ঢাকা থেকে ঘানার দূরত্ব ৯ হাজার ৭৯১ কিলোমিটার। এত দূর পাড়ি দিয়ে প্রথমবার বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে খেলতে এসে চমক দেখালেন স্যামুয়েল বোয়াটেং। প্রথম মৌসুমের ষষ্ঠ ম্যাচে একাই করেছেন ৬ গোল। এমন দৃশ্য দেশের শীর্ষ লিগে দেখা মিলল ১৭ বছর পর। এর আগে ২০০৭ সালের ১৩ এপ্রিল পেশাদার ফুটবল লিগের প্রথম আসরে মোহামেডানের নোয়ান পল ডাবল হ্যাটট্রিক করেছিলেন রহমতগঞ্জের বিপক্ষে। গতকাল রহমতগঞ্জের বোয়াটেং গোল-বন্যায় ভাসালেন ঢাকা ওয়ান্ডারার্সকে। আর ম্যাচ ৬-১ ব্যবধানে জিতেছে পুরান ঢাকার ক্লাবটি।
ঘানার ফুটবল এখনো বেশ মানসম্মত। বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের তুলনা চলে না; যারা এ মুহূর্তে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ৭৭তম। যদিও নিজ দেশে ভালো কিছু করতে পারেননি বোয়াটেং। গত তিন মৌসুমে ঘানায় তাঁর গোল মাত্র ১৩টি; অথচ বাংলাদেশে এক ম্যাচেই করলেন ৬ গোল। যার সুবাদে চলমান মৌসুমে লিগে সবচেয়ে বেশি গোলের খাতায় নাম লিখিয়েছেন তিনি। এই সেন্টার ফরোয়ার্ডের গোল এখন ১০টি। এমন ছন্দ আর এক ম্যাচে ৬ গোল করতে পেরে খুব খুশি বোয়াটেং। গতকাল ম্যাচের পর মোবাইল ফোনে আজকের পত্রিকাকে বলেছেন লিগে সেরা হওয়ার কথা, ‘আমি খুবই আনন্দিত। একসঙ্গে এত গোল করব ভাবিনি। তবে সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পেরে খুশি। চেষ্টা থাকবে লিগের সেরা গোলদাতা হওয়ার।’
মুন্সিগঞ্জে এদিন প্রতিপক্ষ ওয়ান্ডারার্স যেন নীরব দর্শক। চেয়ে চেয়ে বোয়াটেংয়ের গোল দেখে সময় পার করেছে তারা। ২৩, ৩৭, ৪৪, ৬৩, ৬৬ ও ৭০ মিনিটে গোল ৬টি করেন বোয়াটেং। প্রথমবার বাংলাদেশে এসে রহমতগঞ্জে নাম লিখিয়ে অল্প দিনে দারুণ অভিজ্ঞতা হলো তাঁর। এখন মৌসুমের বাকি সব ম্যাচেও রাখতে চান অবদান, ‘এটা আমার প্রথম মৌসুম। অল্প দিনে রহমতগঞ্জের সঙ্গে চমৎকার কিছু অভিজ্ঞতা হয়েছে। চুক্তি পর্যন্ত এ ক্লাবের সঙ্গেই থাকতে চাই। নিয়মিত দলকে সহযোগিতা করতে চাই এবং জয়ে অবদান রাখতে চাই।’
শুরু থেকেই ছন্দে রহমতগঞ্জ। ছয় রাউন্ড পর ১৫ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবিলের দুইয়ে তারা। স্বাভাবিকভাবে বোয়াটেংয়ের চোখও শিরোপায়। রহমতগঞ্জ কি বাংলাদেশের ‘লেস্টার সিটি’ হতে পারবে—এমন প্রশ্নে বোয়াটেংয়ের উত্তর, ‘চ্যাম্পিয়ন হওয়া আমাদের জন্য সহজ হবে না। তবে এভাবে খেলতে পারলে কঠিন কিছু নয়। হ্যাঁ, রহমতগঞ্জ যদি বাংলার লেস্টার সিটি হয়, দারুণ ব্যাপার হবে (হাসি)।’