আগামী পাঁচ বছরে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তিতে ১০ বিলিয়ন বা ১ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে চীনা স্মার্টফোন নির্মাতা অনার। এই বিনিয়োগের মাধ্যমে এআই চালিত উন্নত পিসি, ট্যাবলেট এবং ওয়্যারেবল (পরিধানযোগ্য) ডিভাইস তৈরি করতে চায় কোম্পানিটি। গত রোববার বার্সেলোনায় অনুষ্ঠিত মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস (এমডব্লিউসি) ট্রেড শোতে ‘আলফা’ বিনিয়োগ পরিকল্পনার ঘোষণা দেন অনারের সিইও জেমস লি।
এই বিনিয়োগ পরিকল্পনার মাধ্যমে স্মার্টফোন বাদেও এআই প্রযুক্তিভিত্তিক নতুন ধরনের পণ্য তৈরি করবে অনার। কোম্পানিটি বলে, ডিভাইসগুলোতে উন্নত এআই ব্যবহারের মাধ্যমে স্মার্টফোনের চেয়েও নতুন এবং উদ্ভাবনী প্রযুক্তির সুবিধা পাবেন ব্যবহারকারীরা।
গত ডিসেম্বরে শেয়ারহোল্ডার কাঠামোতে পরিবর্তন এনেছে অনার। এই সিদ্ধান্ত কোম্পানিকে আইপিও (প্রাথমিক গণপ্রস্তাব) এর আরও কাছাকাছি নিয়ে এসেছে। তবে এখনো কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা প্রকাশ করা হয়নি।
উল্লেখ্য, প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) হচ্ছে–শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির জন্য কোম্পানি কর্তৃক প্রাতিষ্ঠানিক ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের নিকট শেয়ার বিক্রির একটি গণপ্রস্তাব বা আহ্বান।
চীনে গত কয়েক মাসে এআই প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষত স্টার্টআপ ডিপসিকের সাশ্রয়ী মূল্যমানের লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেলগুলোর প্রতি আকর্ষণ বাড়ায়। স্থানীয় সরকার থেকে শুরু করে হোম অ্যাপ্লায়েন্স নির্মাতারা সবাই এই প্রযুক্তি ব্যবহার করতে চায় বা একে নিয়ে আরও বেশি গবেষণা পরিচালনায় আগ্রহী।
গত সপ্তাহে অনার জানায়, নিজেদের ইয়োইয়ো ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট এবং স্মার্টফোন ও ল্যাপটপের সার্চ ইঞ্জিনে চীনা এআই স্টার্টআপ ডিপসিকের আরেক মডেল একীভূত করেছে কোম্পানিটি।
এ ছাড়া স্মার্টফোনে এআই প্রযুক্তি যুক্ত করা জন্য চীনের বড় প্রযুক্তি কোম্পানি আলিবাবা গ্রুপ, টেনসেন্ট হোল্ডিংস এবং বাইটড্যান্সের সঙ্গে একত্রে কাজ করছে অনার।
অপরদিকে গুগলের সঙ্গে অংশীদারত্ব করেছে অনার, যাতে নিজেদের ডিভাইসে জেমিনির এআই মডেলগুলো অন্তর্ভুক্ত করতে পারে।
গত বছর চীনের ফোন বাজারে শীর্ষ স্থান হারিয়ে দ্বিতীয় থেকে চতুর্থ স্থানে নেমে আসে অনার। এর ফলে তাদের বাজার অংশীদারত্ব ১৪ দশমিক ৯ শতাংশে নেমে আসে। কোম্পানিটি এবার প্রতিদ্বন্দ্বী হুয়াওয়ে এবং ভিভো এর কাছ থেকে আরও কঠিন প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হচ্ছে।
রয়টার্সের গত আগস্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, অনার শেনঝেন স্থানীয় সরকারের কাছ থেকে গবেষণা ও উন্নয়ন, কর ছাড় এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রসারণের জন্য উচ্চমাত্রার সহায়তা পাচ্ছে।