হোম > প্রযুক্তি > সোশ্যাল মিডিয়া

যেভাবে পৃথিবীর সবচেয়ে বিতর্কিত অ্যাপে পরিণত হলো টিকটক

অনলাইন ডেস্ক

ছবি: সংগৃহীত

মাত্র সাত বছরে যুক্তরাষ্ট্রে ১৭ কোটির বেশি ব্যবহারকারী পেয়েছিল টিকটক। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এই প্ল্যাটফর্মকে নিষিদ্ধ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মুছে ফেলা হয়েছে মার্কিন ব্যবহারকারীদের অ্যাপল এবং গুগলের অ্যাপ স্টোর থেকেও।

শনিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) গভীর রাত থেকে যুক্তরাষ্ট্রে কাজ করা বন্ধ করে দেয় টিকটক। এর আগে মার্কিন সুপ্রিম কোর্টের এক রায়ে এই অ্যাপ নিষিদ্ধ করতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি সোমবার অফিসে যোগ দেওয়ার পর নিষেধাজ্ঞা থেকে টিকটককে ৯০ দিনের একটি সাময়িক ছাড় দেওয়ার কথা বিবেচনা করবেন।

টিকটক ট্রাম্পের এই প্রতিশ্রুতিকে উদ্ধৃত করে ব্যবহারকারীদের জন্য একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক নিষিদ্ধ করার আইন কার্যকর হয়েছে। দুঃখজনকভাবে এর অর্থ, আপনি এখন টিকটক ব্যবহার করতে পারবেন না। তবে আমরা সৌভাগ্যবান যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আমাদের সঙ্গে একটি সমাধানে কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। দয়া করে আমাদের সঙ্গে থাকুন।’

রোববার যুক্তরাজ্যভিত্তিক দ্য ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রই প্রথম এবং প্রধান বাজার নয়, যেখানে টিকটক বন্ধ হয়েছে। এর আগে ২০২০ সালে এই অ্যাপের ওপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল ভারত। এতে প্রায় ২০ কোটি ব্যবহারকারী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। ভারতের সরকার অ্যাপটির গোপনীয়তার সমস্যাগুলো এবং এটির মালিক প্রতিষ্ঠান বাইটডান্সের সঙ্গে চীনা সরকারের সম্পর্ককে দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে দেখেছিল।

এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ আরও কিছু দেশ ও অঞ্চল এই অ্যাপের ওপর আংশিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা সরকারি কর্মকর্তা এবং সামরিক কর্মীদের ডিভাইসে অ্যাপটি ইনস্টল করা থেকে বিরত রাখে।

দেখা গেছে, টিকটকের বিষয়ে জাতীয় নিরাপত্তার উদ্বেগ থাকার পরও মার্কিন বাজারে টিকটকের বৃদ্ধিকে থামানো সম্ভব হয়নি। ২০২৩ সালে টিকটক অ্যাপটি যুক্তরাষ্ট্রে ৫ কোটি ২০ লাখ বার ডাউনলোড হয়েছে এবং বিশ্বব্যাপী ডাউনলোড হয়েছে ৭৩ কোটি ৩০ লাখ বার।

বিশ্বজুড়ে টিকটকের ব্যবহারকারীর সংখ্যা বর্তমানে ২০০ কোটির বেশি। তবে ভারতের নিষেধাজ্ঞা সাময়িকভাবে এর বৃদ্ধি কিছুটা কমিয়ে দিয়েছিল।

মার্কিন তদন্ত সংস্থা এফবিআই দাবি করেছে, টিকটকের মূল প্রতিষ্ঠান বাইটডান্সের সঙ্গে চীনা সরকারের সম্পর্ক অ্যাপটির মাধ্যমে ক্ষতিকর প্রোপাগান্ডা ছড়ানোর সুযোগ তৈরি করতে পারে।

তবে এ ধরনের নিরাপত্তা আশঙ্কার অজুহাত দেখিয়ে সেন্সরশিপের প্রশ্নও উঠেছে। ডিজিটাল অধিকার রক্ষা সংস্থা ইলেকট্রনিক ফ্রন্টিয়ার ফাউন্ডেশন মার্কিন নিষেধাজ্ঞাকে ‘গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা উদ্বেগের সঙ্গে সেন্সরশিপের মোটা স্তর দিয়ে মোড়ানো’ বলে অভিহিত করেছে।

টিকটক দাবি করেছে, এই নিষেধাজ্ঞা যুক্তরাষ্ট্রে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং যোগাযোগের একটি জনপ্রিয় মাধ্যমকে থামিয়ে দেবে।

২০২৩ সালে কংগ্রেসে পাস হওয়া এবং শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টে অনুমোদিত একটি আইনের আওতায় টিকটককে চীনভিত্তিক মূল প্রতিষ্ঠান থেকে বিচ্ছিন্ন হতে বলা হয়েছিল। তা না হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রে আইনিভাবে নিষিদ্ধ হয়ে যায় অ্যাপটি।

নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন এখন এই সমস্যার সমাধানে কী পদক্ষেপ নেয়, তা দেখার অপেক্ষায় আছে সবাই। টিকটকের পাশাপাশি বাইটডান্সের মালিকানাধীন অন্যান্য অ্যাপ; যেমন ভিডিও এডিটিং অ্যাপ ‘ক্যাপকাট’ এবং ‘লেমন৮’ নামে একটি লাইফস্টাইল সোশ্যাল অ্যাপও যুক্তরাষ্ট্রে অফলাইনে চলে গেছে।

প্রযুক্তির ইতিহাসে কোনো অ্যাপ নিয়ে এমন বিতর্ক এর আগে হয়নি বলেও মনে করেন গবেষকেরা। এই পরিস্থিতি টিকটক এবং অন্যান্য চীনা মালিকানাধীন অ্যাপের ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন প্রশ্ন তৈরি করেছে, যা প্রযুক্তি এবং রাজনীতির এক নতুন অধ্যায় উন্মোচন করছে।

যুক্তরাষ্ট্রে ফের সচল হতে শুরু করেছে টিকটক

যুক্তরাষ্ট্রে কার্যক্রম বন্ধ হবে, তবু বিক্রিতে রাজি নয় টিকটক

হোয়াটসঅ্যাপের মেসেজ পড়তে পারে সিআইএ, দাবি জাকারবার্গের

ট্রান্সজেন্ডার বিদ্বেষী বক্তব্যও আর সেন্সর করবে না ফেসবুক

ফ্যাক্টচেকার বাতিলেও ‘বড় সমস্যা’ দেখছে মেটার ওভারসাইট বোর্ড

ফ্যাক্টচেকাররাও রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট, বাদ দিল ফেসবুক

প্রতারণা ঠেকাতে নতুন ভেরিফিকেশন ফিচার চালু করছে টেলিগ্রাম

ফেসবুক–টিকটককে লক্ষ্য করে ভিয়েতনামে কঠোর ইন্টারনেট আইন

কিশোর হত্যার জেরে আলবেনিয়ায় নিষিদ্ধ টিকটক

থ্রেডসের দৈনিক সক্রিয় ব্যবহারকারী এখন ১০ কোটি

সেকশন