সামাজিক মাধ্যমগুলোর মধ্যে ফেসবুক ব্যাপক জনপ্রিয়। মাধ্যমটির ওপর সম্প্রতি নানা ধরনের অভিযোগ উঠছে। কিছুদিন আগে কোম্পানিটির সাবেক পণ্য ব্যবস্থাপক ফ্রান্সেস হাউজেন ফেসবুকের অনেক গুমর ফাঁস করেছেন। এবার আরেক কর্মকর্তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটি জেনেশুনে ‘ঘৃণামূলক বক্তব্য ও অবৈধ কার্যক্রম’ ছড়াতে সহায়তা করে বলে জানিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এ কর্মকর্তা মার্কিন গণমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টকে গত শুক্রবার এসব কথা জানান। তা ছাড়া এ ব্যক্তি ফেসবুকের বিরুদ্ধে দেশটির সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকেও (সিইসি) লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। সিইসি যুক্তরাষ্ট্রের মূলধারার বিনিয়োগকারীদের নানা স্বার্থ দেখে।
সিইসিকে অভিযোগকারী জানান, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের ভয়ে নিরাপত্তা আইন মেলে চলতে ভয় করত ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। ২০১৬ সাল এবং গত মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়েও প্রতিষ্ঠানটি নানা ধরনের ভুল ও মিথ্যা তথ্য প্রচার করে। কর্মীদের হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও ব্যবসা বাড়াতে ফেসবুক এমনটি করেছে।
তবে এ ধরনের অভিযোগকে যথারীতি অস্বীকার করেছেন কোম্পানিটির যোগাযোগ বিষয়ক কর্মকর্তা টাকার বাউন্ডস। তিনি বলেন, এসব চটদারি কথার ভিত্তি নেই। মার্কিন সাংসদদের হাতে কাজ নেই বলেই তারা এ ধরনের বিষয় নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন। কয়দিন পর দেখবেন, তারা অন্য বিষয় নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।
ইতিপূর্বে ফেসবুকের সাবেক পণ্য ব্যবস্থাপক ফ্রান্সেস হাউজেন কোম্পানিটির বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ আনেন। কোম্পানিটি জননিরাপত্তার চেয়ে মুনাফাকে বেশি গুরুত্ব দেয়। তা ছাড়া গত মার্কিন নির্বাচনে এবং চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটলে হামলার ঘটনায়ও ফেসবুকের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। চলতি মাসের শুরুতে মার্কিন কংগ্রেসকে তিনি এসব কথা বলেন।
গত শুক্রবারের নতুন তথ্য ফাঁসকারীর বক্তব্য নিয়ে খবর ছাপানোর একই দিন নিউ ইয়র্ক টাইমস, ওয়াশিংটন পোস্ট এবং এনবিসিতে হাউজেনের সরবরাহ করা তথ্য নিয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। এতে আরও অনেক গভীর বিষয় ওঠে এসেছে। বিশেষত ২০২০ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে ফেসবুক কীভাবে ভুয়া ও ষড়যন্ত্র তত্ত্ব প্রচার করেছে, সে বিষয়ে অনেক অজানা কথা ওঠে এসেছে।
নিউ ইয়র্ক টাইমস জানায়, গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে উপলক্ষে নিজেদের প্ল্যাটফর্মে প্রকাশিত ও প্রচারিত প্রায় ১০ শতাংশ তথ্য ছিল মিথ্যা এবং প্রতারণামূলক। নির্বাচনের এক সপ্তাহ পরে ফেসবুকের ডেটা বিজ্ঞানীরা সহকর্মীদের এসব তথ্য জানান।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটি ‘রিকমেন্ডেশনে’ বারবার চরমপন্থী বিভিন্ন দলের পোস্ট, ভিডিও সুপারিশ করত। কর্মীদের অভিযোগ সত্ত্বেও তারা এ কাজ করত বলে উল্লেখ করা হয়েছে এনবিসির প্রতিবেদনে।