Ajker Patrika
হোম > সারা দেশ > চট্টগ্রাম

দিয়াজকে মনে রাখেনি ছাত্রলীগ, ৫ বছরেও শেষ হয়নি হত্যা মামলার তদন্ত

মিনহাজুল ইসলাম তুহিন, চবি

দিয়াজকে মনে রাখেনি ছাত্রলীগ, ৫ বছরেও শেষ হয়নি হত্যা মামলার তদন্ত

ছাত্রলীগের নেতা দিয়াজ ইরফান চৌধুরীর মৃত্যুর পাঁচ বছর পেরিয়েছে গতকাল শনিবার। দিয়াজ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসম্পাদক এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখার সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক ছিলেন। একসময় ক্যাম্পাস থেকে ছাত্রশিবিরকে উৎখাত করতে জীবন বাজি রেখে সম্মুখ সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। ক্যাম্পাসে প্রগতিচর্চার পথ সুগম করেছেন। তবে দিয়াজের মৃত্যুর পাঁচ বছরের মধ্যে দিয়াজকে ভুলে গেছে তাঁরই সংগঠন ছাত্রলীগ। 

পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁর প্রতিষ্ঠিত গ্রুপ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করলেও ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে আয়োজন করা হয়নি কোনো স্মরণসভা বা দোয়া মাহফিল। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দিয়াজের অনুসারী ছাত্রলীগের কর্মীরা। 

ছাত্রলীগের কর্মীদের দাবি, গ্রুপিং রাজনীতির কারণে দিয়াজের মৃত্যুবার্ষিকীতে ছাত্রলীগের উদ্যোগে কোনো অনুষ্ঠান হচ্ছে না। বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দুজন ভিন্ন দুই গ্রুপের হওয়ায় এবং বিভিন্ন গ্রুপে দিয়াজ হত্যা মামলার আসামিরা থাকায় কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে না ছাত্রলীগ। 

দিয়াজের প্রতিষ্ঠা করা গ্রুপ বাংলার মুখের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের সাবেক পাঠাগারবিষয়ক সম্পাদক আবু বকর তোহা বলেন, ‘দিয়াজ ভাইয়ের মৃত্যুবার্ষিকীতে আমরা বাংলার মুখের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছি। তবে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে কোনো অনুষ্ঠান ছিল না। দিয়াজ ভাই ছাত্রলীগের সম্পদ ছিলেন। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ বিভিন্ন উপ-গ্রুপে বিভক্ত। এসব গ্রুপে দিয়াজ ভাইয়ের হত্যা মামলার আসামিরা আছে। তাই গ্রুপিং রাজনীতির কারণে দিয়াজ ভাইকে সম্মিলিতভাবে স্মরণ করা হচ্ছে না। আমরা চাই দিয়াজ ভাইকে সবাই স্মরণ করুক।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দিয়াজ ভাই ছাত্রলীগের নিবেদিতপ্রাণ ছিলেন। কিন্তু দিয়াজ ভাইয়ের মৃত্যু নিয়ে বিতর্ক আছে। এটা নিয়ে মামলাও চলমান আছে। তদন্ত চলছে। যেহেতু এটা একটা বিতর্কিত ইস্যু, তাই আমরা কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন করি নাই।’ 

তবে এ বিষয়ে জানতে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেলকে একাধিকবার কল দিলে কল রিসিভ করেননি। 

পাঁচ বছরেও তদন্ত শেষ হয়নি দিয়াজ হত্যা মামলার
 ২০১৬ সালের ২০ নভেম্বর রাতে ক্যাম্পাসে নিজের বাসা থেকে দিয়াজের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ২৩ নভেম্বর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের চিকিৎসকেরা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে দিয়াজের মৃত্যুকে ‘আত্মহত্যা’ উল্লেখ করেন। এর ভিত্তিতে হাটহাজারী থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করে পুলিশ। 

তবে দিয়াজের পরিবার ও তাঁর অনুসারী ছাত্রলীগের কর্মীরা দিয়াজের মৃত্যুকে হত্যা দাবি করে পুনরায় ময়নাতদন্তের দাবি জানান। একই সঙ্গে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে ওই বছরের ২৪ নভেম্বর দিয়াজের মা আদালতে হত্যা মামলার আবেদন করেন। 

