এই মুহূর্তে আরব আমিরাতের সবচেয়ে আকর্ষণীয় পর্যটনকেন্দ্র বোধ হয় ‘এক্সপো ২০২০, দুবাই’। পুরো বিশ্বটা এক বিন্দুতে গেঁথেছে এই এক্সপো বা বৈশ্বিক মেলা। একজন দর্শনার্থী কোনো ভোগান্তি ছাড়া যত সহজে এক্সপোতে ঘুরে আসতে পারেন—সব ব্যবস্থাই করেছে আমিরাত সরকার। সেই মেলায় একবার ঢুঁ না মারলে কেমন হয়!
গত পরশু দুপুরে এক্সপোতে ঢুকতেই দুই দর্শনার্থীকে দেখে একটু থমকে দাঁড়াতে হলো। চেনা চেনা লাগে! কাছে যেতেই পরিষ্কার হওয়া গেল—লিটন দাস ও তাঁর স্ত্রী সঞ্চিতা বিশ্বাস এসেছেন দুবাইয়ের এক্সপোতে। হঠাৎ পরিচিত সাংবাদিককে দেখে বাংলাদেশ দলের ওপেনার একটু চমকেই উঠলেন! হয়তো মনে ভাবছিলেন, ‘এক্সপোতে এসেও স্বস্তি নেই!’
আফগানিস্তানের প্যাভিলিয়নে দাঁড়িয়ে কথা হলো লিটনের সঙ্গে। বিশ্বকাপের হতাশা ভুলে চেষ্টা করছেন মানসিকভাবে একটু সতেজ হতে। সতীর্থদের সঙ্গে দেশে না ফিরে কটা দিন নিজের মতো করে কাটাচ্ছেন স্ত্রীকে নিয়ে। ঘোরাঘুরির মুডে থাকা লিটন আপাতত ক্রিকেটকে দূরেই রাখতে চাইছেন। ঘুরতে বেরিয়েছেন—এ সময় বিশ্বকাপের ব্যর্থতার ব্যাখ্যা শোনার উপযুক্ত জায়গা আসলে এটা নয়, এ ভাবনায় লিটনকে ছেড়ে দ্রুত দৃষ্টি ঘোরাতে হলো এক্সপোতেই।
পোডিয়ামের ‘ব্যাকড্রপ’ দেখে প্রতিযোগিতার নাম জানা গেল, ‘গিরো দি’ ইতালিয়া ক্রাইতেরিয়াম’। পরশু দুবাইয়ে এই প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছেন তিনবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন পিটার সাগান। সাইক্লিংয়ের এই সুপারস্টার ৩০ ল্যাপের ২.১ কিলোমিটারের সার্কিটে শেষ মুহূর্তে পেছনে ফেলেছেন কলম্বিয়ার তারকা সাইক্লিস্ট এগান বার্নালকে, যিনি ২০১৯ ট্যুর ডি ফ্রান্স বিজয়ী।
প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান শেষে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বললেন সাগান। ৩১ বছর বয়সী স্লোভাক তারকা সাইক্লিস্ট বললেন, ‘এটা সত্যি বিশেষ একটা রেস ছিল। এখানে আসতে পারে; দুবাই এক্সপোতে হওয়া এ প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়াটা দারুণ ব্যাপার ছিল। কারণ, এখানে পুরো বিশ্ব মিলেছে। এই সাফল্যে খুব খুশি। আমার সতীর্থদেরও ধন্যবাদ দেব। তারা আমার জয়ের রাস্তা পরিষ্কার করেছে।’
সাইক্লিং দুনিয়ার বড় বড় তারকার হাতছোঁয়া দূরত্বে পেয়ে দর্শকদের উন্মাদনা হলো দেখার মতো। তাঁদের সামলাতে নিরাপত্তাকর্মীদের রীতিমতো গলদঘর্ম অবস্থা। এই ভিড়ে হাতের নোট বুকটা বাড়িয়ে দিতে একটা অটোগ্রাফ মিলল পিটার সাগানের। সেলফি তোলা গেল ২০১৬ রিও অলিম্পিকে সোনাজয়ী ইলিয়া ভিভিয়ানির সঙ্গে। ফেরার সময় মনে হচ্ছিল, মরুর দেশে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ কাভার করতে এসে এভাবে সাইকেলিংয়ের খবর সংগ্রহের অভিজ্ঞতা হবে, কে ভেবেছিল!