ক্রীড়া ডেস্ক
বেতিনহো নামে যতটা না তিনি পরিচিত, সেটার চেয়ে তাঁকে অনেকে চেনেন নেইমারের গুরু হিসেবে। এই বেতিনহোর কারণেই তো আজ নেইমার হয়ে উঠেছেন তারকা ফুটবলার। যাঁর হাত ধরে এত নাম ডাক কুড়িয়েছেন, সেই নেইমার স্বাভাবিকভাবেই তাঁর (বেতিনহো) মৃত্যুতে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছেন।
৫৮ বছর বয়সে বেতিনহো গতকাল পাড়ি জমিয়েছেন না ফেরার দেশে। তাঁর মৃত্যুর কারণ এখনো জানা যায়নি। শৈশবের কোচের মৃত্যুতে স্বাভাবিকভাবে ভেঙে পড়েছেন নেইমার। গুরুর সঙ্গে পুরোনো এক ছবি নিজের ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডলে নেইমার পোস্ট করেছেন। ৩২ বছর বয়সী ব্রাজিলের ফরোয়ার্ড লেখেন, ‘আপনি আমাকে ফুটবলে এনেছেন। মাঠে আনতে আমার মা-বাবাকে রাজি করিয়েছেন আপনি। আমি সব সময়ই এটার জন্য কৃতজ্ঞ থাকব। আমাকে ওপর থেকে দেখবেন। শান্তিতে ঘুমান প্রফেসর বেতিনহো।’
নেইমারের যখন ৬ বছর বয়স, তখনই তিনি নজর কাড়েন বেতিনহোর। ছোট্ট নেইমার তখন তাঁর বাবা নেইমার সান্তোস সিনিয়রের খেলা দেখতে গিয়েছিলেন। বল ছাড়া নেইমার যখন বেঞ্চে ভালোমতো দৌড়াদৌড়ি করছিলেন, সেটা দেখে তাঁকে ফুটসালে ভর্তি করিয়ে দিয়েছিলেন বেতিনহো। শিষ্যের পুরোনো দিনের ছবি বেতিনহো তাঁর জীবদ্দশায় প্রকাশ করেছিলেন। কারিগর বেতিনহোর সঙ্গে পুরোনো স্মৃতি নেইমার মনে রেখেছেন এখনো। গুরুকে নিয়ে নেইমার আবেগপ্রবণ পোস্ট দেওয়ার সময় ইনস্টাগ্রামে লেখেন,‘আপনি আমাকে বেঞ্চে দৌড়াদৌড়ি করতে দেখেছেন। বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন স্টেডিয়ামে দৌড়ানোর সুযোগ আমি পেয়েছি।’
বেতিনহো নামে পরিচিত হলেও তাঁর পুরো নাম গিলবার্তো কার্লোস নাসিমেন্তো। সান্তোসে দীর্ঘসময় কাজ করা বেতিনহো ২০০৪ সালে আবিষ্কার করেন তরুণ এক নেইমারকে। তখন তাঁকে (নেইমার) ভিয়া বেলমিরোতে নিয়ে আসেন ব্রাজিলের ক্লাবের তরুণ। ২০০৯ সালে সান্তোসের মূল দলে অভিষেক হয়ে যায় নেইমারের। সান্তোস, বার্সেলোনা, প্যারিস সেন্ট জার্মেইতে (পিএসজি) তিনি খেলেছেন ২২৫, ১৮৬ ও ১৭৩ ম্যাচ। তবে গত বছর আল হিলালে যোগ দেওয়ার পর চোট যে তাঁর পিছু ছাড়ছেই না। সৌদি ক্লাবের হয়ে এখন পর্যন্ত খেলেছেন ৭ ম্যাচ।
কিংবদন্তি পেলেকে ছাড়িয়ে ব্রাজিলের সর্বোচ্চ গোলদাতা নেইমার। আন্তর্জাতিক ফুটবলে ৭৯ ও ৭৭ গোল করেন নেইমার ও পেলে। তবে নেইমারের গুরু বেতিনহো আন্তর্জাতিক ফুটবলে খেলেছেন কেবল ১ ম্যাচ। ক্লাব ফুটবলে ব্রাজিলের পালমেইরাস, ইন্টারনেসিওনালসহ ইতালির জুভেন্টাসেও খেলেছেন বেতিনহো। নেইমারের গুরুর সবচেয়ে বেশি সময় কেটেছে কোচিং ক্যারিয়ারে। কোচিংয়ে তাঁর সবশেষ ক্লাব ছিল বার্সেলোনা ডি লিয়াস।