হত্যা মামলায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সেই সময়ের সভাপতি আলমগীর টিপু, তৎকালীন সহকারী প্রক্টর আনোয়ার হোসেন, ছাত্রলীগের নেতা জামশেদুল আলম চৌধুরী, তাঁদের অনুসারী রাশেদুল আলম জিশান, আবু তোরাব পরশ, মনসুর আলম, আবদুল মালেক, মিজানুর রহমান, আরিফুল হক অপু ও মোহাম্মদ আরমানকে আসামি করা হয়। 

আসামিরা সবাই চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিনের অনুসারী এবং বিভিন্ন গ্রুপের নেতা। দিয়াজ নিজেও নাছিরের অনুসারী একটি গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। 

দিয়াজের মায়ের আবেদনে আদালত সিআইডিকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেন। এরপর দ্বিতীয় দফা দিয়াজের ময়নাতদন্ত করেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসকেরা। সে সময় তাঁরা চট্টগ্রামে যেখানে দিয়াজের লাশ পাওয়া গিয়েছিল, সেখানেও যান। 

২০১৭ সালের ৩০ জুলাই দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে তারা বলেন, দিয়াজের শরীরে ‘হত্যার আলামত’ রয়েছে। পরে দিয়াজের মায়ের করা এজাহার হত্যা মামলা হিসেবে নিতে হাটহাজারী থানার ওসিকে নির্দেশ দেন আদালত। 

কিন্তু তদন্ত প্রতিবেদন না পাওয়ায় দিয়াজের মৃত্যুর পাঁচ বছরেও আলোচিত এই মামলার বিচারকাজ শুরু হয়নি। এর মধ্যে তিনবার তদন্ত কর্মকর্তা বদল হয়েছেন। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) প্রায় চার বছর ধরে মামলাটির তদন্ত করছে। 

দিয়াজের বোন আইনজীবী জুবাঈদা ছরওয়ার চৌধুরী নিপা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তদন্তের কোনো অগ্রগতি নেই। আগে যা ছিল, এখনো তা। নতুন করে কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয় নাই। আসামিরা বীরদর্পে ঘুরে বেড়ায়। সিআইডিকে আসামিদের ধরতে বললে তারা নির্বিকার।’ 

তদন্তের বিষয়ে জানতে চাইলে সিআইডি চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিশেষ পুলিশ সুপার মুহাম্মদ শাহনেওয়াজ খালেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, মামলার তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষ হলে রিপোর্ট দেওয়া হবে। এ বিষয়ে বিশদভাবে জানতে তিনি মামলার তদন্ত কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। 

তবে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার আবদুস সালাম মিয়ার সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। 

নোয়াখালীর চৌমুহনীতে আগুনে পুড়েছে ৬ দোকান

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রাক্টরচাপায় কিশোরী নিহত

জাতিসংঘ মহাসচিবের অংশগ্রহণে উখিয়ায় রোহিঙ্গা শিবিরে ইফতার, পদদলিত হয়ে একজনের মৃত্যু

আমরা যথেষ্ট ভাগ্যবান, কারণ আমাদের সমুদ্র আছে: প্রধান উপদেষ্টা

চকরিয়ায় পুলিশের গাড়ি খাদে পড়ে কনস্টেবল নিহত, এসআইসহ আহত ৪

দোল পূর্ণিমা মেলা ঘিরে চন্দ্রনাথধাম মন্দিরে লাখো পুণ্যার্থীর ঢল

চট্টগ্রামে ছাদ থেকে পড়ে শিশুর মৃত্যু

চাঁদপুরে গ্যাস বিস্ফোরণে দগ্ধ গৃহবধূর মৃত্যু, পাঁচজন হাসপাতালে

কুমিল্লায় ৩ কোটি টাকার ভারতীয় আতশবাজি জব্দ

নোয়াখালীতে অটোরিকশায় কলেজছাত্রীকে হেনস্তা-ছিনতাই, গ্রেপ্তার ২