ক্রীড়া ডেস্ক
বয়স তো আর কম হলো না জিয়ানলুইজি বুফনের। ৪৫ বছর। কিন্তু এই বয়সেও খেলে যাচ্ছেন পেশাদার ফুটবল। অথচ তাঁর ফুটবল ক্যারিয়ারের ২৮ বছরের সমান বয়সে অনেকে বুটজোড়া তুলে রেখেছেন। কিন্তু ম্যারাথন থামানোর কোনো চিন্তাই যেন করছিলেন না ইতালির গোলরক্ষক।
চীনের মহাপ্রাচীরের মতো গোলবার আগলে রাখছিলেন বুফন। অবশেষে ম্যারাথন দৌড় থামানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কিংবদন্তি গোলরক্ষক। অবশ্য নিজে এখনো বুটজোড়া তুলে রাখার ঘোষণা দেননি। তবে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবার থামবেন তিনি। এমনটিই জানিয়েছেন সংবাদমাধ্যম দ্য অ্যাথলেটিক।
বুফনের অবসরের বিষয়ে তো টুইটও করেছেন ইতালির সংবাদকর্মী ফ্যাব্রিজিও রোমানো। তিনি লিখেছেন, ‘পেশাদার ফুটবল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ইতালির কিংবদন্তি গোলরক্ষক জিয়ানলুইজি বুফন। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসবে।’
গত বছর তো ২০২৬ বিশ্বকাপ পর্যন্ত খেলার সিদ্ধান্ত জানিয়েছিলেন বুফন। সেই হিসেবে শৈশবের ক্লাব পার্মাতে নিজের চুক্তির মেয়াদ শেষ করবেন এমনটাই শোনা গিয়েছিল। কিন্তু এবার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মেয়াদ শেষের আগেই অবসরে যাবেন। ইতালির সিরি বিতে খেলা ক্লাবের সঙ্গে আগামী বছরের জুন পর্যন্ত তাঁর বর্তমান চুক্তির মেয়াদ রয়েছে। ২০২১ সালে পার্মাতে যোগ দিয়েছিলেন প্রিয় ক্লাবকে শীর্ষ লিগে উত্তরণের লক্ষ্যে। কিন্তু দুই মৌসুম চেষ্টা করেও পারেননি তিনি। শেষ পর্যন্ত এবার নিজেই ক্ষান্ত হচ্ছেন।
গোলবারের নিচে দারুণ ক্ষিপ্রতা, চোখ ধাঁধানো সেভে নিজেকে ‘সুপারম্যান’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন বুফন। ২৮ বছরের ক্যারিয়ারে ১৭ বছর খেলেছেন জুভেন্টাসের হয়ে। ‘তুরিনের বুড়িদের’ হয়ে সুখে–দুখে দুই সময়ই পাশে ছিলেন তিনি। নয়বার সিরি আ জিতেছেন। আর ‘ক্যালসিওপলি’ কেলেঙ্কারির কারণে ২০০৬ সালে সিরি বিতে দলের অবনমন হলেও জুভকে ছাড়েননি বিশ্বকাপজয়ী গোলরক্ষক। অনেকেই সে সময় ক্লাব ছেড়েছিলেন।
দীর্ঘ সময় ইতালিতে খেলার কারণে সিরি আর সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলার রেকর্ড বুফনের দখলে। ৬৪৮ ম্যাচ খেলে শীর্ষে তিনি। মাঝে এক মৌসুম পিএসজির হয়ে খেলে জুভেন্টাসে আবার ফেরেন তিনি। জুভেন্টাসের হয়ে সব মিলিয়ে ৬৮৫ খেলে দুইয়ে তিনি। আর ৭০৫ ম্যাচে শীর্ষে ইতালি ও জুভেন্টাসের আরেক কিংবদন্তি আলেসান্দ্রো দেল পিয়েরো।
জাতীয় দলের হয়ে ১৯৯৭ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত খেলেছেন বুফন। দীর্ঘ ২১ বছরের ক্যারিয়ারে দেশের হয়ে সর্বোচ্চ ১৭৬ ম্যাচ খেলেছেন ৪৫ বছরেও চিরসবুজ গোলরক্ষক। দেশের হয়ে ২০০৬ জার্মানি বিশ্বকাপ জিতেন তিনি। ব্যক্তিগত হিসেবে অনেক পুরস্কারও জিতেছেন কিংবদন্তি গোলরক্ষক। সিরি আর বর্ষসেরা, ইউরোপের সেরা গোলরক্ষকসহ ২০০৬ বিশ্বকাপের সেরা গোলরক্ষকেরও পুরস্কার জেতেন তিনি।