বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম প্রযুক্তি কোম্পানি অ্যাপল তাদের উদ্ভাবন ও নতুনত্বের জন্য বিশ্বজুড়ে পরিচিত। তবে এত বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানকেও ব্যর্থতার সম্মুখীন হতে হয়েছে। অ্যাপল একটি গোপন প্রকল্পে ১০ বছর ধরে ১০ বিলিয়ন ডলার খরচ করে। তবে গত বছর এই প্রকল্প বন্ধ করে দিতে হয়। এর ফলে সময় ও অর্থ দুটোই কোম্পানির গচ্ছা গেছে।
অটোমোবাইল শিল্পে প্রবেশের উদ্দেশ্যে ‘টাইটান’ প্রকল্পটি শুরু করেছিল অ্যাপল। প্রথম দিকে কোম্পানির লক্ষ্য ছিল ইলন মাস্কের কোম্পানি টেসলাকে প্রতিযোগিতায় টেক্কা দেওয়া। পরবর্তী প্রকল্পের লক্ষ্য পরিবর্তন করে একে একটি স্বয়ংচালিত গাড়ি তৈরির দিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তবে প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে এবং বারবার লক্ষ্য পরিবর্তনের ফলে শেষমেশ এই প্রকল্প ঝুলে পড়ে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে অ্যাপল তার ২ হাজার কর্মীকে জানিয়ে দেয় যে, প্রকল্প ‘টাইটান’ বন্ধ হয়েছে এবং কোম্পানি এখন তার সম্পদকে যেমন জেনারেটিভ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সে (এআই) ব্যবহার করবে।
বিগত ১০ বছরে অ্যাপলের খরচ করা ১০ বিলিয়ন ডলার প্রায় যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। বিভিন্ন পর্যালোচনায় বলা হয়েছে, টেসলা বা অন্য কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী সংস্থার তুলনায় এই খরচে অ্যাপল অনেকটাই পিছিয়ে পড়ে।
প্রোজেক্টটি বাতিল হওয়ার খবরে সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছুটা হাস্যরসাত্মক প্রতিক্রিয়া ও সমালোচনা দেখা গেয়েছিল। এক ব্যক্তি মন্তব্য করেছিলেন, ‘তাদের এত টাকা খরচ হওয়া সত্ত্বেও তারা এখনো আইফোনের নতুন সংস্করণে চার্জার দিচ্ছে না! আরেকজন বলেছেন, ‘তাহলে বুঝতে পারলাম, ভবিষ্যতে যখন আইফোন বাজারে আসবে, তখন গাড়ির মতোই সমস্যা হতে পারে—নতুন মডেল এলে হঠাৎ গাড়ি হ্যাং হয়ে যাবে!’
আবার আরেকজন মন্তব্য করেন, ‘যে ব্যক্তি ঝুঁকি নেয় না, সে কখনো কিছু অর্জন করতে পারে না।’
প্রকল্পটির ইতিহাসে বেশ কয়েকবার নেতৃত্ব পরিবর্তন হয়েছে। অ্যাপল কখনো সফল নেতৃত্ব খুঁজে পায়নি। ১০ বছরে প্রকল্পের জন্য চারটি ভিন্ন দলনেতা কাজ করেছেন।
প্রকল্পটির ব্যর্থতার পেছনে মূল কারণ ছিল সফটওয়্যার এবং অ্যালগরিদম তৈরি করতে না পারা। বিশেষ করে স্বয়ংচালিত গাড়ির জন্য। কারণ এটি একটি অত্যন্ত জটিল প্রযুক্তি। বেশ কয়েক বছর ধরে উন্নয়ন করতে চেষ্টা করেছে অ্যাপল।
এর আগে অ্যাপল জানিয়েছিল, নতুন প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন নিয়ে চলতে চায় কোম্পানিটি এবং এটি তাদের নতুন উদ্যোগগুলোর জন্য বাড়তি মনোযোগ দেওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করবে।