চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ থেকে ২০টি সোনার বার উদ্ধারের ঘটনায় বিমানটি জব্দ করা হয়েছে। এ বিষয়ে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বিমানটি জব্দ নিয়ে স্পষ্ট কোনো তথ্য দিতে না পারেনি। তবে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর বলছে বিমানটি জব্দই করা হয়েছে।
দুবাই থেকে আসা বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটের যাত্রীর আসনের নিচ থেকে এসব সোনার বার উদ্ধারের পর জব্দ করা হয়। জব্দ করা সোনার দাম ২ কোটি ৬০ লাখ টাকা। এ ঘটনায় আতিয়া সামিয়া নামের এক যাত্রীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা ২৫ মিনিটে জাতীয় গোয়েন্দা নিরাপত্তা সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে বিমানবন্দর নিরাপত্তা শাখা এবং শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করে এসব সোনা উদ্ধার করেছে। এরপর সকাল ১০টা ৫২ মিনিটে বিমানটি নিয়ে ঢাকায় উড়াল দেয় শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। বাংলাদেশ বিমানকে জবাবদিহির আওতায় আনার জন্যই বিমানটি জব্দ করা হয়েছে বলেও জানান তাঁরা।
এ বিষয়ে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা ইব্রাহীম খলিল বলেন, সকালে দুবাই থেকে আসা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বিজি-১৪৮ ফ্লাইটের ভেতরে অভিযান পরিচালনা করে ২০টি সোনার বার উদ্ধার করা হয়েছে, যার ওজন ২ কেজি ৩০০ গ্রাম। স্বর্ণের বারগুলো বিশেষ কায়দায় বিমানের ৯ জে সিটের নিচে প্লাস্টিক টেপ দিয়ে মুড়িয়ে লুকানো ছিল। উদ্ধার করা সোনা বিমানবন্দর শুল্ক গোয়েন্দার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার যাত্রীর বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা মডেল থানায় ফৌজদারি মামলার প্রক্রিয়া চলছে।
তথ্যমতে, চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ জব্দের ঘটনা এটিই প্রথম। এক দশক আগে ঢাকায় চোরাচালানের সোনা বহন করায় দুটি উড়োজাহাজ জব্দ করার উদাহরণ রয়েছে।
শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. মিনহাজ উদ্দিন জানান, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা চাইলে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের জিম্মায় দিতে পারেন যাত্রী পরিবহনের স্বার্থে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্যমতে, গ্রেপ্তার যাত্রী আতিয়া সামিয়ার বাড়ি রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানা এলাকায়। তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতে ‘ওশেন গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ড জুয়েলারি’ নামের একটি দোকানে বিক্রয়কর্মী হিসেবে কাজ করেন। দেশেও তিনি অনলাইনে সোনা বিক্রি করেন। সোনার বারগুলো উড়োজাহাজের আসনের নিচে বিশেষ কায়দায় প্লাস্টিকের টেপ দিয়ে মোড়ানো ছিল। কোনো যাত্রীর পক্ষে এভাবে সোনার বার লুকানোর কথা নয় যদি উড়োজাহাজটির কারও সহযোগিতা না পান।
জব্দ করা বোয়িং ৭৭৭-ইআর মডেলের উড়োজাহাজটির মূল্য দেখানো হয়েছে এক হাজার কোটি টাকা। এ ঘটনা বিচারাদেশের জন্য নথি চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছেন কাস্টমস গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন শেখ আব্দুল্লাহ আলমগীর শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. মিনহাজ উদ্দিনের বরাত দিয়ে বলেন, ‘আমরা জেনেছি কাগজপত্রে বিমানটি জব্দ করা হয়েছে। বাংলাদেশ বিমানকে জবাবদিহির আওতায় আনতে এটি জব্দ করা হয়েছে।’