টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া, ১ হাজার ৪ কিলোমিটার দৌড়ে পাড়ি দেওয়া দেশের একমাত্র দৌড়বিদ মুহাম্মদ সামছুজ্জামান আরাফাত নিজের অর্জনের খাতায় আরেকটি পালক যুক্ত করলেন। গত ১৮ সেপ্টেম্বর আমেরিকার সেইন্ট জর্জ ইউটা শহরে অনুষ্ঠিত আয়রনম্যান ৭০ দশমিক ৩ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের পতাকা ওড়ালেন এই ট্রাইএথলেট। এ ইভেন্টে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশের হয়ে এককভাবে প্রতিনিধিত্ব করেন আরাফাত। প্রতিযোগিতায় নিজের বয়স ক্যাটাগরিতে আরাফাত ২৮৮ জন প্রতিযোগীর মধ্যে ১৫৩ তম স্থান অর্জন করেছেন। তাঁর মোট সময় লেগেছে ৫ ঘণ্টা ১৫ মিনিট ৪৩ সেকেন্ড। এ সময় তাঁর এবারের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশ কম। এবারের প্রতিযোগিতায় মোট প্রতিযোগী ছিলেন ৮০টি দেশের ৩ হাজার ৫৫৫ জন।
সুস্থ বাংলাদেশের স্বপ্ন নিয়ে মুহাম্মদ সামসুজ্জামান আরাফাত ব্যক্তিজীবনে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া দৌড়ে একটি অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে। তাঁর এ আয়রনম্যান অভিযানের লক্ষ্যে তিনি প্রায় ৭ বছর কঠিন অনুশীলন করে চলেছেন। ইতিমধ্যে আরাফাত ২০১৭ সালে মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিত আয়রনম্যান মালয়েশিয়া’ ১৭, আয়রনম্যান ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ’ ১৯, আয়রনম্যান মালয়েশিয়া’ ১৯ এবং আয়রনম্যান ৭০.৩ বাংসায়েন, থাইল্যান্ড ইভেন্টগুলোতে ব্যক্তিগত সেরা টাইমিং নিয়ে সফলভাবে অংশগ্রহণ করেছেন। এ ছাড়াও আরাফাত ৭ বার সাঁতরে বাংলা চ্যানেল অতিক্রম করেন, দেশ বিদেশে বিভিন্ন ম্যারাথনে অংশ নিয়েছেন।
আয়রনম্যান ৭০ দশমিক ৩ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে মূলত সারা বছরব্যাপী আয়োজিত আয়রনম্যান ইভেন্টগুলোতে অংশগ্রহণকারী অ্যাথলেটদের পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে চূড়ান্ত প্রতিযোগী নির্বাচিত হন। আরাফাতের লক্ষ্য ছিল ৫ দশমিক ৩০ ঘণ্টার মধ্যে এই কঠিন চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করা। সেটি তিনি অর্জন করতে পেরেছেন। এ অর্জনে আরাফাত দারুণ উৎফুল্ল। দূর প্রবাসে আরাফাতকে উৎসাহ জোগাতে হাজির হয়েছিলেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। প্রায় একক প্রচেষ্টায় এই অসামান্য স্বপ্নযাত্রায় নিরন্তর ছুটছেন আরাফাত, যা নবীন অ্যাথলেটদের জন্য অন্য দৃষ্টান্ত। আরাফাতের এই অভিযানে মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ (এমজিআই), আকাশ ডিটিএইচ, হোন্ডা বাংলাদেশ-ডিএইচএস মটরস এবং বাংলাদেশ ফাইন্যান্স লিমিটেড আর্থিকভাবে সহযোগিতা করে।