স্মার্টফোনের মাধ্যমে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিগত বা অফিশিয়াল কাজ করে থাকেন অনেকে। কিন্তু কখনো কখনো ধীর গতির ইন্টারনেটের কারণে স্মার্টফোনে সুবিধামতো ইন্টারনেট ব্রাউজিং কিংবা ভিডিও স্ট্রিমিং করা সম্ভব হয় না। ইন্টারনেট প্যাকেজ, ওয়াই-ফাই সংযোগে সমস্যাসহ বিভিন্ন কারণে স্মার্টফোনে ইন্টারনেটের গতি কমে যেতে পারে।
ইন্টারনেটের গতি পরীক্ষা করবেন যেভাবে
ইন্টারনেটের গতি পরীক্ষা করার জন্য স্পিডটেস্ট বা ফাস্ট ডট কমের মতো ওয়েবসাইটগুলো ব্যবহার করা যায়। এগুলো ইন্টারনেট গতি ও ল্যাটেন্সি বা বিলম্ব—দুটোই পরীক্ষা করতে পারে।
প্রতি সেকেন্ডে কী পরিমাণ ডেটা ডাউনলোড করা যাবে, তা ডাউনলোডের গতির মাধ্যমে বোঝা যাবে। এটি স্ট্রিমিং কিংবা বড় কোনো ফাইল ডাউনলোড করার ক্ষেত্রে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
সার্ভার থেকে একটি ডেটা প্যাকেজের নির্দিষ্ট ডিভাইসে যাতায়াতের জন্য যে পরিমাণ সময় লাগে, তা হচ্ছে এর ল্যাটেন্সি। এটি যত বেশি হবে, কোনো ওয়েবসাইট লোড হতে তত বেশি সময় নেবে। গেমিংয়ের ক্ষেত্রে ল্যাটেন্সি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
মোবাইল ফোন রিস্টার্ট দিন
মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে করতে সফটওয়্যারগুলো ডিভাইসের গতি কমিয়ে ফেলতে পারে। বিশেষ করে মোবাইল ফোন সব সময় চালু থাকলে। ফলে এটি রিস্টার্ট দিলে বা বন্ধ করে পুনরায় চালু করলে সফটওয়্যারগুলো রিফ্রেশ হবে। মোবাইল ফোন চালু হওয়ার কিছুক্ষণ পর ইন্টারনেট চালু করতে হবে।
সফটওয়্যার আপডেট দিন
মোবাইল ফোনের সফটওয়্যার দীর্ঘদিন আপডেট না দিলেও ইন্টারনেটের গতি ধীর হয়ে যেতে পারে। পুরোনো সফটওয়্যারের বিভিন্ন ত্রুটি আপডেটের মাধ্যমে ঠিক করা হয়। এসব ত্রুটির কারণে ইন্টারনেটের গতি ধীর হয়ে যায়। তাই সফটওয়্যার বা অ্যাপ আপডেটের দিকে সব সময় নজর রাখুন এবং সেগুলো দ্রুত ইনস্টল করুন।
ব্যাকগ্রাউন্ডের অ্যাপগুলো বন্ধ করে দিন
অ্যাপ্লিকেশনগুলো ব্যাকগ্রাউন্ডে চলতে থাকলে আপনার অজান্তেই অনেক ডেটা ব্যয় করতে পারে। এটি ইন্টারনেটের গতি কমাতে পারে। যেসব অ্যাপ বর্তমানে অব্যবহৃত আছে, সেগুলো বন্ধ করে দিতে হবে। এতে তুলনামূলক কম ডেটা ব্যয় হবে এবং ইন্টারনেটের গতি বেড়ে যাবে।
ভিন্ন নেটওয়ার্কের সঙ্গে স্মার্টফোনটি যুক্ত করুন
স্মার্টফোনে ইন্টারনেটের গতি ধীর হলে একটি ভিন্ন নেটওয়ার্কের সঙ্গে সেটি যুক্ত করে দেখুন। এতে বোঝা যাবে আপনার স্মার্টফোনে কিংবা ওয়াই-ফাই বা ডেটা প্যাকেজে কোনো সমস্যা আছে কি না।
রাউটার পরিবর্তন করুন
রাউটারের মানের ওপরও ইন্টারনেটের গতি নির্ভর করতে পারে। তাই প্রয়োজনে সেটি পরিবর্তন করতে হবে। সস্তা মানের রাউটার ইন্টারনেটের গতি ধীর করে দিতে পারে। এ ছাড়া রাউটারের রেঞ্জ বা পরিসর দেখেও সেটি কিনতে হয়। বেশি বড় ঘরের জন্য ছোট পরিসরের রাউটার কিনলে ঘরের সব জায়গায় ইন্টারনেটের নেটওয়ার্ক পৌঁছায় না। এ ছাড়া রাউটার সব সময় বাড়ির মাঝামাঝি কোনো জায়গায় রাখতে হয়। তাহলে সব ঘরেই ইন্টারনেট সংযোগ পাওয়া যাবে। তবে দামি রাউটারই কিনতে হবে, বিষয়টি এমন নয়। শুধু একটি দ্রুত প্রসেসরযুক্ত এবং কমপক্ষে ২৫৬ মেগাবাইট র্যামের রাউটার কিনতে হবে।
অ্যাড ব্লকার ব্যবহার করুন
ওয়েবসাইটে ব্রাউজ করার সময় প্রায়ই পপ-আপ বিজ্ঞাপন দেখা যায়। এগুলোও ডেটা ব্যবহার করে। ফলে ইন্টারনেটের গতি ধীর হয়ে যেতে পারে। তবে স্মার্টফোনে অ্যাড ব্লকার ইনস্টল করলে এসব বিজ্ঞাপন দেখা যাবে না। এতে ব্রাউজার দ্রুত ওয়েবসাইট লোড করতে পারবে। গুগল প্লে স্টোর বা অ্যাপল স্টোরে বিভিন্ন ধরনের অ্যাড ব্লকার অ্যাপ পাওয়া যায়। এগুলোর মধ্য থেকে ভালো রেটিং দেখে একটি অ্যাড ব্লকার ডাউনলোড করে ব্যবহার করুন।
তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া, মেক ইউজ অব