ক্রীড়া ডেস্ক
ঢাকা: মানুষের চোখে জল শুধু দুঃখের সময় কি আসে? আবেগময় মুহূর্তেও চোখে জল আসে। যাকে মানুষ বলে আনন্দাশ্রু! কাল লুইস সুয়ারেজ এমনই আনন্দাশ্রুতে ভেসেছেন। তাঁর সঙ্গে আনন্দে ভেসেছে পুরো আতলেতিকো মাদ্রিদ।
হোসে জোরিলা স্টেডিয়ামে ভায়াদোলিদের বিপক্ষে ২-১ গোলে জয়ে লা-লিগার ১১তম শিরোপা ঘরে তুলেছে আতলেতিকো। জয়সূচক গোল করা সুয়ারেজ ম্যাচ শেষে ফোনে পরিবারের সঙ্গে কথা বলার সময় আর আবেগ লুকোতে পারেননি। ফোনের ওপ্রান্তে কে ছিলেন—নিশ্চিত নয়। তবে পরিবারের কেউ যে ছিলেন, সেটি অনেকটাই নিশ্চিত। হতে পারে তাঁর স্ত্রী কিংবা সন্তান—সাফল্যের এই ক্ষণে কাছের মানুষদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে চোখ ছলছল সুয়ারেজের। সুয়ারেজের সঙ্গে যেন কাঁদলেন আতলেতিকোর সমর্থকেরাও।
গত বছর সুয়ারেজকে যেভাবে বার্সেলোনা ছেড়ে দিয়েছিল—বিষয়টা খুব একটা সুখকর ছিল না উরুগুইয়ান তারকার। সুয়ারেজ তখন কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন। সে কান্নার জবাব দেওয়ার সময় অবশেষ এসেছে। বার্সা তো বটেই, সবাইকে সুয়ারেজে দেখিয়ে দিলেন, কীভাবে জবাবটা দিতে হয়! কাল ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে অকপটেই আতলেতিকো তারকা বলেছেন, ‘বয়সের অজুহাতে গত বছর আমাকে বিদায় দিয়েছিল। আমাকে দিয়ে হবে না, আমি পারব না। আতলেতিকোর প্রতি আমি চিরকৃতজ্ঞ, দুঃসময়ে আতলেতিকোই আমাকে নিয়েছিল।’
জিতলেই লা-লিগার শিরোপা আতলেতিকোর—এই সমীকরণ নিয়ে মাঠে নামলেও শুরুটা ভালো হয়নি দিয়েগো সিমিওনের শিষ্যদের। ১৮ মিনিটে অস্কার প্লানোর গোলে এগিয়ে যায় স্বাগতিকেরা। এরপর আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে দুই দলই। ৩২ মিনিটে সুয়ারেজ ক্রস করলেও প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
প্রথমার্ধে ১-০ গোলে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয়ার্ধে গোল পেতে মরিয়া হয়ে ওঠে আতলেতিকো। ৫৭ মিনিটে প্রতিপক্ষ রক্ষণভাগকে বোকা বানিয়ে আতলেতিকোকে সমতায় ফেরান ফরোয়ার্ড আনহেল কোরেয়া। ৬১ মিনিটে ভায়াদোলিদ এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেলেও দিয়েগো সিমিওনের শিষ্যরা তা হতে দেয়নি। ৬ মিনিট পর সুয়ারেজের গোলে এগিয়ে যায় আতলেতিকো। সমতায় ফিরতে স্বাগতিকেরা প্রাণপণ চেষ্টা করলেও তা আর সম্ভব হয়নি। রেফারির শেষ বাঁশি বাজার পরই সাত বছর পর শিরোপা জয়ের আনন্দে মেতে ওঠে আতলেতিকো।
সুয়ারেজের সাফল্যে খুশি হওয়ার কথা বন্ধু লিওনেল মেসিরও। যদিও মেসি এবারের লা লিগায় সর্বোচ্চ ৩০ গোল করেছেন। কিন্তু সেটি বার্সাকে লিগ শিরোপা এনে দিতে পারেনি। সুয়ারেজের ২১ গোল সেখানে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে আতলেতিকোকে শিরোপা এনে দিতে। কাতালানরা নিশ্চিত কপাল চাপড়াচ্ছে এই ভেবে, ‘ইশ! সুয়ারেজকে কেন ছেড়ে দিয়েছিলাম!’