ক্রীড়া ডেস্ক
অচিন্ত্য শব্দের অর্থ চিন্তার অতীত। বার্মিংহাম কমনওয়েলথ গেমসে অচিন্ত্য শিউলি যেন নিজের নামের সঙ্গে কাজেরও মিল রেখেছেন। একসময় দরজির কাজ করা এই ভারতীয় ভারোত্তোলক ৭৩ কেজি বিভাগে রেকর্ড গড়ে দেশকে সোনা এনে দিয়েছেন। হাওড়ার অচিন্ত্যের এই সাফল্য ছুঁয়ে গেছে সবার হৃদয়। তাঁকে নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন শচীন টেন্ডুলকারও।
দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করে বেড়ে উঠেছেন অচিন্ত্য। তাঁর বাবা পেশায় ছিলেন একজন ভ্যানচালক। তিনিও ৯ বছর আগে পৃথিবীর মায়া ছেড়েছেন। এরপর অথই সাগরে পড়ে অচিন্ত্যের পরিবার। তবু তাঁকে খেলা চালিয়ে যেতে সাহস জুগিয়েছেন ভাই অলোক শিউলি। ভাইয়ের জন্য নিজের খেলা ছেড়ে দিয়েছিলেন অলোক।
অচিন্ত্যকে শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর জীবনযুদ্ধের এসব কথাও জানিয়েছেন শচীন। ভারতীয় ক্রিকেটের সর্বকালের সেরা এই ক্রিকেটার লিখেছেন, ‘হাওড়ায় দরজির কাজ করা থেকে আজ বার্মিংহামে দেশের পতাকা উড়িয়ে গর্বিত করা। সত্যি দারুণ এক লড়াইয়ের জীবন। জীবনের এই গল্প প্রত্যেককে অনুপ্রাণিত করবে। সোনা জেতায় অচিন্ত্যকে শুভেচ্ছা। একই সঙ্গে এই প্রতিভার পাশে যারা রয়েছে সেই ভারতীয় আর্মিকেও কুর্নিশ।’
অচিন্ত্য স্ন্যাচের প্রথম চেষ্টায় ১৩৭ কেজি ভার তোলেন। দ্বিতীয় চেষ্টায় ১৪০ কেজি ভার তুলে কমনওয়েলথ গেমস রেকর্ড গড়েন। তৃতীয়বারের চেষ্টায় ১৪৩ কেজি ভার তুলে রেকর্ড আরও বাড়িয়ে নেন অচিন্ত্য। স্ন্যাচে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মালয়েশিয়ার এরি হিদায়াত মোহম্মদের থেকে ৫ কেজির ব্যবধান তৈরি করেন অচিন্ত্য। হিদায়াত স্ন্যাচে ১৩৮ কেজি ভার তোলেন। আর ১৩৫ কেজি ভার তুলেছেন কানাডার শাদ ডারসিগনি।
এরপর ক্লিন অ্যান্ড জার্কের প্রথম চেষ্টায় অতিন্ত্য ১৬৬ কেজি ভার তোলেন। দ্বিতীয় চেষ্টায় ১৭০ কেজি ভার তোলার চেষ্টা করে অবশ্য ব্যর্থ হন। অচিন্ত্য পরে তৃতীয় চেষ্টায় ১৭০ কেজি ভার তুলতে সক্ষম হন। স্ন্যাচ ও ক্লিন অ্যান্ড জার্ক মিলিয়ে ৩১৩ কেজি ভার তুলে বাজিমাত করেন এই ভারতীয় ভারোত্তোলক, যা সব মিলিয়ে কমনওয়েলথ গেমস রেকর্ড। এই ইভেন্টে অচিন্ত্যর থেকে ১০ কেজি পিছিয়ে থেকে রুপা জেতেন হিদায়াত মোহম্মদ (৩০৩ কোজি)। ২৯৮ কেজি ভার তুলে ব্রোঞ্জ জেতেন ডারসিগনি।