বরগুনার তালতলীতে পছন্দের ছেলের সঙ্গে বিয়ে না দেওয়ায় সুইসাইড নোট লিখে আত্মহত্যা করেছে রুমা আক্তার (১৬) নামে এক কলেজছাত্রী। পরে পুলিশ ঝুলন্ত অবস্থায় রুমার মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে। ঘটনার পর থেকে প্রেমিক কাইউম (২৭) পলাতক।
আজ শনিবার বেলা ১টার দিকে উপজেলার শিকারীপাড়া এলাকার নিজ বাড়ি থেকে কলেজছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। রুমা তালতলী সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী ছিল। শিকারীপাড়া এলাকার আলাউদ্দিন মোল্লার মেয়ে। আর কাইউম বরিশালের একটি কলেজে পড়াশোনা করেন। তিনি একই এলাকার হাফিজুর হাওলাদারের ছেলে।
সুইসাইড নোটে ওই ছাত্রী উল্লেখ করেছে, ‘আমার মুত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়। বাবা ও মা তোমরা আমাকে ক্ষমা করে দিও। আমি কাইউমকে ভালোবাসি, আমাদের প্রেম খাঁটি ছিল। শুধু একদিন বাজার থেকে গাড়িতে করে বাড়িতে যাওয়ার সময় আমি কাইউমের হাত ধরেছি। এ ছাড়া আমাদের ভিতরে আর কোনো সম্পর্ক হয়নি। ভালো থেকো বাবা, আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি।’
পরিবার সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিনের মতো তালতলী থেকে কোচিং করে সকাল ১০টায় বাড়িতে ফেরে রুমা। এরপর বাবা আলাউদ্দিন মোল্লার সঙ্গে সকালের খাবার খায়। পরে বাবা ও মা মাঠে ধান শুকাতে যান। কিছুক্ষণ পর বাবা-মা বাসায় ফিরে দেখেন বাড়ির দরজা ভেতর থেকে লাগানো। মেয়েকে ডাকাডাকি করেন কিন্তু কোনো আওয়াজ পান না। দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে দেখেন মেয়ে ঝুলন্ত অবস্থায়। স্থানীয় লোকজন পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ এসে মরদেহ নিয়ে যায়।
প্রতিবেশীরা বলেন, রুমা ও কাইউম উভয়ের পরিবার তাদের সম্পর্ক মেনে নেয়নি। রুমাকে বিয়ে দেওয়ার জন্য পাত্র খোঁজা হচ্ছিল। আজ পাত্রপক্ষ রুমাদের বাড়িতে আসার কথা ছিল। এ জন্যই রুমা আত্মহত্যা করেছে বলে তাঁদের ধারণা।
রুমার বাবা আলাউদ্দিন মোল্লা বলেন, ‘আমার মেয়ে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ১২টার ভেতরে যেকোনো সময় প্রথমে বিষ পান করে, পরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আড়ার সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করে।’
তালতলী থানার ওসি কাজী শাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে বরগুনা হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। রিপোর্ট এলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছি।’