অনলাইন ডেস্ক
চীনা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ডিপসিকের সস্তা এআই কম্পিউটিং প্রযুক্তি উন্মোচনের কিছুদিন পর মার্কিন প্রযুক্তি খাতে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। কারণ কোম্পানিটি দাবি করেছে, পশ্চিমা প্রতিদ্বন্দ্বীদের চেয়ে কম খরচে একই বা ভালো ফলাফল দিতে পারবে এই প্রযুক্তি। এ পরিস্থিতিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআইতে বিশাল বিনিয়োগের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেছেন মাইক্রোসফট এবং মেটার সিইওরা। তাঁরা জানিয়েছেন, এআই খাতে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য এই বিশাল বিনিয়োগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মূলত বিনিয়োগকারীদের আশ্বাস দিতে এই যুক্তি তুলে ধরেন তাঁরা।
মাইক্রোসফট তার বর্তমান অর্থবছরে এআই খাতে ৮০ বিলিয়ন ডলার এবং ৬৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করার পরিকল্পনা করছে মেটা।
মেটার সিইও মার্ক জাকারবার্গ বলেছেন, দীর্ঘ মেয়াদে একটি কৌশলগত সুবিধা হিসেবে কাজ করবে এআই খাতে বিপুল অর্থ বিনিয়োগ এবং এর অবকাঠামো খাতে খরচ।
আর মাইক্রোসফট সিইও সত্য নাদেলা জানান, এআই প্রযুক্তির ক্ষমতা বৃদ্ধির ফলে যে চাহিদা সৃষ্টি হবে, তা পূরণ করতে বড় পরিসরে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক নির্মাণ প্রয়োজন রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, যেহেতু এআই আরও কার্যকরী এবং সহজলভ্য হয়ে উঠছে, তাই এর চাহিদা আরও বাড়বে।
অপরদিকে ডিপসিক দাবি করেছে যে, তারা তাদের এআই মডেলটি তৈরি করতে মাত্র ৬ মিলিয়ন ডলার খরচ করেছে। তবে ডিপসিকের এই দাবি সম্পর্কে মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো বলে, এই পরিমাণ অর্থ মূলত কম্পিউটিং শক্তির জন্য ব্যয় হয়েছে, সম্পূর্ণ মডেলের উন্নয়ন খরচ নয়।
তবে, এই বিপুল পরিমাণ খরচের বিপরীতে তেমন লাভ দেখতে না পেয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কিছু বিনিয়োগকারী। গত সপ্তাহে মাইক্রোসফটের শেয়ার কমেছে ৫ শতাংশ এবং কোম্পানি জানিয়েছে যে, তাদের আজুর ক্লাউড ব্যবসা বৃদ্ধির হার প্রত্যাশার চেয়ে কম হবে।
জ্যাকস ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজমেন্টের পোর্টফোলিও ম্যানেজার এবং মাইক্রোসফটের বিনিয়োগকারী ব্রায়ান মালবেরি বলেন, ‘এসব বিনিয়োগের মাধ্যমে আয় কীভাবে হয় তার একটি স্পষ্ট নির্দেশিকা দেখতে চাই।’
এদিকে, মেটা তার চতুর্থ প্রান্তিকের চমকপ্রদ ফলাফল দেখালেও বর্তমানে কোম্পানিটির বিক্রয় পূর্বাভাস অনেকটাই হতাশাজনক। ফিউচারাম গ্রুপের বিশ্লেষক ডেনিয়েল নিউম্যান বলেছেন, ‘এআই খাতে অতিরিক্ত মূলধন ব্যয় হচ্ছে, কিন্তু প্রয়োজনীয় চাহিদা এখনো দেখা যাচ্ছে না।’
তবে, কিছু সংকেত পাওয়া গেছে যে, এই খাতে আয়ের প্রবাহ নিশ্চিত করার জন্য প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের পরিকল্পনা পুনর্বিন্যাস করছে। মাইক্রোসফটের সিএফ ও এ্যামি হুড জানিয়েছেন, তাদের মূলধন ব্যয় আগামী দুই প্রান্তিকে ২২ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার বজায় থাকবে। তবে ২০২৬ অর্থবছরে এই বৃদ্ধির হার কমে যেতে পারে।
তথ্যসূত্র: রয়টার্স