ক্রীড়া ডেস্ক
প্রেমিকের দেওয়া আগুনে পুড়ে মারা গেলেন উগান্ডার সেই অ্যাথলেট রেবেকা চেপ্টেগি। আজ খবরটি নিশ্চিত করেছেন দেশটির অলিম্পিক কমিটির প্রধান।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স পোস্টে উগান্ডার অলিম্পিক কমিটির প্রধান ডোনাল্ড রুকারে লেখেন, ‘বয়ফ্রেন্ডের হাতে হামলার শিকার অলিম্পিক অ্যাথলেট রেবেকা চেপ্টেগির মর্মান্তিক বিদায়ের খবর শুনলাম আমরা।’
আগুনে ৩৩ বছর বয়সী চেপ্টেগির শরীরের প্রায় শতাংশ পুড়ে গেছে। আজ সাংবাদিকদের এমনটাই জানিয়েছেন কেনিয়ার এলডোরেক্টের রিফ্ট ভ্যালি শহরের মই টিটিচ অ্যান্ড রেফারেল হাসপাতালের (এমটিআরএইচ) ভারপ্রাপ্ত প্রধান। গুরুতর আহত অবস্থায় এই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন ছিলেন চেপ্টেগি। হাসপাতালের এক চিকিৎসক বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘তাঁর (চেপ্টেগি) সমস্ত অঙ্গ পুড়ে গেছে।’
পুলিশ জানিয়েছে, চেপ্টেগির সঙ্গী ডিকসন এনদিয়েমা মারাঙ্গাচ নামে একজন এমন নির্মম ঘটনাটি ঘটিয়েছেন। কেনিয়ার পশ্চিমের ট্রান্স-এনজোইয়ারের এনদেবেস শহরে গত রোববার নিজ বাড়িতে চেপ্টেগির গায়ে পেট্রল দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন এনদিয়েমা মারাঙ্গাচ। গত আগস্টে শেষ হওয়া প্যারিস অলিম্পিকে অংশ নিয়ে ৪৪ নম্বরে হয়ে দৌড় শেষ করেছিলেন চেপ্টেগি। এর কয়েক সপ্তাহ পর সঙ্গীর হাতে জীবনটা হারালেন তিনি।
কেনিয়ার সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, চেপ্টেগিকে আগুন দেওয়ার ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী তাঁর মেয়ে। নির্যাতনের শিকার মাকে ছটফট করতে দেখেছে সে। কেনিয়ার সংবাদমাধ্যম দ্য স্ট্যান্ডার্ড’কে চেপ্টেগির মেয়ে বলেছে, ‘আমার মাকে উদ্ধারের চেষ্টার সময় সে (এনদিয়েমা মারাঙ্গাচ) আমাকে লাথি মেরে সরিয়ে দেয়। আমি ওই সময় সাহায্যের জন্য কান্না করেছি। প্রতিবেশীদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেছি। তারা এসে পানি দিয়ে আগুন নিভিয়েছে। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ।’ সংবাদমাধ্যম চেপ্টেগির মেয়ের নাম প্রকাশ করেনি। এনদিয়েমা মারাঙ্গাচও ঘটনাস্থলে আহত হয়েছেন। তার শরীরেরও ৩০ শতাংশ পুড়ে গেছে।
বছর দু-এক আগে কেনিয়ায় জন্ম অ্যাথলেট দামারিস মুতুয়ার মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছিল দেশটির শহর ইটেনের রিফ্ট ভ্যালিতে। এই স্থানটিতে থাকেন বিশ্বের বিখ্যাত সব অ্যাথলেট। সেখানে প্রায় এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে। ২০২১ সালে ইটেনে নিজের ঘরে ছুরিকাঘাতে মৃত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল কেনিয়ার দৌড়বিদ ২৫ বছর বয়সী আগনেস টিরপকে। এই হত্যাকাণ্ডের জন্য আঙুল উঠে তাঁর স্বামীর ওপর। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে প্রকাশিত কেনিয়ার জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরো জানিয়েছে, ১৫ বছর বয়স থেকে দেশটির ৩৪ শতাংশ নারী শারীরিক নির্যাতনের সম্মুখীন হয়েছেন।