Ajker Patrika
হোম > সারা দেশ > চট্টগ্রাম

ইউরোপের পথে বেরিয়ে ২৬ পরিবারে কান্না-কষ্ট

মো. শফিকুল ইসলাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

ইউরোপের পথে বেরিয়ে  ২৬ পরিবারে কান্না-কষ্ট

স্বপ্নের ইউরোপ যাওয়া হলো না ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের ২৬ যুবকের। দালালের খপ্পরে পড়ে নিঃস্ব ২৫টি পরিবার। লিবিয়া থেকে ফেরত আসা ৯ যুবক জানিয়েছেন, সেখানে তাঁদের ওপর অমানবিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। সেখানে এখনো নিখোঁজ বাকি ১৭ জন। অনিশ্চয়তায় দিন পার করছে তাঁদের পরিবার। নিখোঁজ ওই ১৭ জনকে দ্রুত খুঁজে বের করে দেশে ফেরত আনার দাবি জানিয়েছেন তাঁদের স্বজনেরা। 

স্থানীয় সূত্র বলেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের হাওরবেষ্টিত ইউনিয়ন গোয়ালনগর। যেখানে নৌকাই যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম। এই ইউনিয়নের গোয়ালনগর গ্রামের আতাউর রহমানের ছেলে ফরহাদ মিয়ার নেতৃত্বে একটি সংঘবদ্ধ চক্র ইউরোপের দেশ ইতালি নেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে স্থানীয় ২৬ যুবকের কাছ থেকে ১০ থেকে ১১ লাখ করে টাকা নেন। প্রথমে তাঁদের লিবিয়ায় পাঠানো হয়। এরপর লিবিয়ার দালালদের কাছে তাঁদের বিক্রি করে দেওয়া হয়। 

ফেরত আসা যুবকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ইতালি পাঠানোর কথা বলে টাকার জন্য নিয়মিত তাঁদের ওপর অমানবিক নির্যাতন চালানো হতো। দালালেরা লিবিয়ায় তাঁদের মরুভূমিতে আটকে রেখেছিল। টাকার জন্য চাপ দিতে পরিবারের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হতো, তবে তা ১০ থেকে ১৫ সেকেন্ডের জন্য। যাঁদের পরিবার টাকা দিতে পারত, তাঁদের ওপর নির্যাতন কম করা হতো। টাকা না দিতে পারলে নির্যাতনের মাত্রা বহুগুণে বেড়ে যেত। 

ওই ৯ যুবক ও নিখোঁজ যুবকদের স্বজনেরা জানান, সারা দিনে ১ লিটার পানি ও এক বেলা খাবার দেওয়া হতো তাঁদের। তাঁরা ৯ জন দালালদের নির্যাতন ভোগ করে এবং কারাভোগ করে দেশে ফিরতে পারলেও ১৭ জন নিখোঁজ রয়েছেন। তাঁদের পরিবার এখনো জানে না, তাঁরা কোথায় কেমন আছেন। দালাল ফরহাদ পরিবারের ফোন ধরেন না। কখনো ধরলে শুধু বলেন, ‘তাঁরা (নিখোঁজ ১৭ যুবক) ভালো আছেন। টাকা পাঠান, তাহলে তাঁদের ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।’

লিবিয়ায় আটক মিজবাহ উদ্দিনের বাবা শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘লিবিয়া হয়ে ইতালি পাঠানোর কথা বলে আমার কাছ থেকে ১১ লাখ টাকা নিয়েছে দালালেরা। এখন আমার ছেলে দালালদের কাছে বন্দী। আরও টাকা দিলে ছেলেকে ফেরত দেবে।’ লিবিয়ায় আটক জহিরুল ইসলামের বাবা রায়হান মিয়া বলেন, ‘জমি বিক্রি করে টাকা দিয়েছি। এখন আরও টাকা দাবি করে। তবে ছেলে কেমন আছে, তা জানি না।’ 

লিবিয়ায় নির্যাতনের শিকার হয়ে দেশে ফেরত আসা ৯ যুবকের একজন আসাদ মিয়া বলেন, ‘তারা শুধু টাকার জন্য আমাদের মারধর করত। খাবারে কষ্ট দিত। সারা দিনে শুধু একবার খাবার দিত। কথা বললেই মারধর করত।’ 

অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে অভিযুক্ত ফরহাদের বাড়িতে গিয়ে তাঁর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। তবে তাঁর চাচা নাসির মিয়া বলেন, ‘ফরহাদ তাঁদের ইতালি পাঠিয়েছে ঠিকই; কিন্তু সেখানে তাঁদের আটক করা হয়েছে। কয়েকজনকে ইতিমধ্যে দেশে পাঠানো হয়েছে।’ তবে চাপ দিয়ে টাকা নেওয়ার বিষয়টি তিনি মিথ্যা বলে দাবি করেন। 

এ ব্যাপারে নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ ইমরানুল হক ভূইয়া বলেন, ‘গা শিউরে ওঠার মতো ঘটনা। আমাদের দেশের অর্থনীতি যাঁরা টিকিয়ে রেখেছেন, সেই রেমিট্যান্স-যোদ্ধাদের যদি এই অবস্থার মুখোমুখি হতে হয়, তাহলে খুবই দুঃখজনক। অভিযোগ পেলে নিশ্চয়ই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাবেদুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

রাঙামাটিতে পিকআপ-অটোরিকশা সংঘর্ষে নিহত বেড়ে ৬

নতুন করে জীবন সাজাতে যাচ্ছিলেন চট্টগ্রামে, পথে হারালেন মেয়েকে

রাঙামাটিতে পিকআপ-অটোরিকশার সংঘর্ষে নিহত ৫

তামাকের ছোবলে হালদা হুমকিতে মাছ ও গাছ

রাউজানে একের পর এক হত্যা, আতঙ্কে বাসিন্দারা

মুয়াজের জন্য এখনো পথ চেয়ে থাকেন মা

নোয়াখালীতে পুকুরে ডুবে দুই মাদ্রাসাছাত্রীর প্রাণহানি

ঘরের তালা খুলে পেলেন বোনের গলাকাটা লাশ

চট্টগ্রামে জব্বারের বলীখেলায় শিরোপা ধরে রেখেছেন কুমিল্লার বাঘা শরীফ

মিয়ানমার সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে চোরাই গরুর ২ পা বিচ্ছিন্ন