সম্পাদকীয়
খুবই অস্থিতিশীল অবস্থায় আছি আমরা। এই অবস্থাকে বাইরে থেকে মনে হবে আইন-শৃঙ্খলার [পরিস্থিতির] অবনতি। তা তো বটেই। রাষ্ট্রের যে তিনটি অঙ্গ—নির্বাহী বিভাগ, আইন বিভাগ ও বিচার বিভাগ, তারা কেউই নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করছে না। তবে তার মধ্যে সমাজের আদর্শিক বাস্তবতাও প্রতিফলিত হচ্ছে। বাস্তবতা হচ্ছে এই যে, এ সমাজের প্রতিটি মানুষ টাকার শাসনে চলে গেছে এবং প্রত্যেকে টাকা খুঁজছে। সেটাকেই আদর্শ ভাবা হচ্ছে। ধনী হওয়াই যথেষ্ট, কীভাবে ধনী হচ্ছে সেটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার নয়। আগে যারা ঘুষ খেত, কালোবাজারি করত তাদের অপরাধী হিসেবে গণ্য করা হতো। তারা নিজেরাও তা মনে করত। কিন্তু আজকের সমাজে তারাই কর্তা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঋণখেলাপিরা দস্যুতা করছে, মানুষের গচ্ছিত টাকা নিয়ে নিচ্ছে। দস্যুদের মধ্যে যে অপরাধবোধ থাকে তা ঋণখেলাপিদের নেই। লুণ্ঠনের যে মনোভাব সেটাই অরাজকতা সৃষ্টির কারণ। রাস্তাঘাটে দেখা যায় কেউ নিয়ম মানছে না, কে আগে যাবে সে প্রতিযোগিতায় ব্যস্ত সবাই। ফলে গতি বাড়ছে না।
...অপরাধীর কোনো শাস্তি হচ্ছে না। অপরাধী টাকার জোরে পার পেয়ে যাচ্ছে। অপরাধীর শাস্তি না হলে অপরাধ বাড়বেই। মানুষ স্বর্গীয় প্রাণী নয়। তার মধ্যে অপরাধপ্রবণতা থাকবেই। এই ইতর প্রবৃত্তিকে শাসন করা দরকার। শাসন করার দুটি পদ্ধতি আছে—একটি হচ্ছে অপরাধ করলে শাস্তি দেওয়া হবে, দ্বিতীয়টি হলো দৃষ্টান্ত। শাস্তিও বটে, আবার দৃষ্টান্ত তুলে ধরাও বটে, দুটোই চাই। যাদের দেখে পরোপকারী দেশপ্রেমিক হওয়া যায়, সে দৃষ্টান্তের অভাব রয়েছে। ’৪৭ সালের পর থেকে ’৭১ সাল পর্যন্ত ধারাবাহিকতায় তরুণের সামনে একটা লক্ষ্য ছিল, বিশ্বাস ছিল সে এ-ব্যবস্থাকে বদলাবে। বদলাবার সে-স্রোতধারা ক্রমাগত বিকশিত হয়ে রূপ নিয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের।...স্বাধীনতার পরেই যদি আমরা সমাজবদলের আন্দোলনকে শক্তিশালী করতে পারতাম তবে তরুণ এ-আন্দোলনে যোগ দিত, চরিতার্থতা খুঁজে আনন্দ পেত—বুঝত সামনে ভবিষ্যৎ আছে। এগুলো এখন দেখা যাচ্ছে না।
সূত্র: সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর সাক্ষাৎকার, মুক্তিযুদ্ধকে যে দৃষ্টিতে দেখব, জাহীদ রেজা নূর, প্রথম আলো, ১৩ ডিসেম্বর ১৯৯৮
খুবই অস্থিতিশীল অবস্থায় আছি আমরা। এই অবস্থাকে বাইরে থেকে মনে হবে আইন-শৃঙ্খলার [পরিস্থিতির] অবনতি। তা তো বটেই। রাষ্ট্রের যে তিনটি অঙ্গ—নির্বাহী বিভাগ, আইন বিভাগ ও বিচার বিভাগ, তারা কেউই নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করছে না। তবে তার মধ্যে সমাজের আদর্শিক বাস্তবতাও প্রতিফলিত হচ্ছে। বাস্তবতা হচ্ছে এই যে, এ সমাজের প্রতিটি মানুষ টাকার শাসনে চলে গেছে এবং প্রত্যেকে টাকা খুঁজছে। সেটাকেই আদর্শ ভাবা হচ্ছে। ধনী হওয়াই যথেষ্ট, কীভাবে ধনী হচ্ছে সেটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার নয়। আগে যারা ঘুষ খেত, কালোবাজারি করত তাদের অপরাধী হিসেবে গণ্য করা হতো। তারা নিজেরাও তা মনে করত। কিন্তু আজকের সমাজে তারাই কর্তা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঋণখেলাপিরা দস্যুতা করছে, মানুষের গচ্ছিত টাকা নিয়ে নিচ্ছে। দস্যুদের মধ্যে যে অপরাধবোধ থাকে তা ঋণখেলাপিদের নেই। লুণ্ঠনের যে মনোভাব সেটাই অরাজকতা সৃষ্টির কারণ। রাস্তাঘাটে দেখা যায় কেউ নিয়ম মানছে না, কে আগে যাবে সে প্রতিযোগিতায় ব্যস্ত সবাই। ফলে গতি বাড়ছে না।
