ক্রীড়া ডেস্ক
এমন একটি দিন যে আসতে পারে, হয়তো কখনো আশাই করেননি নিউক্যাসল ইউনাইটেডের সমর্থকেরা। অবশেষে পরশু রাতে ১৪টি কঠিন মৌসুম পার করার পর নতুন এক দিগন্তের দেখা পেলেন ‘দ্য ম্যাগপাই’ সমর্থকেরা। মাইক অ্যাশলেকে সরিয়ে নতুন মালিক পেয়েছে ইংলিশ ক্লাবটি।
এ কোনো সাধারণ মালিক নন। মালিকানার দিক থেকে এখন সবচেয়ে ধনী ক্লাব। যাদের সম্পত্তির পরিমাণ ৩২০ বিলিয়ন পাউন্ড (৩৭ লাখ ৩৪ হাজার কোটি টাকা)। সৌদি মালিকানাধীন কনসোর্টিয়াম পাবলিক ইনভেস্ট ফান্ড (পিআইএফ) নিউক্যাসল ক্লাব কিনে নিয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানটির প্রধান আবার সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান।
তবে পিআইএফ ছাড়াও মালিকানায় যুক্ত আছে আরও দুটি প্রতিষ্ঠান—পিসিবি ক্যাপিটাল পার্টনার্স এবং দুই বিলিয়নিয়ার ভাই ডেভিড রুবেন ও সিমন রুবেনের প্রতিষ্ঠান। তবে ধারণা করা হচ্ছে, এককভাবে মালিকানার ৮০ শতাংশই হচ্ছে পিআইএফের।
সৌদি মালিক দায়িত্ব নেওয়ায় ক্লাবকে রাজতন্ত্রের উদ্দেশে ব্যবহারের আশঙ্কা থাকলেও এই বিনিয়োগ যে ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলে নতুন রোমাঞ্চ ও উত্তেজনা নিয়ে আসবে, তা অনেকটাই নিশ্চিত।
নিউক্যাসল কিনতে সৌদি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানটি খরচ করেছে ৩০০ মিলিয়ন পাউন্ড। ২০০৭ সালে ক্লাব কিনতে ব্রিটিশ ধনকুবের অ্যাশলের খরচ পড়েছিল ১৩৪ মিলিয়ন পাউন্ড। ক্লাবের জন্য অ্যাশলে যে ঋণ করেছেন, সেটিও এখন তিনি শোধ করতে পারবেন। নিউক্যাসল নতুন মালিকানায় যাওয়ার পর সমর্থকদের মাঝে নতুন এক আশার সঞ্চার হয়েছে। মালিকানা পরিবর্তন হওয়ার আনন্দে ভক্তরা ক্লাবের সামনে জড়ো হয়ে উল্লাসও করেছেন।
লম্বা সময় ধরে সাফল্য-খরায় ভুগছে নিউক্যাসল। বর্তমানে প্রিমিয়ার লিগের অবনমন অঞ্চলে আছে ক্লাবটি। এ পরিস্থিতিতে ক্লাবকে নতুন করে ঢেলে সাজানোর প্রয়োজনীয়তা দেখছেন অনেকে। সাফল্য পেতে দলকেও ঢেলে সাজানো হতে পারে। ক্লাব সমর্থকদের অনেকেই বর্তমান কোচ স্টিভ ব্রুসকে পছন্দ করেন না। তিনি নিজেও দায়িত্ব চালিয়ে যেতে পারবেন কি না—সংশয়ে আছেন। দৈনিক টেলিগ্রাফকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ব্রুস বলেছেন, ‘আমি দায়িত্ব চালিয়ে যেতে চাই। নতুন মালিকেরা আমাকে দক্ষতা দেখানোর একটি সুযোগ দিতে পারেন। তবে বাস্তবতা হচ্ছে, তাঁরা হয়তো সবকিছু নতুন শুরু করতে নতুন কোচ নিয়োগ দিতে চাইবেন।’
মালিকপক্ষ অবশ্য জানিয়েছে, তারা রাতারাতি সব বদলে দেওয়ার কথা ভাবছে না। দায়িত্ব নেওয়ার পর আপাতত দেখেশুনে পদক্ষেপ নিতে চাইছে পিআইএফ। যদিও সমর্থকেরা এখন জাদুকরি কিছুর প্রতীক্ষাতেই আছেন। মধ্যপ্রাচ্যের ধনকুবেররা এর আগে দায়িত্ব নিয়ে ম্যানচেস্টার সিটি ও পিএসজির অবস্থা বদলে দিয়েছিলেন। তেমন কিছুই এখন পিআইএফের কাছ থেকে আশা করছেন ক্লাবটির ভক্তরা।
জাস্টিন কাওয়ান নামের এক ভক্ত উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে বলেন, ‘শহরের জন্য এটা দারুণ একটি ব্যাপার। এখানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো বিষয় জড়িত আছে। কিন্তু আমরা সবাই জানি, এটার প্রয়োজন ছিল।’