ইলন মাস্ক টুইটার কেনার পর থেকে মাসটোডন নামে একটি ছোট সামাজিক নেটওয়ার্কে সাইন আপ করা লোকের সংখ্যা বাড়ছে। এমনকি টুইটারে বেশ ফলোয়ার আছেন এমন অনেককে মাসটোডনে অ্যাকাউন্ট খুলতে দেখা যাচ্ছে।
অবশ্য মাসটোডনের কথা হয়তো অনেকেই জানেন না। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি এবং ওপেন সোর্স সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং প্ল্যাটফর্ম। এটি চালু হয়েছে ২০১৬ সালে। কিন্তু এখন দ্রুত বাড়ছে।
টুইটারে কর্মী ছাঁটাই, বিতর্কিত কিছু পরিবর্তন, বিষয়বস্তু মডারেশন পদ্ধতিতে সম্ভাব্য পরিবর্তন এবং ঘৃণাপূর্ণ কথাবার্তা বেড়ে যাওয়ায় অনেকে একটি বিকল্প খুঁজতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। তাঁরাই মূলত এখন মাসটোডনে সাইন আপ করছেন।
এটা ঠিক যে টুইটারের সরাসরি কোনো বিকল্প নেই। এরই মধ্যে এটি বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠেছে। সেদিক থেকে মাসটোডন একটি নির্দিষ্ট বিষয়ভিত্তিক আলোচনার প্ল্যাটফর্ম। এই প্ল্যাটফর্মটির ইন্টারফেস টুইটারের মতোই। সংক্ষিপ্ত হালনাগাদের একটি টাইমলাইন থাকে। তবে সেটির জন্য বিশেষ কোনো অ্যালগরিদম কাজ করে না বরং কালানুক্রমিকভাবে সাজানো হয়।
মাসটোডন টুইটার, ইনস্টাগ্রাম বা ফেসবুকের মতো একক কোম্পানির হাতে নিয়ন্ত্রিত একটি কেন্দ্রীয় প্ল্যাটফর্ম নয়। বিভিন্ন গ্রুপ এবং ব্যক্তি পরিচালিত বিভিন্ন সার্ভারে যুক্ত হওয়ার সুযোগ থাকে এখানে।
অন্য বৃহৎ সামাজিক নেটওয়ার্কের বিপরীতে মাসটোডন ব্যবহার করার জন্য কোনো অর্থ খরচ করতে হয় না, এটি সম্পূর্ণ বিজ্ঞাপনমুক্ত। মাসটোডন তৈরি করেছেন ইউজেন রোচকো। এই জার্মান নাগরিক প্ল্যাটফর্মটির প্রতিষ্ঠাতা, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এবং প্রধান ডেভেলপার। মাসটোডনকে সম্পূর্ণ অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালনা করেন রোচকো। পরিচালনা ব্যয় সংস্থান হয় পৃষ্ঠপোষকদের অনুদান দিয়ে।
রোচকো গত বৃহস্পতিবার একটি সাক্ষাৎকারে বলেন, মাস্ক টুইটারের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পরে ২৭ অক্টোবর থেকে মাসটোডনে ২ লাখ ৩০ হাজার নতুন ব্যবহারকারী যুক্ত হয়েছেন। এই প্ল্যাটফর্মে এখন প্রতি মাসে সক্রিয় ব্যবহারকারী রয়েছেন ৬ লাখ ৫৫ হাজার। যেখানে গত জুলাইয়ে টুইটারের রিপোর্টে বলা হয়, তাদের দৈনিক সক্রিয় ব্যবহারকারী প্রায় ২৩ কোটি ৮০ লাখ।