চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে গৃহবধূ কোহিনূর বেগমকে (৪০) হত্যা মামলায় একজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার চাঁদপুরের জ্যেষ্ঠ জেলা ও দায়রা জজ সামছুন্নাহারের আদালত এই রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত জহির হোসেন (৪৫) একই উপজেলার ভাটনীখোলা গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে।
সরকারপক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) কোহিনুর বেগম রায়ের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মামলাটি দীর্ঘ ৫ বছরের বেশি সময়ে ২২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করে। সাক্ষ্য গ্রহণ ও মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা শেষে আসামির উপস্থিতিতে আদালত এ রায় দেন। আর অভিযোগপত্রে থাকা বাকি আসামিদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, আসামি জহির হোসেনের স্ত্রী লাকী বেগম ঋণ করে স্বামীকে সৌদি আরবে পাঠান। জহির সৌদি আরব থেকে এক মাস পর দেশে চলে আসেন। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ হয় এবং লাকী বেগম স্বামীকে তালাক নিয়ে চলে যান।
এর কিছুদিন পর হত্যার শিকার কোহিনূরের বড় ভাইয়ের সঙ্গে বিয়ে হয় লাকী বেগমের। এই বিয়ে নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়। ফলে ২০১৯ সালের ১৮ এপ্রিল রাত ১১টার দিকে আসামি জহির ক্ষিপ্ত হয়ে কোহিনূর বেগমের ঘরে ঢুকে তাঁকে দা দিয়ে কুপিয়ে জখম করেন। স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাঁকে শাহরাস্তি ও কুমিল্লায় চিকিৎসা দিয়ে সর্বশেষ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২২ এপ্রিল কোহিনূর মারা যান।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর স্বামী প্রবাসে থাকায় তাঁর ছোট ভাই মো. হাবিব উল্লাহ বাদী হয়ে পরদিন ১৯ এপ্রিল শাহরাস্তি থানায় জহির হোসেনসহ ৫ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তৎকালীন শাহরাস্তি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আব্দুল আউয়াল তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ৩১ মার্চ আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলায় আসামিপক্ষে আইনজীবী ছিলেন হাবিবুর রহমান লিটু।
এ বিষয়ে বাদী মো. হাবিব উল্লাহ মোবাইল ফোনে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘হত্যার শিকার কোহিনূর বেগম আমার বড় ভাইয়ের স্ত্রী। আমার ভাই এখনো সৌদিপ্রবাসী। বিচারক যে রায় দিয়েছেন, সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করব না। তবে এ বিষয়ে আমরা আপিল করব।’