...অপরাধীর কোনো শাস্তি হচ্ছে না। অপরাধী টাকার জোরে পার পেয়ে যাচ্ছে। অপরাধীর শাস্তি না হলে অপরাধ বাড়বেই। মানুষ স্বর্গীয় প্রাণী নয়। তার মধ্যে অপরাধপ্রবণতা থাকবেই। এই ইতর প্রবৃত্তিকে শাসন করা দরকার। শাসন করার দুটি পদ্ধতি আছে—একটি হচ্ছে অপরাধ করলে শাস্তি দেওয়া হবে, দ্বিতীয়টি হলো দৃষ্টান্ত। শাস্তিও বটে, আবার দৃষ্টান্ত তুলে ধরাও বটে, দুটোই চাই। যাদের দেখে পরোপকারী দেশপ্রেমিক হওয়া যায়, সে দৃষ্টান্তের অভাব রয়েছে। ’৪৭ সালের পর থেকে ’৭১ সাল পর্যন্ত ধারাবাহিকতায় তরুণের সামনে একটা লক্ষ্য ছিল, বিশ্বাস ছিল সে এ-ব্যবস্থাকে বদলাবে। বদলাবার সে-স্রোতধারা ক্রমাগত বিকশিত হয়ে রূপ নিয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের।...স্বাধীনতার পরেই যদি আমরা সমাজবদলের আন্দোলনকে শক্তিশালী করতে পারতাম তবে তরুণ এ-আন্দোলনে যোগ দিত, চরিতার্থতা খুঁজে আনন্দ পেত—বুঝত সামনে ভবিষ্যৎ আছে। এগুলো এখন দেখা যাচ্ছে না।
সূত্র: সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর সাক্ষাৎকার, মুক্তিযুদ্ধকে যে দৃষ্টিতে দেখব, জাহীদ রেজা নূর, প্রথম আলো, ১৩ ডিসেম্বর ১৯৯৮
১৭০০ সালের ফ্রান্সে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হতো প্রকাশ্যে। মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের দৃশ্য দেখতে রীতিমতো হুমড়ি খেয়ে পড়ত মানুষ। তবে এখানেও ছিল শ্রেণিবৈষম্য! গরিব অপরাধীদের জন্য সাধারণ শাস্তি ছিল কোয়ার্টারিং। কোয়ার্টারিং এমন একটি পদ্ধতি, যেখানে অপরাধীর চার হাত-পা চারটি গরুর সঙ্গে বাঁধা হতো।
৪ দিন আগেদিনে কোন শব্দটি আপনি সবচেয়ে বেশিবার ব্যবহার করেন? নিঃসন্দেহে ‘ওকে (Ok)’। বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত এই শব্দটি কিন্তু সহজে ‘জাতে’ উঠতে পারেনি! প্রথমবারের মতো ১৮৩৯ সালের আজকের এই দিনে (২৩ মার্চ) লিখিতরূপে বোস্টন মর্নিং পত্রিকায় প্রকাশিত হয় দুই অক্ষরের।
৯ দিন আগে২১ মার্চ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান থেকে ঢাকায় এলেন পাকিস্তান পিপলস পার্টির প্রধান জুলফিকার আলী ভুট্টো। তিনি এসে বললেন, ‘সব কুছ ঠিক হো যায়ে গা।’ ২২ মার্চ ভুট্টোর উপস্থিতিতে মুজিব-ইয়াহিয়া বৈঠক হলো। সবাই ভাবছিল, এইবার বুঝি একটা বোঝাপড়ার দিকে এগোচ্ছে আলোচনা।
১০ দিন আগেআমাদের সাংবাদিকতাকে মুক্তিযুদ্ধের সামগ্রিক চেতনার অনুবর্তী বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে নিবেদিত থাকা উচিত। দেশপ্রেমিক সাংবাদিকতার এটাই কর্তব্য। এ ক্ষেত্রে তরুণ সাংবাদিকদের যথার্থ ইতিহাস-চেতনা অর্জন একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। কেননা, শাসকশ্রেণির প্রভাবশালী নানা রাজনৈতিক দলের নানা ধরনের বিভ্রান্তিমূল
১১ দিন আগে