গোটা বিশ্বে ডানপন্থা ক্রমে শক্তিশালী হচ্ছে, তাও অনেক দিন হলো। এ জন্য টুইটার, ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্ল্যাটফর্মগুলোর দিকে রয়েছে অভিযোগের তির। এবার এই অভিযোগের পক্ষে যুক্তিও পাওয়া গেল।
টুইটার পরিচালিত সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, বামঘেঁষা রাজনৈতিক ভাষ্যের বদলে ডানপন্থী রাজনৈতিক ভাষ্যকে বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে দেয় টুইটার। টুইটার বলছে, রাজনৈতিক বিভিন্ন আধেয় (কনটেন্ট) ব্যবহারকারীদের কাছে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে তাদের অ্যালগরিদম আসলে কীভাবে কাজ করে, তা জানতেই গবেষণাটি চালায় তারা। আর এই গবেষণাতেই উঠে এসেছে এ তথ্য। তবে ঠিক কী কারণে এমন ঘটছে, তা তারা এখনো শনাক্ত করতে পারেনি। টুইটার সরাসরি বলছে, ‘এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া ভীষণ কঠিন।’
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, রক্ষণশীলতাবিরোধী অবস্থানের কারণে টুইটার বিভিন্ন সময় সমালোচিত হয়েছে। কিন্তু তাদের পরিচালিত গবেষণা ঠিক বিপরীত কথা বলছে এখন।
টুইটার পরিচালিত গবেষণায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের টুইট এবং বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম থেকে ব্যবহারকারীদের শেয়ার করা কনটেন্ট বিশ্লেষণ করা হয়। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, স্পেন, জাপান, জার্মানি, ফ্রান্স ও কানাডার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের টুইটারে শেয়ার হওয়া কনটেন্টকে এ গবেষণায় বিবেচনায় নেওয়া হয়। গত বছরের ১ এপ্রিল থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত সময়ের মধ্যে হওয়া কোটি কোটি টুইট বিশ্লেষণ করা পাওয়া তথ্য নিয়ে নিজেদের অ্যালগরিদমের প্রবণতাটি শনাক্ত করার চেষ্টা করা হয়। দেখা হয়, তাদের অ্যালগরিদম আসলে কোনো কনটেন্টগুলো বেশিসংখ্যক ব্যবহারকারীর কাছে পৌঁছে দিচ্ছে। এতে দেখা যায়, মূলধারার ডানপন্থী রাজনৈতিক দল ও মতের টুইটগুলো বেশিসংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছাচ্ছে।
এ বিষয়ে টুইটারের মেশিন লার্নিং, নৈতিকতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি (মেটা) সম্পর্কিত বিভাগের পরিচালক রুম্মান চৌধুরী বিবিসিকে বলেন, ‘এখন আমাদের কাজ হলো, এই ঘটনার কারণ অনুসন্ধান। দেখা গেছে, এই সাত দেশের ছয়টিতেই ডানপন্থী রাজনীতিকদের বিজয়ের খবর তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী পক্ষের তুলনায় অনেক বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে গেছে। এখন এর কারণ খুঁজে বের করতে হবে। তবে এটি সহজ নয়। এর একটি উত্তর হতে পারে, ডান ও বামপন্থী রাজনৈতিক দল নিজেদের মত ও বার্তা মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে। তবে এর মাধ্যমে মূলধারার গণমাধ্যমের তুলনায় বেশি হারে চরমপন্থা ছড়ানো হচ্ছে—এমন কিছু বলার সুযোগ নেই।’