দেবিদ্বার উপজেলার সুবিল ইউনিয়নের শিবনগর প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ওয়াহেদপুর সড়ক পাকা করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। ২৪ লাখ ১৩ হাজার ৬৩১ টাকা ব্যয়ে ৫৪৯ মিটার রাস্তাটির নির্মাণকাজের দায়িত্বে রয়েছে মিলিনিয়াম ডেভেলপমেন্ট নামে একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। তাদের বিরুদ্ধে নির্মাণকাজে নিম্নমানের ইটের খোয়া ও ইট ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করায় বাধা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তোয়াক্কা না করে ঠিকাদার জোর করে নিম্নমানের ইট ও খোয়া দিয়েই কাজ করেছেন।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, শিবনগর প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ওয়াহেদপুর পর্যন্ত সড়ক নির্মাণকাজে ইটের খোয়া এক ইঞ্চির কথা বলা হলেও এতে ব্যবহার হয়েছে নিম্নমানের ইটের তিন থেকে চার ইঞ্চি বড় বড় টুকরা। এসব বড় আকারের ইটের খোয়ায় এরই মধ্যে মেকাডম হয়ে গেছে। এ ছাড়া রাস্তার পাশে পুকুরে ব্যবহারের জন্য সিমেন্টের নিম্নমানের খুঁটি ব্যবহার করা হয়েছে। স্থানীয় কয়েকজন খুঁটি ধরতেই বালু ঝরে পড়ছে।
জানা গেছে, ৫৪৯ মিটার পিচের সড়ক নির্মাণকাজে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) থেকে ২৪ লাখ ১৩ হাজার ৬৩১ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মিলিনিয়াম ডেভেলপমেন্টের মালিক মো. বাহার হোসেন গত ফেব্রুয়ারি মাসে সড়কটির নির্মাণকাজ শুরু করেন। নিম্নমানের ইট ও খোয়া হওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দারা উপজেলা প্রকৌশলীর বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। পরে উপজেলা প্রকৌশলী মো. শাহ আলম ও এলাকাবাসী কাজটি বন্ধ করে দেন। পরে চলতি মাসের ১ তারিখে ওই ঠিকাদার পুনরায় নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ শুরু করলে এলাকাবাসী আবার বাধা দেন। এলাকাবাসী ও এলজিইডি অফিস-সংশ্লিষ্ট প্রকৌশল বাধা দিলেও ওই ঠিকাদার কারও তোয়াক্কা না করে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
সুবিল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজি এম এ রশিদ বলেন, ‘আগে একবার নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ শুরু করছিলেন। পরে আমরা বাধা দিয়ে কাজ বন্ধ করেছি। এখন শুনছি আবার কাজ শুরু করেছে। আমি উপজেলা ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছি।’
স্থানীয় বাসিন্দা মো. নাসির হোসেন বলেন, ‘নিম্নমানের ইট ও খোয়া বিছানোর কাজ শেষ। আগেও একবার কাজ বন্ধ করে দিয়েছিল এলাকাবাসী। তারা আবার কাজ শুরু করেছে।’
অভিযুক্ত ঠিকাদার বাহার হোসেন বলেন, ‘এগুলো বলে লাভ নাই ভাই। সবাই যেভাবে করে আমিও সেভাবে মিলেঝিলে করছি। আমাকে কেউ বাধা দেয়নি। বাধা দিলেও লাভ কী? আমি তো কাজ শেষই করে ফেলেছি।’
কাজের দায়িত্বরত উপসহকারী প্রকৌশলী মো. সহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমি নিজে গিয়ে রাস্তাটা দেখে এসেছি, খুবই খারাপ অবস্থা। কাজ বন্ধ করতে বলেছি, ঠিকাদার কথা শোনেন না।’
দেবিদ্বার উপজেলা প্রকৌশলী মো. শাহ আলম বলেন, ‘আমি ওখানে লোক পাঠিয়েছি, তাঁরা কথা শুনছেন না। জোর করে কাজ করছেন। রোববার পর্যন্ত অপেক্ষা করেন, তাঁর বিরুদ্ধে কুমিল্লা নির্বাহী প্রকৌশলী অফিসে লিখিত অভিযোগ করা হবে। তিনি জোর করে কাজ করছেন, দেখি তাঁর কত বড় ক্ষমতা।’