শিশু নির্যাতন এবং সন্ত্রাসবাদী কনটেন্ট প্রতিরোধ-সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তর দিতে বিলম্ব করায় আজ সোমবার টেলিগ্রামকে ১০ লাখ অস্ট্রেলিয়ান ডলার (৬ লাখ ৪০ হাজার ডলার) জরিমানা করেছে অস্ট্রেলিয়ার অনলাইন নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান ই-সেফটি কমিশন। প্রতিষ্ঠানটি দাবি করছে, এই বিলম্বের কারণে জাতীয় অনলাইন সুরক্ষাব্যবস্থা বাস্তবায়নে বাধা সৃষ্টি হয়েছে।
২০২৪ সালের মার্চ মাসে টেলিগ্রামসহ কিছু বড় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের কাছে তাদের শিশু যৌন নির্যাতন এবং সন্ত্রাসীবাদী কনটেন্ট প্রতিরোধে নেওয়া পদক্ষেপ সম্পর্কে তথ্য চেয়েছিল ই-সেফটি কমিশন। সেই সঙ্গে ইউটিউব, এক্স (আগে টুইটার), ফেসবুক, টেলিগ্রাম এবং রেডিটের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছিল যে তারা লাইভ স্ট্রিমিং ফিচার, অ্যালগরিদম এবং রেকমেন্ডেশন বা সুপারিশ ব্যবস্থা ব্যবহার করে সন্ত্রাসবাদী কনটেন্ট ছড়ানোর সুযোগ তৈরি করছে।
গত বছরের মে মাসের মধ্যে টেলিগ্রাম এবং রেডিটের শিশু যৌন নির্যাতন-সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার কথা ছিল। তবে টেলিগ্রাম অক্টোবর মাসে তার উত্তর জমা দেয়।
এক বিবৃতিতে ই-সেফটি কমিশনার জুলি ইনম্যান গ্রান্ট বলেন, অস্ট্রেলিয়ায় সঠিক সময়ে স্বচ্ছতা প্রয়োজন। এটি কোনো স্বেচ্ছানির্ভর বিষয় নয়। এই পদক্ষেপটি সব কোম্পানির জন্য অস্ট্রেলিয়ার আইন মেনে চলার গুরুত্বকে আরও শক্তিশালী করে। তার মতে, টেলিগ্রামের এই বিলম্ব ই-সেফটি কমিশনকে তাদের অনলাইন নিরাপত্তাব্যবস্থা বাস্তবায়ন করতে বাধা দিয়েছে।
টেলিগ্রাম দাবি করেছে, তারা গত বছর সব প্রশ্নের পূর্ণাঙ্গ উত্তর দিয়েছে এবং আর কোনো তথ্য বাকি নেই। তারা আরও জানায়, অন্যায়ভাবে এবং অস্বাভাবিকভাবে এই জরিমানা শুধু উত্তর দেওয়ার সময়সীমা নিয়ে এবং তারা এর বিরুদ্ধে আপিল করতে চায়।
অস্ট্রেলিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা ডিসেম্বর মাসে জানিয়েছিল, দেশটি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে চলমান তদন্তগুলোর মধ্যে এক-পঞ্চমাংশেরও বেশি ক্ষেত্রে তরুণদের সম্পৃক্ততা রয়েছে।
টেলিগ্রামের প্রতিষ্ঠাতা পাভেল দুরভ গত আগস্টে ফ্রান্সে তার প্রতিষ্ঠানে অবৈধ কার্যকলাপের জন্য আনুষ্ঠানিক তদন্তের মুখোমুখি হয়েছিলেন। দুরভ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
ইনম্যান গ্রান্ট বলেছেন, ‘বিগ টেক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে স্বচ্ছতা এবং তাদের সেবাগুলো যাতে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য ব্যবহার না হয়, তা নিশ্চিত করা জরুরি। এটি অনলাইন সন্ত্রাসবাদী কনটেন্ট এবং অন্যান্য গুরুতর অনলাইন ক্ষতির মোকাবিলা করতে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।’
তিনি আরও বলেন, ‘যদি টেলিগ্রাম এই জরিমানা না দেয়। তবে ই-সেফটি কমিশন আদালতে একটি সিভিল জরিমানা দাবি করবে।’
তথ্যসূত্র: রয়টার্স