নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনে শেষবার এলেন জিয়াউর রহমান। তবে এবার নির্জীব-নিথর দেহে লাশবাহী গাড়িতে। গতকাল দাবা খেলতে খেলতে হঠাৎ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়া। আজ পল্টনের জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ অনুষ্ঠিত হয় তাঁর জানাজা।
গতকাল দাবা বোর্ডে জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ খেলার সময় হঠাৎ চেয়ার থেকে ঢলে পড়ে যান জিয়া। হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁর মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করেন। তাঁর জানাজায় অংশ নিয়েছেন স্বজন ও ক্রীড়া ব্যক্তিত্বরা। কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে জিয়ার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে দাবা ফেডারেশন, বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন (বিওএ), তায়কোয়ান্দো ফেডারেশন, বিএসজেএসহ নানা বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান।
জানাজা শেষে জিয়ার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় মোহাম্মদপুরে তাজমহল রোডে। সেখানে তাঁর বাবা পয়গম আহমেদের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয় জিয়াকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক পাশ করা জিয়া ২০০২ সালে বাংলাদেশের দ্বিতীয় গ্র্যান্ডমাস্টার হন। ক্যারিয়ারে তাঁর সর্বোচ্চ রেটিং ছিল ২৫৭০। যেটা পেয়েছিলেন ২০০৫ সালে—যা এখন বাংলাদেশের কোনো দাবাড়ুর সর্বোচ্চ রেটিং।
জিয়ার মৃত্যুতে বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহাবুদ্দিন শামীম, বললেন, ‘অনেকেই টুর্নামেন্টের পুরস্কার ও নানা সুযোগ-সুবিধা কম হলে খেলতে চাইতেন না। জিয়া কখনোই এ রকম ছিলেন না। সব টুর্নামেন্টেই তিনি অংশগ্রহণ করতেন। যেন অন্যরা তার মাধ্যমে শিখতে পারে। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ভবনেই আলাদা একটি ফ্লোর পাওয়ার কথা ছিল আমাদের। সেখানে গ্র্যান্ডমাস্টার কর্নারের পরিকল্পনা ছিল। সেটা যত দিন না হয় আমরা বর্তমান দাবা ফেডারেশন ক্রীড়া কক্ষকেই জিয়ার নামকরণ করার উদ্যোগ নেব।’
জিয়ার পরিবারের পাশে থাকার উদ্যোগ নিয়েছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। দাবা ফেডারেশনের সহ-সভাপতি তরফদার রুহুল আমিন বলেছেন, ‘গতকাল মাননীয় মন্ত্রী (নাজমুল হাসান পাপন) এবং আজ আমাদের ক্রীড়াঙ্গনের আরেকজন অভিভাবক শাহেদ ভাই (বিওএ মহাসচিব) জিয়ার পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। একটা বড় আর্থিক অঙ্ক স্থায়ী আমানত (ফিক্সড ডিপোজিট) করে, পরিবারের পাশে থাকতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ দাবা ফেডারেশন ও আমরা ব্যক্তিগতভাবে নেব।’