অনলাইন ডেস্ক
হ্যাক হয়েছে জনপ্রিয় অনলাইন লাইব্রেরি ইন্টারনেট আর্কাইভ। গতকাল বুধবার দুপুরে এই ওয়েবসাইটে ঢুকলে একটি পপ আপ নোটিফিকেশন ঘোষণা দেওয়া হয় যে সাইটটি একটি বড় ধরনের ডেটা ব্রিচের শিকার হয়েছে। হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে ৩ মিলিয়ন বা ৩ কোটি ১০ লাখ ব্যবহারকারীর তথ্য ফাঁস করা হয়েছে। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সংস্থাটি।
দীর্ঘকালীন সিকিউরিটি গবেষক ট্রয় হান্ট বলেন, এই হ্যাকিং সেপ্টেম্বর মাসে ঘটেছিল এবং চুরি হওয়া ডেটার মধ্যে রয়েছে ৩১ মিলিয়ন অনন্য ই–মেইল অ্যাড্রেস, ব্যবহারকারীর নাম, পাসওয়ার্ড এবং অন্যান্য সিস্টেম ডেটা।
ইন্টারনেট আর্কাইভে পপ আপ বার্তায় বলা হয়, সাইটটির নিরাপত্তাব্যবস্থা দুর্বল এবং ৩১ মিলিয়ন ব্যবহারকারীরা তথ্য হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। চুরি করা ডেটা এইচআইবিপি সাইটে ফাঁস করা হয়েছে।
ডিস্ট্রিবিউটেড ডিনায়াল অব সার্ভিস (ডিডিওএস) আক্রমণেরও শিকার হয়েছে ইন্টারনেট আর্কাইভ। ফলে মাঝেমাধ্যেই ইন্টারনেট আর্কাইভে প্রবেশ করা যায় না।
উল্লেখ্য, ডিডিওএস একধরনের সাইবার হামলা। কোনো সার্ভার বন্ধে বা কার্যক্রম বিঘ্ন করতে হ্যাকাররা নানা পদ্ধতি অবলম্বন করে অস্বাভাবিকভাবে ট্রাফিক বাড়ায়।
গতকাল সন্ধ্যায় সামাজিক নেটওয়ার্ক এক্সে (সাবেক টুইটার) ইন্টারনেট আর্কাইভের প্রতিষ্ঠাতা ব্রুস্টার বলেন, ‘ডিডিওএস হামলা এখনকার মতো ঠেকানো হয়েছে। আমাদের ওয়েবসাইটে জাভাস্ক্রিপ্ট লাইব্রেরি ব্যবহার করে ব্যবহারকারীদের নাম, ই–মেইল, ও সল্টেড-এনক্রিপটেড পাসওয়ার্ডের তথ্য ফাঁস করা হয়েছে। আমরা একে নিষ্ক্রিয় করেছি। সিস্টেম স্ক্রাবিং চলছে এবং সিকিউরিটি আপগ্রেড করা হচ্ছে। আমরা আরও তথ্য জানালে শেয়ার করব।’
স্ক্রাবিং হলো এমন এক সিস্টেম, যা ডিডিওএস আক্রমণ প্রতিরোধ করে। এটি ক্ষতিকর ট্রাফিক ফিল্টার করে।
ইন্টারনেট আর্কাইভ আগেও একাধিক হ্যাকারের হামলার মুখোমুখি হয়েছে। যেমন গত মে মাসে হামলা করা হয়েছে।
হ্যাকিং গ্রুপ ‘ব্ল্যাকমেটা’ ডিডিওএস হামলার দায় স্বীকার করেছে। তবে তথ্য ফাঁসের সঙ্গে কারা জড়িত তা এখনো জানা যায়নি।
ইন্টারনেট আর্কাইভ সাম্প্রতিক মাসগুলোতে একাধিক সমস্যার মুখোমুখি হয়েছে। বারবার ডিডিওএস হামলার পাশাপাশি এটি বর্তমানে আইনগত চ্যালেঞ্জেরও সম্মুখীন।
গত সেপ্টেম্বরে হ্যাশেটের করা মামলায় আপিল হারিয়েছে ইন্টারনেট আর্কাইভ। প্ল্যাটফর্মটির বই ডিজিটালাইজেশন প্রকল্প ও বই ধার দেওয়ার প্রক্রিয়াকে কপিরাইট আইনের লঙ্ঘন উল্লেখ করে তাদের আপিল নাকচ করে আদালত।
ইন্টারনেট আর্কাইভ আরও বেশ কিছু আইনি জটিলতার সম্মুখীন হচ্ছে। ২০২৩ সালে ইউনিভার্সাল মিউজিক গ্রুপ ও সোনির মতো কিছু মিউজিক লেবেল একটি কপিরাইট লঙ্ঘনের মামলা করে। এই মামলার রায় ইন্টারনেট আর্কাইভের বিরুদ্ধে গেলে প্ল্যাটফর্মটিকে ৬২১ মিলিয়ন ডলারের বেশি ক্ষতিপূরণ দিতে হতে পারে।
তথ্যসূত্র: ওয়্যারড