ক্রীড়া ডেস্ক
পিছিয়ে পড়েও ঘুরে দাঁড়ানোর উপায় রিয়াল মাদ্রিদের চেয়ে ভালো আর কোন দল জানে? ইউরোপীয় ফুটবলের সফলতম ক্লাবটি প্রত্যাবর্তনের সর্বশেষ উদাহরণ সৃষ্টি করেছে গত রাতেই। উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালের প্রথম লেগে বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে শুরুতে এগিয়ে গিয়েও পরে আবার পিছিয়ে পড়ে প্রায় হারতেই বসেছিলেন কার্লো আনচেলত্তির শিষ্যরা।
কিন্তু ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের জোড়া গোলে বায়ার্নের মাঠ থেকে ২-২ সমতা নিয়ে ফিরেছে রিয়াল। আগামী ৯ মে নিজেদের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুয়ে বায়ার্নকে দ্বিতীয় লেগে আতিথেয়তা দেবে লস ব্লাঙ্কোসরা। প্রতিপক্ষের মাঠে প্রথম লেগ ড্র করে অন্তত ফাইনালের ওঠার পথে মানসিকভাবে কিছুটা এগিয়ে রইল ভিনি-রদ্রিগোরা।
ঘুরে দাঁড়ানোর মন্ত্র রিয়ালের ডিএনএতে। কিন্তু ম্যাচের শুরুতেই রিয়াল রক্ষণের পরীক্ষা নেয় বায়ার্নই। প্রথম মিনিটেই হ্যারি কেইনের পাস থেকে বক্সে বল পেয়ে লেরয় সানের নেওয়া শট পা দিয়ে রুখে দেন রিয়ালের গোলরক্ষক আন্দ্রি লুনিন। কয়েক মিনিট পর পরপর আরও দুটি শট নেয় স্বাগতিকেরা। বায়ার্নের আক্রমণের পসরায় প্রথম মিনিট বিশেক কঠিন পরীক্ষা দিতে হয়েছে রিয়ালের রক্ষণকে।
এরপর ভিনিসিয়ুসের অসাধারণ গোলে চমকে দিল রিয়ালই। টনি ক্রুসের থ্রু পাস থেকে দারুণ বোঝাপড়ায় বক্সে ছুটে গিয়ে প্রথম ছোঁয়ায় বায়ার্নের জালে বল পাঠান ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার ভিনিসিয়ুস। ২৪ মিনিটে ১-০ গোলে এগিয়ে যায় রিয়াল।
চ্যাম্পিয়নস লিগের ইতিহাসে ভিনিসিয়ুস চতুর্থ খেলোয়াড় হিসেবে সেমিফাইনালে টানা তিন মৌসুমে গোল করার রেকর্ড গড়লেন। তাঁর আগে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, কেভিন ডি ব্রুইনে ও ইয়ারি লিটমেনেন এই রেকর্ড গড়েছিলেন।
গোলের সঙ্গে কিছু সময় বলের নিয়ন্ত্রণ রিয়ালের মধ্যেই থাকে। যদিও সেভাবে কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারেনি তারা। বিপরীতে প্রথমার্ধে গোলের উদ্দেশ্যে ৭টি শট নিয়ে একটিও কাজে লাগাতে পারেনি বায়ার্ন। অবশ্য বিরতি থেকে ফিরেই ৫৩ মিনিটে দুর্দান্ত এক গোলে ব্যাভারিয়ানদের সমতায় ফেরান সানে। বাঁ পাশ থেকে এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বক্স থেকে জোরালো শটে রিয়ারের জালে বল জড়ান জার্মান ফরোয়ার্ড।
ওই ধাক্কা সামলে ওঠার আগে দ্বিতীয় গোলও হজম করে রিয়াল। বক্সে জামাল মুসিয়ালাকে ফাউল করে বসেন ডিফেন্ডার লুকাস ভাসকেস। সঙ্গে সঙ্গে পেনাল্টির বাঁশি রেফারির। সফল স্পট কিকে দলকে এগিয়ে নেন কেইন। চলতি চ্যাম্পিয়নস লিগে ইংলিশ ফরোয়ার্ডের গোল হয়ে গেল কিলিয়ান এমবাপ্পের সঙ্গে যৌথভাবে সর্বোচ্চ ৮টি। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে চলতি মৌসুমে কেইনের হলো ৪৩ গোল।
আরও কয়েকটি সুযোগ পায় বায়ার্ন। লুনিনের দারুণ দক্ষতায় ব্যবধান বাড়াতে ব্যর্থ হয় বায়ার্ন। পিছিয়ে পড়ার পর আক্রমণের ধার বাড়ে রিয়ালেরও। ৭৮ মিনিটে পাল্টা আক্রমণে ভিনিসিয়ুসের শট রুখে দেন বায়ান গোলরক্ষক মানুয়েল নয়ার।
৮৩ মিনিটে সমতাসূচক গোলই পেয়ে যায় রিয়াল। বক্সে আরেক ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড রদ্রিগোকে ডিফেন্ডার কিম মিন-জায়ে ফাউল করলে পেনাল্টি পায় অতিথিরা। ৮৩ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল আদায় করেন ভিনিসিয়ুস। এবারের চ্যাম্পিয়নস লিগে এখন পর্যন্ত অপরাজিত রইল রিয়াল। এ নিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়ে ম্যাচের শেষ ১৫ মিনিটে ৭টি গোল করল তারা। হারের আগে হারে না তারা।