রিজিয়া রহমান

সম্পাদকীয়

প্রকাশ : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭: ৫২
রিজিয়া রহমান। ছবি: সংগৃহীত

রিজিয়া রহমান ভীষণভাবে নির্জনতাপ্রিয় লেখক ছিলেন। এক অর্থে নির্জনতাই তাঁর জীবন ও লেখালেখির মূল শক্তি ছিল। তিনি লেখালেখিকে সাংসারিক কাজের ফাঁকে অবসরের কাজ হিসেবে গ্রহণ করেননি। তিনি একজন পূর্ণকালীন লেখক ছিলেন। লেখার প্রতি সৎ ও নিবেদিত থাকার প্রত্যয়ে কলেজের অধ্যাপনার চাকরিও ছেড়ে দিয়েছিলেন। ‘বং থেকে বাংলা’ এবং অন্যান্য ইতিহাসভিত্তিক উপন্যাস লেখার সময় দীর্ঘ পাঠ-প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছিলেন। বাঙালির নৃতাত্ত্বিক আত্মপরিচয়কে উপন্যাসের বিষয় করে তিনি অনন্য দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করেছেন। সমাজের রুগ্‌ণ ও পঙ্কিলতার অন্ধকার দিকটিও তাঁর লেখায় ধরা পড়েছে ভিন্ন আঙ্গিকে।

প্রাচীন ইতিহাসের চরিত্র, বারবনিতা, চা-শ্রমিক, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, খনিশ্রমিক, হাঙর শিকারি ইত্যাদি বিচিত্র চরিত্র তাঁর সৃষ্টির মধ্যে ফুটিয়ে তুলেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন তাঁর প্রথম গল্পগ্রন্থ ‘অগ্নি-স্বাক্ষর’ এবং প্রথম উপন্যাস ‘ঘর ভাঙা ঘর’ প্রকাশিত হয়েছিল। প্রথম উপন্যাসেই রিজিয়া রহমানের জীবনদর্শন বা শিল্পীসত্তার স্বরূপ স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

রিজিয়া রহমানের জন্ম ১৯৩৯ সালের ২৮ ডিসেম্বর কলকাতার ভবানীপুরে। পরিবারের সবাই তাঁকে ডাকত ‘জোনাকী’ নামে। ’৫২ সালে বাবার মৃত্যুর পর ঢাকার শাইনপুকুরে নানাবাড়িতে আসেন। পরে মামার বাসা চাঁদপুরে থেকে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হন। একপর্যায়ে প্রাইভেট পরীক্ষা দিয়ে ম্যাট্রিক পাস করেন। এরপর তাঁর বিয়ে হয়। ইডেন মহিলা কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক ও স্নাতক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর পাস করেন।

সাহিত্য পত্রিকা ‘ত্রিভুজ’-এর সম্পাদক হিসেবে কর্মজীবন শুরু হয় তাঁর। এরপর দায়িত্ব পালন করেছেন জাতীয় জাদুঘরের ট্রাস্টি, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের কার্য পরিচালক এবং বাংলা একাডেমির কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য হিসেবে।

তাঁর লেখকজীবনের অধিকাংশ সময় তিনি প্রধানত গল্প-উপন্যাসই লিখেছেন। উপন্যাস লিখেছেন মোট ৩৩টি। এর বাইরে কয়েকটি ছোটগল্প ও শিশুতোষ গ্রন্থ আছে তাঁর।

২০১৯ সালের ১৬ আগস্ট তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

নওয়াবদের প্রাসাদ আহসান মঞ্জিল

বছরের শেষ রাত, আনন্দের নামে কি আমরা নির্দয়তার দায় বইব?

মণি সিংহ

রোম্যাঁ রোলাঁ