের শটই শুধু ঠেকাতে পেরেছেন ব্রাজিল গোলরক্ষক আলিসন বেকার।
ভালো আক্রমণ রচনার চেয়ে ব্রাজিল-উরুগুয়ে যেন শরীরনির্ভর ফুটবলেই বেশি মনোযোগী ছিল। ৪১টি ফাউল সেটারই প্রমাণ। উরুগুয়ে ও ব্রাজিল করেছে ২৬ ও ১৫ ফাউল। এক লাল কার্ডের পাশাপাশি রেফারিকে দেখাতে হয়েছে চারটি হলুদ কার্ড। ব্রাজিল, উরুগুয়ে দুই দলই দেখেছে দুটি করে হলুদ কার্ড, যেখানে ৭৪ মিনিটে নাহিতান নান্দেজ লাল কার্ড দেখলে উরুগুয়ে ১০ জনের দলে পরিণত হয়। তবু তারা দমে যায়নি। টানা চার ম্যাচ জিতে উরুগুইয়ানরা কেটেছে সেমির টিকিট। উরুগুয়ের প্রশংসা করে দরিভাল বলেন, ‘আমি মনে করি, উরুগুয়ে জাতীয় দল একটা সাজানো-গোছানো পরিকল্পনায় খেলেছে। তারা দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে।’
কোপা আমেরিকার দল ঘোষণার সময়ই যেন ব্রাজিলের ভক্ত-সমর্থকদের মনটা খারাপ হয়ে যায়। কারণ চোটের সঙ্গে লড়াই করতে থাকা নেইমার ছিলেন না কোপার দলে। নেইমারবিহীন ব্রাজিল যে এবার কী করল, তা তো দেখা গেলই। এমনকি ২০২৬ বিশ্বকাপ সামনে রেখে দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বাছাইপর্বেও সুবিধাজনক অবস্থানে নেই ব্রাজিল। ৬ ম্যাচে ২ জয়, ১ ড্র ও ৩ পরাজয়ে ৭ পয়েন্ট নিয়ে সেলেসাওরা এখন আছে ৬ নম্বরে। যেখানে এই অঞ্চলের বাছাইপর্ব থেকে শীর্ষ ৬ দল সরাসরি খেলবে আগামী বিশ্বকাপে। ৭ নম্বরে থেকে যে দল শেষ করবে, তাদের ইন্টার কনফেডারেশন প্লে অফ খেলে উঠতে হবে। দরিভালের জন্য বাছাইপর্ব উতড়ানো এখন খুব চ্যালেঞ্জিং।