কক্সবাজার প্রতিনিধি
খুলনা সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর গোলাম রব্বানী টিপু (৫৪) হত্যাকাণ্ড ছিল পূর্বপরিকল্পিত। এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের লোকজন তাঁকে এক নারীকে দিয়ে কক্সবাজার এনে হত্যা করেছে। ইতিমধ্যে এই হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত ওই নারীসহ মোট পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে। ব্যবহৃত অস্ত্রও উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ বুধবার (১৫ জানুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার মো. রহমত উল্লাহ এসব তথ্য জানান।
পুলিশ সুপার জানান, হত্যাকাণ্ড তদন্তে নেমে পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় নিশ্চিত হয় এ ঘটনায় জড়িত তিনজন মৌলভীবাজারের জুড়ি উপজেলার কাপনা পাহাড় এলাকায় অবস্থান করছে। এ তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে অভিযান চালিয়ে শাহরিয়ার ইসলাম পাপ্পু (২৯), গোলাম রসুল (২৫) ও ঋতুকে (২৩) গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের তিনজনের বাড়ি খুলনা শহরে।
পুলিশ সুপার মো. রহমত উল্লাহ জানান, এটি ছিল টার্গেট কিলিং। গ্রেপ্তারকৃতরা আধিপত্য বিস্তারের দ্বন্দ্ব এবং পূর্বশত্রুতার জেরে কক্সবাজারে এনে পরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে। গ্রেপ্তার নারীকে টোপ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। ওই নারী খুলনা থেকে টিপুর সঙ্গে এসেছিলেন।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের তথ্যমতে, কক্সবাজার শহরের কলাতলীর কক্স কুইন রিসোর্টের ২০৮ নম্বর কক্ষের চিলেকোঠা থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি পিস্তল ও চার রাউন্ড গুলিভর্তি ম্যাগাজিন উদ্ধার করা হয়েছে।
এর আগে গত শুক্রবার খুলনার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ হাসান ইফতেখার ওরফে সালু এবং কক্সবাজার শহরের টেকপাড়া এলাকার মেজবাউল হক ভুট্টোকে হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
গত বৃহস্পতিবার রাতে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত-সংলগ্ন হোটেল সি-গালের সামনের ফুটপাতে দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত হন গোলাম রব্বানী টিপু। পরদিন শুক্রবার নিহতের ভগ্নিপতি ইউনুছ আলী শেখ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
খুন হওয়ার আগে বৃহস্পতিবার সকালে কক্সবাজার শহরের কলাতলী এলাকার হোটেল গোল্ডেন হিলে ওঠেন গোলাম রব্বানী টিপু ও এক নারীসহ তিনজন। হোটেলের অভ্যর্থনা কক্ষের একটি সিসি ক্যামেরা ফুটেজে দেখা গেছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা ৩১ মিনিটে ওই নারীসহ নিহত কাউন্সিলর টিপু হোটেল থেকে বেরিয়ে যান। এরপর রাত ৮টা ২০ মিনিটের দিকে দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত হন টিপু।
উল্লেখ্য, গোলাম রব্বানী খুলনা সিটির ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদ্য সাবেক কাউন্সিলর এবং মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি। গত ২৬ সেপ্টেম্বর দেশের ১২টি সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলরদের সঙ্গে তাঁকেও অপসারণ করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। তাঁর বিরুদ্ধে দৌলতপুর থানায় হুজি শহীদ হত্যা মামলাসহ দুটি মামলা ছিল। বর্তমানে তাঁর নামে কোনো মামলা নেই। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে তিনি আত্মগোপনে ছিলেন।